সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অংশে সৃষ্টি মানবিক সংকট নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ। অঞ্চলটিতে রাশিয়া সমর্থিত সিরিয়ার সেনাবাহিনী দেশটির বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করছে। ফলে গত দুই মাসে ওই অঞ্চল থেকে উৎখাত হয়েছে অন্তত ৫ লাখ মানুষ। এ খবর দিয়েছে আল-জাজিরা।
সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমের প্রদেশ ইদলিব হচ্ছে দেশটির সর্বশেষ বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকা। এটির নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলেই সিরিয়ার পুরো কর্তৃত্ব নিশ্চিত হবে ক্ষমতাসীন আসাদ সরকারের। এ লক্ষ্যে তার সেনাবাহিনী ও প্রধান মিত্র রাশিয়ার বিমান বাহিনী ইদলিবে অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে দখলে এসেছে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহরও। তবে যুদ্ধের কারণে ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দূত ডেভিড সোয়ানসন মঙ্গলবার বলেন, ডিসেম্বর মাসের এক তারিখের পর এই অঞ্চলের ৫ লাখ ২০ হাজার মানুষ বাড়ি ছেড়েছেন। এর মধ্যে ৮০ ভাগই নারী ও শিশু। এর আগে গত শনিবার জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানায়, সিরিয়ার ইদলিব থেকে প্রতিদিন গড়ে ৬৫০০ শিশু পালিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া, অন্তত ১২ লাখ শিশুর জন্য সাময়িক খাদ্য, পানি ও ওষুধ প্রয়োজন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, গত এক মাসে ইদলিবে যুদ্ধের কারণে ৫০টিরও বেশি স্বাস্থ্য কেন্দ্র বন্ধ হয়ে গেছে।
সামপ্রতিক সপ্তাহগুলোতে রাশিয়া ও সিরিয়ার বাহিনীর সম্মিলিত আক্রমণে তুরস্ক সীমান্তের দিকে সরে যাচ্ছে ঘরছাড়া মানুষগুলো। তাদের ওপর সেদিকে সরে যেতে চাপও দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আসাদের বাহিনী সেখানকার গ্রামগুলো ও প্রধান শহরগুলো পুনরায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। প্রদেশটির রাজধানী মারেত আল-নুমানও এখন রাশিয়া ও সিরিয়ার বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। ফলে ওই অঞ্চলে এখন ব্যাপক চাপে রয়েছে বিদ্রোহীরা। এদিকে বিদ্রোহীদের পক্ষে যুদ্ধবিরতি করার চেষ্টা করেছিলো তুরস্ক। তবে তা উপেক্ষা করেই হামলা অব্যাহত রাখে রাশিয়া। গত সপ্তাহে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান হুমকি দেন, রাশিয়া না থামলে তারা সামরিক শক্তি ব্যবহারে বাধ্য হবে। সোমবার সিরিয়ার অন্তত ৫৪টি টার্গেটে হামলা চালায় তুরস্ক। এতে ৭৬ সিরিয়ান সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করে দেশটি। এরফলে সমপর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে রাশিয়া ও তুরস্কের মধ্যে।