ভারী বর্ষণের সাথে উজান থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ী ঢলে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তা অববাহিকার ৫টি ইউনিয়নের চরগ্রামগুলো প্লাবিত করেছে। পাশাপাশি স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত একটি ক্রস বাঁধ বিধ্বস্থ্য হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইসগেট খুলে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদ সীমার দশমিক ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত ( বিপদসীমা ৫২ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার ) হচ্ছিল বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় তিস্তার পানি প্রবাহ ছিল ৫১ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার, সকাল ৯টায় দশমিক ২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পায়। এরপর দুপুর ১২ টায় পানি বৃদ্ধি পায় ৫২দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটার। এরপর পানি আরো ৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৫২ দশমিক ৩৫ সেন্টিমিটারে। তবে সন্ধ্যা ৭টায় তিস্তার পানি বিপদসীমার দশমিক ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিনি বলেন ২৪ ঘন্টায় তিস্তা অববাহিকার ডালিয়া পয়েন্টে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৬৭ মিলিমিটার। এ ছাড়া নীলফামারী জেলাজুড়ে বৃষ্টিপাত রেকড করা হয় ১১৪ দশমিক ৮৩ মিলিমিটার।
তিস্তাপাড়ের স্থানীয়রা জানায়, ভারী বর্ষন ও উজানের ঢলে তিস্তায় অকাল বন্যা দেখা দেয়ায় নীলফামারীর পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশাচাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নের চরাঞ্চলের গ্রামের ভেতর দিয়ে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহিত হয়ে প্লাবিত করেছে।
তিস্তা ব্যারাজের উজানে পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়শিঙ্গেশ্বর চরের মাঝি আছির উদ্দিন (৫৫) মুঠোফোনে জানান উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং ভারী বৃষ্টিতে ঝাড়শিঙ্গেশ্বর চরের উত্তরা মাথায় একটি ক্রস বাঁধ বিধবস্থ্য হয়েছে। বাঁধটি গ্রামের লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে এই বাঁধ নির্মান করেছিল গত বছর। বাঁধটি ভেঙ্গে যাওয়ায় চরের গ্রামের উপর দিয়ে তিস্তার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। পাশাপাশি চরের ৫০ মিটার পাড় ভেঙ্গে গেছে। অনেকে ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে বলে জানান তিনি। বৃহঃবিকেলে স্থানীয় সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার ক্ষতিগ্রস্থ্য এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
ডিমলাা পূর্বছাতনাই ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক আব্দুল লতিফ খাঁন, জানায় টানা বর্ষণে এবং তিস্তার নদীর পানি অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধির কারণে তিস্তার তীরবর্তী গ্রাম ও চরাঞ্চলের অধিকাংশ পরিবার অনেকেই মাছের খামার জাল দিয়ে ঘিরে রাখছে, গবাদি পশু, হাঁস-মুরগী উঁচু স্থানে সরিয়ে নিয়েছে।