সরকারি জমিতে অবৈধ মালিক সেজে এক কাঠা বা দুই কাঠা নয়, চারশ কাঠা জমির মালিক সেজে সেই জমি আবার বিক্রয়ও করেছেন। দূর দেশের গল্প নয় মগের মুল্লুক রাজধানীর কড়াইল বস্তি ভূমি রেজিষ্ট্রি অফিসের অসাধু কর্মকর্তাদের প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে জমির ভূয়া মালিক সেজেছেন জনৈক নাজমা বেগম ও ওসমান গনি। সেই জমি আবার বিক্রয়ও করেছেন পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সের কাছে।আর আসল মালিক রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেডও বিক্রি হয়েছেন সেই টাকার কাছে।
রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান বনানীর গা ঘেষে দিনে দিনে গড়ে ওঠা কড়াইল বস্তি। সাড়ে চার লাখ মানুষের এমন বসত ভূমিতে কেউ জমির মালিক কেউবা ভাড়াটিয়া, কেউ আবার হাওড়ের উপর বসবাস করছে। কিন্তু আসল ঘটনা হল কড়াইল বস্তির এই বিশাল এলাকার পুরোটাই গড়ে উঠেছে অবৈধভাবে। জমি অবৈধ তারপরও চলছে পানির লাইন, জ্বলছে চুলা বিদ্যুৎ সহ অবৈধ সব সংযোগ। সেটাও সমস্যা হত না যদি না এসবের বিলের টাকা সরকারি কোষাকারে কিঞ্চিত জমা পড়ত।
১৯৫৬ সালে তৎকালিন টিএন্ডটির নামে পাকিস্তান সরকারের অধিগ্রহন করা সেই জমির ৯৫ ভাগই এখন বেদখলে। এতদিন বস্তিবাসি অস্থায়ী ভাবে বসবাস করলেও দখলের এই রাজত্বের সর্বশেষ সংযোজন পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। জমি সরকারি হলেও আরএস ও সিটি জরিপে এদের নামে রেকর্ড করিয়ে রাতারাতি ভূয়া মালিক সেজেছেন নাজমা বেগম ও তার পুত্র ওসমান গনি। ওসমান গনি বলেন দাদার থেকে বাবা পেয়েছেন বাবার কাছ থেকে আমি। ওয়ারিশ সূত্রে আমি মালিক। নাজমা বেগম বলেন এটা তো আমার পূর্ব ওয়ারিশ গনের সম্পদ।
কথা বলা হয় আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ এর সাথে। তিনি বলেন, এটা অবশ্যই তাকে ভুল মালিক সাজিয়েছে। মহানগর জরিপে তাকে ব্যক্তি মালিকানায় দেখিয়ে দিয়েছেন।
অবৈধ মালিকের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে সেই জমি কিনে পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি এখন নিজেদের বৈধ মালিক ভাবতে শুরু করেছে। দখলবাজিতে পপুলারকে সহায়তা করেছে স্থানীয় সবকটি রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা। আওয়ামীলীগ নেতা কর্মী ছাড়াও জাতীয় পার্টির বেশ কয়েকজন নেতা কর্মীরা পপুলারকে জমি পাইয়ে দেয়া বাবদ টাকা খেয়েছে।
বছরের পর বছর দখলবাজদের দৌরাত্বে চললেও সরকারি কোনো পদক্ষেপ না থাকায়,কড়াইল বস্তি এখন দখলেন রাজ্য। একুশে টিভি