অনূর্ধ্ব-১৭ থেকেই একসঙ্গে খেলছেন তারা। দু’জন তাই দারুণ বন্ধুও। একজন এখন জাতীয় দলের সেরা ওপেনার আরেক জন ছিটকে পড়েছেন অনেক আগেই। তবে একটা জায়গাতে এতদিন তামিম ইকবালের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন রকিবুল হাসান। ঘরোয়া ক্রিকেটে একমাত্র ট্রিপল সেঞ্চুরির মালিক ছিলেন তিনি। ১৩ বছর ধরে তামিমরা তার সেই সেঞ্চুরি নিয়ে শুধু আলোচনাই করেছেন কিন্তু ছুঁতে পারেননি তার কীর্তি। গতকাল দু’জন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে কেক কাটলেন মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। হ্যাঁ, রকিবুল তার ‘ট্রিপল ক্লাবে’ পেলেন বন্ধুকে।
অন্যদিকে নিজের এমন সেঞ্চুরি সরাজীবন হৃদয় জুড়ে থাকবে বলেই জানান তামিম। তিনি বলেন, ‘এটা স্পেশাল ইনিংস। তিনশ করা যেকোনো দলের বিপক্ষে কঠিন। আবার যেকোনো লেভেলেই এটা করা কঠিন। এটা যদি সহজ হতো তাহলে প্রত্যেক মাসে একজন করে দেখতেন যে তিনশ করছে। আমার হৃদয়ে খুব বড় জায়গায় এটা থাকবে।’
দেশের ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তামিম ইকবাল এখন সর্বোচ্চ ইনিংসের মালিক। গতকাল তিনি ৩৩৪ রান করে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। অন্যদিকে রকিবুলের করেছিলেন ৩১২ রান। তামিম বলেন, ‘অবশ্যই এটা দারুণ অনুভূতি। স্বপ্ন অবশ্যই থাকে। এ ম্যাচে হয়ে যাবে সেটা কখনো ভাবিনি। আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল যেই জিনিসটা সেটা হল আমি কিভাবে ব্যাটিং করেছি। আশা করি এভাবেই খেলে যেতে পারবো। সত্যি ২৬০-৭০ হওয়ার পরও কিন্তু আমি এটা নিয়ে ভাবছিলাম না। আমার কাছে মনে হয়েছে যে আমি যদি ওটা চিন্তা করি তাহলে আমি যে প্লান নিয়ে খেলছিলাম সেটায় হ্যামপার হবে।’
তামিম বলেন, ‘আমি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলাম। উইকেটে বল সেভাবে ঘুরছিল না, বাড়তি কিছুই হচ্ছিল না। আমি ক্রিকেটিং শটস খেলে গিয়েছি। সব সময় চেষ্টা করছিলাম যে আমি চার মারবো। ছয় মারার কোনো চিন্তা ছিল না।’ তবে তার ৩৩৪ রানের সময় দলের ইনিংস ঘোষণায় একটু হতাশ হয়েছিলেন। যদিও দলের জয়ের জন্য শেষ পর্যন্ত সেই হতাশাও ভুলেছেন বলে জানান তামিম। তিনি বলেন, ‘ওভারের এক বল বাকি ছিল। আমি মারার চিন্তা করছিলাম।’ ১৩ বছর ধরে রকিবুুলের ট্রিপল তামিমের জন্য ছিল অন্যরকম এক প্রেরণার। তামিম বলেন, ‘সত্যি কথা এভাবে ভাবিনি। তবে আমি যখনই চিন্তা করি যে রকিবুল একমাত্র যে তিনশ’ করেছে তখন ভাবতাম যে কত ধৈর্য্য ওর যে তিনশ’ করে ফেলেছে। এই জায়গায় তিনশ করা কঠিন। একটু যদি ফাস্ট থাকে, আউটফিল্ড যদি ভালো হয় তাহলে একটু সহজ হয়। ও তো মনে হয় ৬০০-এর মতো বল খেলেছে।’
বন্ধুর জন্য খুশি রকিবুল
তামিমের যখন ৩০০ ছুঁতে এক রান বাকি রকিবুল তখন স্লিপে ছুটে যান। না সেই এক রান আটকানো যায়নি। তাই সবার আগে ছুটে গিয়ে বন্ধু তামিমকে অভিনন্দনটাও জানান তিনি। তামিমের পাশে দাঁড়িয়ে রকিবুলকেও দারুণ উচ্ছাসিত দেখায়। তিনি বলেন, ‘আমরা সেই অনূর্ধ্ব-১৭ থেকে একই সঙ্গে খেলছি। তাই খুব ভালো বন্ধুও। ও যখন ৩০০ পূর্ণ করে করে তখন সবার আগে দৌড়ে গিয়ে অভিনন্দন জানাই। আমার খুব ভালো লাগছে ও যেভাবে ইনিংসটা খেলেছে তা দেখে।’