ওড়িশার সুরাটে এক নরপিশাচ পিতাকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আদালত। তার বিরুদ্ধে নিজের মেয়েকে ধর্ষণ শেষে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এ অভিযোগে ৪০ বছর বয়সী পিতা নামের ওই নরপিশাচকে শুক্রবার মৃতুদন্ড দেন বিচারক পিএস কালা। বলা হয়, এটি একটি বিরল মামলা। এ জন্য ওই ব্যক্তির কঠোর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন, যাতে তা সমাজে একটি উদাহরণ হয়ে থাকে। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি একটি পাওয়ারলুমের ৪০ বছর বয়সী শ্রমিক। তার প্রথম স্ত্রীর গর্ভে জন্ম নেয়া মেয়ের বয়স ১২ বছর। তাকে ধর্ষণ করে সে।
এতে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে ওই বালিকা। এ জন্য ২০১৭ সালে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সে। এ খবর দিয়ে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, প্রতিবেশী ও অন্যরা তার সম্পর্কে জানতে চাইলে সে বলে, সে ক্যান্সারে আক্রান্ত। হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে তাকে। তবে কোন হাসপাতালে সে সম্পর্কে তাদের জানাতে অস্বীকৃতি জানায় তাদের।
আদালত বলেছে, এতে তার মনের ভিতরকার অপরাধ প্রকাশ পায়। ওদিকে ওই নরপিশাচ থানায় গিয়ে মেয়ে নিখোঁজের একটি অভিযোগ করে। এক পর্যায়ে ২০১৭ সালের ৩০ শে জুন ‘দুমাস’ পুলিশ দুমাস লাল তালাভের রামজি ফার্মের পাশে একটি সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার করে একটি মেয়ের মৃতদেহ। ময়না তদন্ত করা হয়। তাতে দেখা যায়, তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ অবস্থায় পুলিশ একটি হত্যা মামলা করে। ময়না তদন্তে আরো দেখা যায়, হত্যাকান্ডের সময় ওই বালিকা ৬ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। পুলিশ দেখতে পায় পন্ডেসারা পুলিশ স্টেশনে একটি মেয়ের নিখোঁজ ডায়রি করা আছে। তারা অনুসন্ধান করতে থাকে। খুঁজে পায় তার পিতাকে। নিহত মেয়েটির গর্ভস্থ ভ্রুণের সঙ্গে তার ডিএনএ মিলিয়ে দেখে তারা। এতে সাদৃশ্য পাওয়া যায়।
ফলে ওই বছরই ৫ জুলাই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর সব পরিষ্কার হতে থাকে। তাতে দেখা যায়, ২৬ শে জুন একটি অটোরিক্সায় করে ওই বালিকাকে দুমাসে নিয়ে যায় তার পিতা। সেখানে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর লাল কমল লেকের কাছেই মাটিতে পুঁতে রাখে তার দেহ। ৬ই জুলাই সে পুলিশের কাছে স্বীকার করে যে, সেই তার মেয়েকে হত্যা করেছে। কারণ, অন্য একজন পুরুষের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক ছিল তার মেয়ের। সুরাট পুলিশের ডেপুটি ইনচার্জ এমএন প্যাটেল বলেন, শুরু থেকেই ওই ব্যক্তি কিছু লুকিয়ে যাচ্ছিল বলে আমাদের সন্দেহ হয়। আমরা ভ্রুণের সঙ্গে তার ডিএনএ মিলিয়ে দেখি। তাতে দেখা যায়, ওই ভ্রুণের বায়োলজিক্রাল পিতা সেই। এতে আমাদের সন্দেহ নিশ্চিত হয় যে, সেই তার নিজের মেয়েকে ধর্ষণ করে যাচ্ছিল।