চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: আগামীকাল ৫ মে শাপলা চত্বরের ঘটনার প্রতিশোধ হিসেবে দেশব্যাপী নাশকতার আশঙ্কা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই দিনকে উপলক্ষ করে হেফাজতে ইসলামকে জামায়াত-শিবির ইন্ধন দিচ্ছে বলে গোপন তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
এ ক্ষেত্রে হেফাজতে ইসলাম তাদের ফাঁদে পা না দিলে হেফাজতের নাম করে নাশকতাও চালাতে পারে জামায়াত-শিবির। আর এ নাশকতা প্রতিরোধে চট্টগ্রামের মাদ্রাসাগুলোতে নজরদারি বাড়িয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। হেফাজত নেতারা অবশ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, তারা কারো ইন্ধনে প্ররোচিত হবেন না। কোনো সহিংস কর্মসূচি তারা পালন করবেন না।
২০১০ সাল থেকেই দেশের রাজনীতির অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল চট্টগ্রামভিত্তিক ধর্মীয় সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। কখনো প্রস্তাবিত নারীনীতির প্রতিবাদ, আবার কখনো ১৩ দফা দাবির সমর্থনে তারা সরব ছিল। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মকা-ের প্রতিবাদে কর্মসূচি নিয়ে পুরো দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে তারা। সর্বশেষ গত বছরের ৫ মে ১৩ দফা দাবি আদায়ের জন্য মতিঝিলের শাপলা চত্বরে স্থায়ী অবস্থান নিতে গিয়ে হেফাজত নেতা-কর্মীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন। হেফাজত নেতা-কর্মীরা এই দিন মতিঝিল ও আশপাশের এলাকায় ব্যাপক সহিংসতা চালায়। আর এ দিনটিকে সামনে রেখে নাশকতার আশঙ্কা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এদিকে দিনটিকে সামনে রেখে রাজধানীসহ সারা দেশে পুলিশকে সতর্ক রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বনজ কুমার মজুমদার বলেন, যে সমস্ত দল বা সংস্থা তাদের ব্যবহার করেছিল, আজকের দিনটিকে কেন্দ্র করে তারা আবার মাঠে নামতে পারে বিভিন্ন ইস্যুকে সামনে রেখে। এ ব্যাপারে
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক রয়েছে। নাশকতার তথ্যও রয়েছে পুলিশের কাছে।
সিএমপির উপকমিশনার বাবুল আকতার বলেন, সরাসরি বা অন্তরালে থেকে হেফাজতকে ব্যবহার করে কেউ কেউ অরাজক বা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে বলে তথ্য রয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিশেষভাবে সতর্ক রয়েছে।
জানা গেছে, নাশকতার ব্যাপারে গোয়েন্দা তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পরপরই চট্টগ্রামে হেফাজতে ইসলামের আওতাধীন মাদ্রাসাগুলোর ওপর নজরদারি বাড়িয়েছে পুলিশ। সে সঙ্গে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তারা এ নিয়ে বৈঠকও করেছেন বলে জানান সিএমপির কর্মকর্তারা।
এ ব্যাপারে হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক বলেন, শুধুমাত্র ৫ মে ঘটনায় আহত ও নিহতদের স্মরণে আমরা দেশব্যাপী দোয়া দিবস পালন করবে। আমরা আশা রাখি কোনো রকম সহিংসতা হেফাজতের পক্ষ থেকে হবে না।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৫ মে ঢাকার শাপলা চত্বরের ঘটনায় সরকারিভাবে ১১ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। আর বিভিন্ন থানায় ৪০টির বেশি মামলা হয়।