আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জানিয়েছে, চলতি বছরে (২০২০) বিশ্বের গড় জিডিপি আগের বছরের চেয়ে কমে যাবে। ২০২০ সালে তা ৩ শতাংশ নেতিবাচক হয়ে যাবে। তবে অর্থনীতি স্বাভাবিক অবস্থায় গেলে ২০২১ সালে প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ হবে।
মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) রাতে প্রকাশিত আইএমএফের ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক ২০২০, দ্য গ্রেট লকডাউন’ প্রতিবেদনে বিভিন্ন দেশের ২০২০ সালে কত জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে, সেই পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ৭ এপ্রিল পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য–উপাত্তের ভিত্তিতে আইএমএফ পঞ্জিকাবর্ষ ধরে জিডিপির পূর্বাভাস দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে গতকাল থেকে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের যৌথ বসন্তকালীন ভার্চ্যুয়াল বৈঠক শুরু হয়েছে।আইএমএফ পূর্বাভাস দিয়েছে, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে চলতি বছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশে নেমে আসবে। তবে ২০২১ সালে তা বেড়ে সাড়ে ৯ শতাংশ হতে পারে বলে জানায় আইএমএফ।
তবে ২০২১ সালের পূর্বাভাসটি নির্ভর করছে করোনাভাইরাসের বিস্তার কমে যাওয়ার পাশাপাশি অর্থনীতিতে স্বাভাবিক গতি ফিরে আসার ওপর।আইএমএফ বলছে, ‘করোনা মহামারির কারণে বিভিন্ন দেশে বিপুলসংখ্যক মানুষ মারা যাচ্ছে। এ কারণে করোনার ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে আইসোলেশন, লকডাউন করতে হচ্ছে, যা বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। যদি চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে এই ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে আনা যায় এবং অর্থনীতির গতি স্বাভাবিক হয়, তবে আগামী বছর প্রবৃদ্ধি বাড়বে।’সংস্থাটির পূর্বাভাস, করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ সালে বিশ্বের বড় অর্থনীতির দেশগুলো ভুগবে। প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয়ে যাবে। যেমন যুক্তরাষ্ট্র (মাইনাস ৫ দশমিক ৯ শতাংশ), জার্মানি (মাইনাস ৭ শতাংশ), জাপান (মাইনাস ৫ দশমিক ২ শতাংশ), যুক্তরাজ্য (মাইনাস সাড়ে ৬ শতাংশ), কানাডা (মাইনাস (৬ দশমিক ২ শতাংশ), ব্রাজিল (মাইনাস ৫ দশমিক ৩ শতাংশ) ও রাশিয়া (মাইনাস সাড়ে ৫ শতাংশ)। তবে চীনের ১ দশমিক ২ শতাংশ ও ভারতে ১ দশমিক ৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।এর আগে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মাত্র ২ থেকে ৩ শতাংশ হতে পারে বলে প্রাক্কলন করে বিশ্বব্যাংক।বিশ্বব্যাংক ওয়াশিংটন সদরদপ্তর থেকে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া আটটি দেশের ওপর এ প্রাক্কলন প্রকাশ করে।
বিশ্বব্যাংক এক বিবৃতিতে বলেছে, কোভিড-১৯ মহামারি দ্বারা ক্রমবর্ধমান মানবিক ক্ষতি ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিণতির মধ্যে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য সরকারকে স্বাস্থ্যখাতে জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের জনগণ, বিশেষত দরিদ্রতম এবং হতদরিদ্র মানুষকে রক্ষা করতে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।বিশ্বব্যাংক বলেছে দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের প্রতিটি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দেওয়া, বাণিজ্যিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়া এবং আর্থিক ও ব্যাংকিং খাতে আরও বেশি চাপের কারণে তীব্র অর্থনৈতিক মন্দার মুখোমুখি।