সোনার দাম যে হারে বাড়ছে তাতে আগামীদিনে সোনা হয়তো মানুষের বাড়িতে নয় পাওয়া যাবে মিউজিয়ামে। সুদূর মরু দেশের চিত্রটাও একই রকম। আরবের সোনাপ্রেমীরা এখন সোনার দোকান থেকে দূরে দূরেই থাকছেন। গালফ নিউজের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, চাহিদাও কমেছে ৬০- ৭০ শতাংশের মতো। তবে কথায় বলে কারও পৌষ মাস তো কারও সর্বনাশ। ক্রেতারা দোকান বিমুখ হলেও তাতে লাভ কমেনি স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের। বরং সোনার দাম যত বাড়ছে তারা প্রতিযোগিতার বাজারে টিঁকে থাকার পথ নিজেরাই করে নিয়েছেন । সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে স্বর্ণ ব্যাবসায়ীরা তাদের অতিরিক্ত সোনার স্টক বিক্রি করে নগদ জোগাড় করছেন। এই পদ্ধতি অবলম্বন করে তারা ধার শোধ করার চেষ্টা করছেন।
আগস্টের শুরুতে সোনার দাম প্রতি আউন্স ২,০৭৫ ডলার ছিল এখন তা ১৯৪৯ ডলার প্রতি আউন্স। জুন থেকে, আরবের একাধিক সোনার দোকান বন্ধ হয়ে গেছে, অন্যদিকে, খুচরা বিক্রেতারা তাদের বাড়িওয়ালাদের সঙ্গে ভাড়া সংক্রান্ত শর্ত পুনরায় আলোচনা না করা পর্যন্ত দোকানগুলি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। করোনা মহামারীর আগে স্বর্ণ বাজারে যে চাহিদা ছিল তার কাছাকাছি পৌঁছানোর জন্য অনেক দোকান তাদের স্টক কমিয়ে আনছে, অনেকে আবার দোকান পুরোপুরি বন্ধ রাখছেন। একথা জানাচ্ছেন মালবার গোল্ড এন্ড ডায়মন্ডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আব্দুল সালাম। চাহিদার সঙ্গে যোগানের ভারসাম্য না থাকায় অনেকেই নতুন স্ট্র্যাটেজি নিচ্ছেন। বড় বড় দোকানের আধিকারিকরা তাদের বাজারে থাকা ঋণ শূন্যতে নামিয়ে আনার লক্ষমাত্রা রেখেছেন। লকডাউনের জেরে পর্যটন এবং আনুষঙ্গিক বেশ কিছু ব্যবসা মারাত্মক ধাক্কা খেয়েছে। তাই বাজার থেকে নেওয়া ঋণ যতক্ষণ না শোধ হচ্ছে ততক্ষন পর্যন্ত বড় বড় আউটলেট খুলে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া অর্থহীন বলে মনে করছেন আরবের ব্যবসায়ীরা। কেউ কেউ রিয়েল এস্টেটে টাকা লাগিয়ে ক্ষতিপূরণ করার চেষ্টা করছেন। লকডাউন শুরুর পরে সোনার দাম বৃদ্ধি প্রায় ৩৫ শতাংশ। সেই সময়েই ক্ষতির মধ্যে দিয়ে চলা দোকানগুলি বন্ধ করে, বাজেট কাটছাট করে ভবিষ্যতের জন্য টিঁকে থাকার লড়াইয়ে যে সমস্ত স্বর্ণব্যবসায়ীরা নেমে পড়েছিলেন তারাই লম্বা রেসের ঘোড়া বলে মনে করছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা।