1. ccadminrafi@gmail.com : Writer Admin : Writer Admin
  2. 123junayedahmed@gmail.com : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর
  3. swadesh.tv24@gmail.com : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম
  4. swadeshnews24@gmail.com : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর: : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর:
  5. hamim_ovi@gmail.com : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  6. skhshadi@gmail.com : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান: : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান:
  7. srahmanbd@gmail.com : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  8. sumaiyaislamtisha19@gmail.com : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান
শীতে কাবু দেশ - Swadeshnews24.com
শিরোনাম
ভারতীয় পণ্য বর্জনের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত বিএনপির প্রতিটা নিঃশ্বাস যেন খুঁজছে তোমায়: পূজা চেরি প্রযোজককে এসিড নিক্ষেপের হুমকি, চিত্রনায়িকা পলির বিরুদ্ধে জিডি ছেলেদের সৌন্দর্য কিসে, জানালেন জায়েদ নিপুণের আবেদনে পেছাল ভোটের তারিখ, অসন্তুষ্ট মিশা ফরজ গোসল না করে সেহরি খেলে কি রোজা হবে? ৫৬ সেকেন্ডের ভিডিও, কোন সম্পর্কের ইঙ্গিত দিলেন বুবলী-রাজ রোজা রাখলে পাবেন ৫ উপকার ‘রিয়াজ এখন নিপুণের চামচা হয়ে গেছে, এটা খুব কষ্টের’ মধ্যবর্তী নির্বাচন প্রশ্নে যা বললেন ওবায়দুল কাদের বেশি কথা বললে সব রেকর্ড ফাঁস করে দেব: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘খালেদা জিয়া একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা’ রিজভীর ভারতীয় চাদর ছুড়ে ফেলা নিয়ে যা বললেন ওবায়দুল কাদের বুর্জ খলিফায় শাকিবের সিনেমার প্রচারে ব্যয় কত? বুবলী-পরীমনির দ্বন্দ্বের মাঝে অপু বিশ্বাসের রহস্যময় স্ট্যাটাস

শীতে কাবু দেশ

  • Update Time : শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৯
  • ৪৬৪ Time View

শীতে কাবু গোটা দেশ। চলছে শৈত্যপ্রবাহ। ঘন কুয়াশায় ঢাকা আকাশ। সূর্যের দেখা মেলেনি কোথাও। কনকনে ঠাণ্ডা বাতাস। দু’দিন ধরে রাজধানীসহ দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পাল্লা দিয়ে কমছে তাপমাত্রা। বিপর্যয় নেমে এসেছে জন জীবনে। সবচেয়ে বেশি সমস্যায়
পড়েছে বয়স্ক, শিশু ও ছিন্নমুল মানুষেরা।

রাজধানীবাসী এই শীতে যতটা কাতর, অনেক বেশি বিপর্যয় দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে। রাজধানীর তুলনায় এসব এলাকায় তাপমাত্রা কমেছে চার থেকে সাত ডিগ্রি পর্যন্ত। এই তাপমাত্রা আরও দুই থেকে তিন ডিগ্রি কমবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শনিবার পর্যন্ত এই বৈরী আবহাওয়া অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানায় আবহাওয়া অফিস। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীসহ সারাদেশে সকালটা ছিল কুয়াশার চাদরে মোড়ানো। সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। রাত থেকেই বইছে কনকনে ঠান্ডা বাতাস। তাপমাত্রা কমেছে তিন থেকে সাত ডিগ্রি পর্যন্ত। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস, দেশের কোথাও কোথাও আগামী দু’দিনে তাপমাত্রা ৬ থেকে ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যেতে পারে।

আবহাওয়াবিদ আশরাফুল আলম জানান, আগামী ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই তাপমাত্রা কমতে থাকবে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হতে পারে ৬/৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখন রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা বিস্তার লাভ করতে পারে। ঢাকার তাপমাত্রা আরও দুই থেকে তিন ডিগ্রি কমবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধা ৬টা থেকে আজ শুক্রবার সন্ধা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্‌্রাস পেলেও দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে। উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আজ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আরও ছয় জেলার তাপমাত্রা সিঙ্গেল ডিজিটে নেমে এসেছে। রাজশাহীতে তাপমাত্রা ছিলো ৯ দশমিক ৫, পাবনার ঈশ্বরদীতে ৮ দশমিক ৮, নওগাঁর বদলগাছিতে ৯ দশমিক ৫, কুড়িগ্রামের রাজারহাটে ৯ দশমিক ৮ এবং যশোরে ৯ দশমিক ২। ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩, যা বুধবার ছিল ১৬ দশমিক ২। এছাড়া চট্টগ্রামে ১৬, সিলেট ১৫ দশমিক ৮, রংপুরে ১১, খুলনায় ১২ এবং বরিশালে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

এদিকে হঠাৎ করে শীত পড়ায় রাজধানীসহ সারা দেশে কম্বলসহ গরম কাপড় কেনার ধুম পড়েছে। কয়েক দিন ধরেই হালকা শীত পড়ার পর গরম কাপড় কেনাবেচা শুরু হয়। বুধবার থেকে শৈত্যপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীর ফুটপাত থেকে শুরু করে ছোট-বড় মার্কেট ও শপিংমলে কম্বল, জ্যাকেট, সোয়েটার, কার্ডিগান, শাল, হাতমোজা ও কানটুপিসহ বিভিন্ন ধরনের গরম কাপড় বিক্রি কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় দোকানিরা বেশ খুশি।

গতকাল বঙ্গবাজার ফার্মগেট গুলিস্থান বায়তুল মোকাররাম এলাকায় সরেজমিন দেখা যায়, কম্বলসহ গরম কাপড়ের প্রায় প্রতিটি দোকানে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। বঙ্গমার্কেটের নুরে আলম শাহেদ নামের এক দোকানি বলেন, গত এক সপ্তাহ থেকে টুকটাক বেচাবিক্রি শুরু হয়েছিলে। কিন্তু বুধবার থেকে কাস্টমারের চাপ বেড়ে গেছে। কাস্টমার বেশি থাকায় দরাদরি না করে একদাম বলে দিচ্ছি। গরমের কাপড়ের দামও অনেক কম তাই সবাই অল্প কথায় কিনে নিচ্ছে।
রিয়াজ নামের এক ক্রেতা জানায়, হঠাৎ করে শীত বেড়ে যাওয়ায় দোকানিরা দাম একটু বেশি চাচ্ছে। একটা ব্লেজার দুই হাজার টাকা দাম চেয়েছিলো। দামাদামি করে ১৫০০ টাকায় কিনলাম।

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে জানান, পৌষ মাসের শুরুতেই হঠাৎ করে হাড় কাঁপানো শীতে কাঁপছে খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চল। উত্তর-পশ্চিমা কনকনে হিমশীতল হাওয়া ও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। কনকনে হিম বয়ে আনা বাতাসে হাড় কাঁপুনি শীত। এদিকে হাড় কাঁপানো শীতে কাঁপছে খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গা। গত দুইদিন ধরে মৃদু থেকে শীতল বাতাস প্রবাহিত অব্যাহত রয়েছে এ জেলায়। দিন দিন তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এখানকার জনজীবন। গতকাল সকাল ৬টায় জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মওসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় এ জেলায়। তবে তাপমাত্রা আরো কমতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

এদিকে কুয়াশা না থাকায় সকালে সূর্যের দেখা মিললেও কমছে না শীতের তীব্রতা। দিনের তাপমাত্রা কিছুটা সহনীয় হলেও হ্রাস পাচ্ছে রাতের তাপমাত্রা। শীতল বাতাস বাড়িয়ে দিচ্ছে মানুষের ভোগান্তি। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছে খেটে খাওয়া ছিন্নমূল মানুষ। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছেন এসব মানুষ।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক সামাদুল হক জানান, গত পরশু রাত থেকে চুয়াডাঙ্গার উপর দিয়ে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ কারণে প্রতিদিনই তাপমাত্রা হ্রাস পাচ্ছে। এ পরিস্থিতি আগামী কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে।
অপরদিকে শীতের পারদ নামতে শুরু করার পরে জনজীবনেও শীতের চেনা ছবি ফিরে এসেছে। ঝলমলে রোদে শীতের পোশাক পরেও ঠক ঠক করে কাঁপছে মানুষ। গতকাল সন্ধ্যার পরে শহরের অলিগলিতে আগুন জ্বেলে হাত-পা সেঁকেছে মানুষ। রাত একটু গড়াতেই রাস্তাঘাট হয়ে পড়ে সুনসান। গত দু’দিন ধরে খুলনায় এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে পৌষের কনকনে ঠাণ্ডায় কাঁপছে শহর। গত কয়েক দিনের শীতের তীব্রতায় অনেকের অবস্থা কাহিল।

খুলনা জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ বলেন, খুলনা বিভাগের উপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকাল রাতে চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আর খুলনায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা আরো ২-৩ ডিগ্রি কমতে পারে। তাপমাত্রার পারদ দিন দিন যত নামছে, ঠাণ্ডায় জবুথবু শহরে ততই বাড়ছে শীতের পোশাক বিক্রি।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল থেকে খুলনাসহ দেশের অধিকাংশ জায়গায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার থেকে দিনের বিভিন্ন সময় উত্তরের হাওয়া প্রবাহিত হতে থাকে। কুয়াশা এবং ধোঁয়াশার কারণে দিনের আলো কিছুটা কম দেখা গেছে। ফলে গতকালও খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, যশোরেও শীত জেঁকে বসতে শুরু করে। বুধবার খুলনার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সাতক্ষীরায় ১৫.৫, যশোরে ১১.৮, বাগেরহাটে ১৬.৪ এবং চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বেসরকারি আবহাওয়া অফিস নড়াইল টোনা সূত্রে জানা গেছে, এ সময় দিনের বেলা আকাশে উজ্জ্বল সূর্যের কিরণ ৩ থেকে ৫ ঘণ্টা পাওয়া যেতে পারে ও ম্লান সূর্যের কিরণ ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা পাওয়া যেতে পারে। এ অবস্থা আগামী ২২শে ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকতে পারে। শৈত্যপ্রবাহ চলাকালীন সময়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি পর্যন্ত নামতে পারে। তবে রাজশাহী, রংপুর বিভাগের সকল এলাকা ও খুলনা বিভাগের উত্তর-পশ্চিম দিকের জেলা চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, নড়াইল এবং যশোর এলাকায় শীতের তীব্রতা কিছুটা বেশি থাকতে পারে। এসময় দেশের নদী অববাহিকায় কুয়াশা এবং ধোঁয়াশা পড়তে পারে।

বেসরকারি আবহাওয়া অফিস নড়াইল টোনার আবহাওয়াবিদ পারভেজ আহমেদ পলাশ জানান, বৃহস্পতিবার থেকে এ বছরের প্রথম শৈত্যপ্রবাহ তার প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করছে। এসময় বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ভারি কুয়াশা এবং ধোঁয়াশার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ অবস্থা বেশিদিন থাকবে না। ২২শে ডিসেম্বরের পর থেকে আবার শীত কমে যেতে পারে।

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী থেকে জানান, মওসুমের শুরুতেই দেশের উত্তরাঞ্চলে হাড়কাঁপানো শীত পড়েছে। গতকাল রাজশাহীতে মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকালে কর্মস্থলে বের হয়েই তীব্র শীতের কবলে পড়েন সাধারণ মানুষ। তবে ভোরে ঘন কুয়াশা থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখা মেলে রোদের। এক লাফে তাপমাত্রা কমে আসায় পৌষের শুরুতেই তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে রাজশাহীতে। অথচ পুরো নভেম্বর এবং ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ কেটেছে শীতবিহীন। শেষ রাতের শীতল পরশ আর ভোরের কুয়াশা ছিল। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমতে শুরু করলেও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামেনি। তবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সূর্যের মুখ দেখা গেলেও ঠাণ্ডা বাতাসের দাপটে কাবু হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। ঠাণ্ডায় জড়োসড়ো হয়ে পড়েছেন পথের ধারে থাকা ছিন্নমূল মানুষগুলো। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষরা শীতে কাতর হয়ে পড়েছেন এখনই। আর শীত নিবারণের জন্য কম দামে শীতবস্ত্র কিনতে তারা যাচ্ছেন ফুটপাতের দোকানগুলোতে।
তবে শুরুতেই শীত মোকাবিলার প্রস্তুতি শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগ প্রস্তুত হচ্ছে শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানোর। সরকারি এই দফতরটি জানিয়েছে, শীতার্তদের মধ্যে এবার প্রায় ৬০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হবে।

রাজশাহী জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, তাদের হাতে এখন ৬০ হাজার কম্বল রয়েছে। শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করায় কম্বল বিতরণও শুরু হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে শীতার্তদের হাতে কম্বল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। জেলার ৯ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় কম্বল বিতরণ হচ্ছে। সিটি করপোরেশন এলাকার ৩০টি ওয়ার্ডেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক কম্বল বরাদ্দ করা হয়েছে।

স্টাফ রিপোর্টার, রংপুর থেকে জানান, মৃদ্যু শৈত্য প্রবাহে রংপুরের জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না কেউ। হঠাৎ শীতে হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোতে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হয়েছে। রংপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আদ্রতা ছিল শতকরা ৭১ ভাগ। দিনভর থেমে থেকে ঘণ্টায় ৯ কিলোমিটার বেগে দমকা হাওয়া বইতে থাকে। কুয়াশার কারণে গতকাল ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান খুলেছে বেলা সাড়ে ১১টার পর। দুপুর ১টা নাগাদ নগরীতে মানুষের কর্মব্যস্ততা বেড়েছে।

হঠাৎ করে শীতের প্রকোপ বাড়ায় শীতের কাপড় বিক্রির ধুম পড়েছে। নগরীর অভিজাত শপিং মলসহ ফুটপাতের দোকানীদেরও শীতের কাপড় বিক্রি হচ্ছে সমানতালে। নগরীর সুরভী উদ্যান এলাকায় ভ্যানে করে গাইডের গরম কাপড় বিক্রি করেন আব্দুস সোবহান (৪৭)। তিনি বলেন, মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে দিন খেটে খাওয়া মানুষেরা এখান থেকে গরম কাপড় কিনে নিয়ে যায়। এখানে মোটামুটি ভালো কাপড় কম দামে পাওয়া যায়। আমরা লট অনুযায়ী পুরাতন কাপড়গুলো কিনে এনে বিক্রি করি। দু’দিন ধরে শীত বেড়েছে। তাই মানুষজন গরম কাপড় কিনছে। জ্যাকেট, সোয়েটার, হাফ সোয়েটার, মাফলারসহ নানা ধরনের গরম কাপড় আমরা বিক্রি করছি, লাভও ভালো হয়। জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, রংপুর জেলায় ৬৪ হাজার ২৭০ টি কম্বল ৮ উপজেলা ৩ পৌরসভা ও এক কর্পোরেশন এলাকায় বিতরনের জন্য এসেছে। ইতোমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে কম্বল চলে গেছে। কিছু উপজেলা কম্বল বিতরনও হয়েছে। আশা করি কোন অসহায় মানুষ এবার শীতে কষ্ট পাবে না।

নওগাঁ প্রতিনিধি জানান, নওগাঁয় বুধবার সন্ধ্যা থেকে শীতের প্রকোপ তীব্র হয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলায় সবর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো ৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ কারণে তীব্র শীতকষ্ট পোহাতে হচ্ছে জেলার দরিদ্র ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোজনকে। এ দিকে গত কয়েকদিন ধরে শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় ডায়রিয়া, আমাশয়, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত নানারোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন নওগাঁ সদর ও জেলার উপজেলা হাসপাতাল গুলোতে ভর্তি হচ্ছেন নারী, শিশু, বয়স্ক প্রায় অর্ধশত মানুষ। এদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই অধিক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

বদলগাছি আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র অফিসার জানান, বৃহস্পতিবার থেকে জেলায় শৈত্য প্রবাহ বইতে শুরু করেছে। এটি আরো ৩/৪ দিন স্থায়ী হতে পারে । বৃহস্পতিবার জেলার সবর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। নওগাঁ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. রেজাউল করিম জানান, বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ১০ জন ডায়রিয়া রোগীসহ শীতজনিত রোগে ভর্তি হয়েছেন ১৭ জন।

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত তিনদিন ধরে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। এতে নিম্নআয়ের মানুষ পড়েছেন দুর্ভোগে। চুয়াডাঙ্গার হাসপাতালগুলো শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সিলসিয়াস। একদিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা হঠাৎ করে কমে যাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে শিশু ও বয়স্কদের। শিশু ও বয়স্করা শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শীতের তীব্রতা বাড়ার কারণে নিম্নআয়ের মানুষেরা বিপাকে পড়েছেন। শ্রমজীবী মানুষের কর্মক্ষেত্রে যেতে পারছেন না। এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বুধবার রাতে জেলার নিম্নআয়ের মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। শীতবস্ত্র বিতরণের সময় জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, পর্যায়ক্রমে জেলার সব এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।
এদিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে ২২ ডায়রিয়া রোগী। তীব্র শীতের কারণেই ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় শীতজনিত রোগে শতাধিক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা শিশু ওয়ার্ডেও রোগীর চাপ বেড়েছে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সামাদুল হক জানান, আগামী ২-৩ দিন চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা কম থাকবে।
স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর থেকে জানান, উত্তরের জেলা দিনাজপুরে জেঁকে বসেছে শীত। এ মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াম। হঠাৎ জেঁকে বসা শীতে চরম বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় শীতে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ নাকাল হয়ে পড়েছে। কুয়াশার চাদর ভেদ করে সূর্য উদিত হলেও কমছে না শীতের প্রকোপ। শীতবস্ত্রের অভাবে শীতের প্রকোপ থেকে মুক্তি পেতে অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছে।

গত সোমবার দুপুরে হঠাৎ বৃষ্টির পর শুরু হয়েছে হিমেল হাওয়া আর সন্ধ্যা থেকে জেঁকে বসে কনকনে শীত। দু’দিন থেকে ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে কাঁপছে উত্তরের জনপদ। শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে শিশু ও বয়স্ক মানুষ। ঠাণ্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। হাসপাতালে বেড়ে চলেছে শিশু ও বয়স্ক রোগী সংখ্যা। শ্রমজীবী মানুষের বেড়েছে চরম দুর্দশা। হতদরিদ্র-ছিন্নমূল মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। দিনের বেলাতেও রাস্তায় যানবাহন চালাতে হচ্ছে হেডলাইট জ্বালিয়ে।

দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেন জানিয়েছেন, এ মৌসুমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল গতকাল ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা আরো কম এবং শৈত্যপ্রভাব শুরু হবে এ মাসের শেষ সপ্তাহে।

এদিকে সরকারিভাবে জেলা, উপজেলা প্রশাসন, বিজিবি, ট্রাই ফাউন্ডেশন, চ্যানেল আই দর্শক ফোরামসহ বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বীমা ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে কিছু কিছু এলাকায় গরম কাপড় বিতরণ করলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে, শীতবস্ত্রের চাহিদা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। এসব শীতবস্ত্র এলেই তা বিতরণ করা হবে বলে জানা গেছে।

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি জানান, শ্রীমঙ্গলে বাড়তে শুরু করেছে শীতের তীব্রতা। চা বাগানগুলো ঢাকা পড়েছে কুয়াশার চাদরে। চা বাগানগুলোর শ্রমিকরা শীতবস্ত্রের অভাবে পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। শ্রীমঙ্গলে প্রতিদিন কমছে তাপমাত্রা। গতকাল সিলেট বিভাগের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর বুধবার ছিল ১১দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিনি জানান, এখন শৈত্যপ্রবাহ চলছে এ চলতি মাসের শেষের দিকে বা জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে আরো একটি শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে। শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের আবহাওয়াবিদ মো. আনিস আহমেদ জানান, গতকাল সকাল ৯টায় শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আর এই শীত মৌসুমের এ পর্যন্ত সিলেট বিভাগের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে গত ৬ ও ১৩ই ডিসেম্বর ১১ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে এখন পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারিভাবে কয়েকটি চা বাগানে শীতবস্ত্র দেয়া হলেও বেশির ভাগ চা বাগানে এখনো শীতবস্ত্র পৌঁছায়নি।

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি জানান, সরাইলে হঠাৎ করে শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বুধবার সন্ধ্যার পর থেকেই শুরু হয়েছে শীতের দাপট। মঙ্গলবার সকাল থেকে উপজেলার কোথাও সূর্যের দেখা মিলেনি। ঘণ কুয়াশার চাদরে ঢাকা ছিল গোটা উপজেলা। চলছে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। থেমে গেছে ধান কাটা। কষ্ট বেড়ে গেছে শিশু বৃদ্ধ ও অসুস্থদের। কৃষক ও গৃহস্থরা সিদ্ধ করা ধান ঘরের বাইরে নিতে পারেননি। সড়কে কমে গেছে যানবাহন। কুয়াশার কারণে ঘটে যেতে পারে প্রাণহানির মতো দুর্ঘটনা। শৈত্যপ্রবাহের কারণে শ্রমিকরা মাঠে যাচ্ছে না। ধান ঘরে তোলার কাজ থেমে গেছে। সকাল বেলায় বিভিন্ন জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে তাপ নেয়ার প্রতিযোগিতাও বেড়েছে। বাজারে ও ফুটপাথের দোকানগুলোতে শীতের কাপড়ের ক্রেতা বেড়েছে। সুযোগে ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দিয়েছেন কাপড়ের মূল্য। শীতের তীব্রতায় রাত ৮টার পরই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট, হোটেল ও রেস্তরাঁ। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তর সূত্র জানায়, দরিদ্রদের শীত নিবারণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে দুটি স্মারকে মোট ৫ হাজার ১০ পিস কম্বল বরাদ্দ এসেছে। উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের হিস্যা অনুযায়ী কম্বল বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। তারা প্রত্যেকেই কম্বল বিতরণ করছেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, কম্বলগুলো সঠিক সময়ে এসেছে। কারণ হঠাৎ করে শীতের তীব্রতা বেড়ে যাবে- এটা বোঝা যায়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 SwadeshNews24
Site Customized By NewsTech.Com