তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি
রাজশাহীর তানোরে উপজেলা প্রশাসনের চোঁখ ফাঁকি দিতে রাঁতের আঁধারে গভীর নলকুপের স্কীমভূক্ত ফসলী জমিতে অবৈধ পুকুর খননের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে কাঁমারগা ইউপি চেয়ারম্যান মসলেম উদ্দিন প্রামানিকের নেপথ্যে মদদে ফসলী জমিতে অবৈধ পুকুর খনন করা হচ্ছে। তানোর ও নিয়ামতপুর উপজেলার সীমান্ত সংলগ্ন কাঁমারগা ইউপির চকসাজুড়িয়া কাজীপাড়া মাঠে পানি নিস্কাশনের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এসব অবৈধ পুকুর খনন করা হচ্ছে। অথচ এসব অবৈধ পুকুর খনন সম্পন্ন হলে জলাবদ্ধতার কারণে মাঠের শত শত বিঘা ফসলী জমির ফসলহানী ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। চলতি বছরের ২৮ ডিসেম্বর শনিবার উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমান অভিযান করে স্কেলেটর (ভেঁকু) মেশিনের ব্যটারী খুলে নিয়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে। কিšত্ত ২৯ ডিসেম্বর রোববার ইউপি চেয়ারম্যান মসলেম উদ্দিন প্রামানিক তদ্বির করে ব্যাটারী ছড়িয়ে নিয়ে ফের অবৈধ পুকুর খননের কাজ শুরু করেছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এদিকে এসব অবৈধ পুকুর খননের ঘটনায় সাধারণের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে চরম অসন্তোস বিরাজ করছে উত্তেজনা। তবে সচেতন মহলের অভিমত আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এসব অবৈধ পুকুর খনন করা হচ্ছে, নইলে রাঁতে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান চালাতে তো বাধা নেই, তাহলে তারা অভিযান করছেন না কেন ? ফলে প্রশাসনের এমন প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়, দেখা দিয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া। সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী এসব অবৈধ পুকুর খনন প্রতিরোধে রাজশাহী জেলা প্রশাসক (ডিসি), তানোর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের সরকার প্রধান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন এক ছটাক কৃষি জমি নস্ট বা শ্রেণী পরিবর্তন করে কোনো অবস্থাতেই কোনো স্থাপনা-কলখারখানা বা নির্মাণ বা অকৃষি কাজে ব্যবহার করা যাবে না। অথচ সরকার প্রধানের সেই নির্দেশনা উপেক্ষা করেই কৃষি জমিতে চলছে অবৈধ পুকুর থননের মহোৎসব। বিষয়টি যেনো দেখার কেউ নেই। তবে কি সরকার প্রধানের ঘোষণার কোনো মূল্য নাই, না কি ? এরা সরকার প্রধানের থেকেও শক্তিশালী, নইলে কি ভাবে এসব অবৈধ পুকুর খনন করা হচ্ছে। অপরিকল্পিতভাবে এসব অবৈধ পুকুর খনন বন্ধ করা না গেলে আগামী দিনে জলাবদ্ধতার কারণে পুরো মাঠের ফসলহানী ও অনাবাদি হয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাঃ নাসরিন বানু বলেন, কৃষি জমিতে অবৈধ পুকুর খনন বন্ধ ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। তিনি বলেন, আবারো যদি ওই পুকুর খনন করা হয় তাহলে এবার কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এব্যাপারে কাঁমারগা ইউপি চেয়ারম্যান মসলেম উদ্দিন প্রামানিক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই পুকুর তার বোন করছে। তিনি বলেন, ওই জমিতে তেমন আবাদ হয় না তায় পুকুর খনন করা হচ্ছে। এব্যাপারে তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামিউল ইসলাম বলেন, কৃষি জমি নস্ট বা শ্রেণী পরিবর্তন করে পুকুর খনন বা অকৃষি কাজে ব্যবহারের কোনো সুযোগ নাই এটা দন্ডনীয় অপরাধ বটে।