বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টেস্ট রেকর্ড ভালো নয়। দেশের বাইরে টাইগারদের সর্বশেষ জয় ২০১৭তে কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এরপর ৮ টেস্টের সবটাতেই হার। সর্বশেষ ভারত সফরে দুই টেস্টেই ইনিংস ব্যবধানে পরাজিত হয় টাইগাররা। আগামীকাল রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে স্বাগতিক পাকিস্তানের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। হারের বৃত্ত কি এবার ভাঙতে পারবে টাইগাররা? গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের অধিনায়ক মুমিনুল হক বলেন, ‘দেখুন, একটা না একটা সময় ভাঙতে হবেই। আমরা সবাই খুব ভালো প্রস্তুতি নিয়েছি। আমরা আশাবাদী এ ম্যাচটা নিয়ে।’ পাকিস্তানের মাটিতে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ২-০তে হারে বাংলাদেশ।
শেষ ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে যায়। টেস্টে ভালো ক্রিকেট খেলতে চান মুমিনুল। তিনি বলেন, ‘এখানে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলতে চাই। বিদেশের মাটিতে আমাদের পারফরম্যান্স মোটেও ভালো নয়। এখানে আমরা নিজেদের খেলার উন্নতি ঘটাতে চাই। আশা করি, ভালো ক্রিকেট উপহার দিতে পারবো।’
বাংলাদেশ দলে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম নেই। অথচ গত কয়েক বছর ধরে টেস্টে তিনিই সবচেয়ে ধারাবাহিক। সবশেষ ভারত সফরেও সতীর্থদের ব্যর্থতার মাঝে উজ্জ্বল ছিলেন মুশফিক। নিরাপত্তাজনিত কারণে পাকিস্তান সফর থেকে নাম প্রত্যাহার করেন নেন এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসমান। মুশফিককে ছাড়া খেলা কতটা কঠিন হবে বাংলাদেশের জন্য? তাছাড়া পাকিস্তানের কড়া সিকিউরিটির মধ্যে স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে কোনো সমস্যা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মুমিনুল বলেন, ‘মুশফিককে ছাড়া খেলা কতটা কঠিন আর সিকিউরিটি ইস্যু- এসব নিয়ে ভাবছি না। সেরা খেলোয়াড়কে ছাড়া খেলা কঠিনই। আমরা তাকে মিস করবো। তবে এটা দলের অন্যদের জন্য সুযোগ।’ বিমানবন্দর থেকে নামার পর সর্বস্তরেই টিম বাংলাদেশকে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা দেয় পাকিস্তানের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন মুমিনুল।
চলমান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ২ ম্যাচ খেলে পয়েন্ট শূন্য বাংলাদেশ দল। ভারত-অস্ট্রেলিয়া বহুদূর এগিয়ে গেছে। ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাও নিজেদের অবস্থানের উন্নতি ঘটাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এজন্যই বাংলাদেশের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজটাকে এত গুরুত্ব দিচ্ছেন আজহার আলীরা। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের লক্ষ্য কী? সম্পর্কে মুমিনুল বলেন, ‘টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ সব দলের জন্য। ওরা (পাকিস্তান) যেমন গুরুত্ব দিচ্ছে। আমরা এটাকে সমান গুরুত্ব দিচ্ছি।’
পাকিস্তানে বাংলাদেশ সবশেষ টেস্ট খেলে ২০০৩ সালে। সেবার ৩-০তে হেরেছিল টাইগাররা। সেই দলের হাবিবুল বাশার এখন বাংলাদেশ দলের টিম ম্যানেজমেন্টের সদস্য। বর্তমান দলের কারোরই পাকিস্তানে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা নেই। এখানকার কন্ডিশন ও উইকেট সম্পর্কে অজ্ঞ তারা। তবে মুমিনুল বলেন, ‘যে দেশেই যাবেন কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। কন্ডিশন ভালো আছে। একটু ঠান্ডা। প্র্যাকটিসে যেমন উইকেট পেয়েছি, আসল ম্যাচে হয়ত তার চেয়ে ভিন্ন থাকতে পারে। তাই এটা নিয়ে কিছু বলতে পারছি না। সকালে সিদ্ধান্ত নেবো টস পেলে কি করবো।’
মুশফিক-সাকিবের অনুপস্থিতিতে এ সিরিজে বাংলাদেশের প্রধান ভরসা তামিম ইকবাল। টি-টোয়েন্টি সিরিজে দলের পক্ষে সর্বাধিক রান করেন তিনি। এছাড়া পাকিস্তানে আসার আগে বিসিএল-এ ৩৩৪ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস খেলেছেন এই বাঁহাতি ওপেনার। যদিও তামিম ইকবাল টেস্টের জার্সিতে জাতীয় দলে ফিরেছেন এক বছর পর। সর্বশেষ টেস্ট খেলেন গত বছরের মার্চে ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। তবে তামিমকে নিয়ে ভালো কিছুর আশা মুমিনুলের। তিনি বলেন, ‘তামিম বিশ্বমানের প্লেয়ার। আশা করি, এত দিনের গ্যাপের পরও ও মানিয়ে নেবে।’