অাওয়ামীলীগের বেশিরভাগ নেতাকর্মীই তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষে ছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এ পদ্ধতিটির বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় তারাও পরে ওই বিলের বিপক্ষে অবস্থান নে। অাসলে দলীয় প্রধানের বিপক্ষে দলের কোনো নেতাকর্মী অবস্থান নেন না।
শনিবার সকালে রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) অায়োজিত “রাজনৈতিক দলসমূহ এবং বাংলাদেশে গণতন্ত্র” শীর্ষক এক সেমিনারে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে এ কথা বলা হয়। সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহানের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির সম্মাত ফেলো ড. রওনক জাহান।
সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল অাহমেদ, পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার অানিসুল ইসলাম মাহমুদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ অাহমদ, সাবেক সিইসি ড. শামসুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমতিয়াজ অাহমেদ, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন)সম্পাদক ড. বদিউল অালম মজুমদার, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা অামীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সিপিডির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানসহ অারো অনেকে।
ড. রওনক জাহান মূল প্রবন্ধে বলেন, দলগুলোর তহবিল সংগ্রহকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। সেখান থেকেই উৎপত্তি হয় সন্ত্রাসের। তখন দ্বন্দ্ব বেড়ে যায়। অাদর্শের কারণে নয়, অর্থের কারণেই দলগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়ে। শাসক ও দলের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না। তিনি অারো বলেন, রাজনীতিবিদরা পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখতেই দু‘দলে যোগ দেয়। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, রাশেদ খান মেনন ও সেলিমা রহমান অাপন দুই ভাই বোন। কৌশলগত কারণে এবং পরিবারের স্বার্থে দু‘দলে অংশ নিয়েছেন।
ড. শামসুল হুদা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো নিজে থেকে দায়িত্ব নিয়ে কিছুই করে না। বাইরে থেকে চাপ দিয়ে করাতে হবে। গণতন্ত্রের জন্যই অবাধ ও সুষ্ঠু ইলেকশন হতে হবে। ইসি, পিএসসিসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলো পুনরুদ্ধার করতে না পারলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল অাহমেদ বিএনপির উদ্যেশে বলেন, অাবারো সংলাপ হবে তবে এজন্য অপেক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশে অার কখনো ইলেকশনে কারচুপির সুযোগ আসবে না।
ব্যারিস্টার অানিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের বাধ্যবাধকতার কারণে এটি রাখা সম্ভব হয়নি। আর এক্ষেত্রে বিএনপির পক্ষে গেলে তারা বলতো, আইনের শাসন মানা হচ্ছে না।
ব্যারিস্টার মওদুদ অাহমদ সরকারি দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো তুলে নিন,দেশের রাজনীতির চেহারা পাল্টে যাবে। দুই দলের মধ্যে সমঝোতা হওয়ার প্রয়োজন আছে বলেও তিনি মত দেন। ভবিষ্যতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে অার হরতাল কর্মসূচি দেয়া হবে না বলেও তিনি প্রতিশ্রুতি দেন।
অধ্যাপক ইমতিয়াজ অাহমেদ বলেন, যারা বড় বড় নেতা হয়েছেন, তারা কেউই রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য নয়। এতো বড় বড় নেতা যখন পরিবারের বাইরে থেকে হয়েছেন, তাহলে এখন কেন সম্ভব নয়? তিনি অারো বলেন, বড় বড় দলগুলোর মধ্যেই গণতন্ত্রের চর্চা নেই।