দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া ১২টি দলের মধ্যে এইচ এম এরশাদের জাতীয় পার্টিকে জরিমানা গুণতে হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব না দেওয়ার কারণেই জরিমানার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগসহ ১১টি দল তাদের ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে।
বুধবার এই নির্বাচনী ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। ওই দিন জাতীয় পার্টি হিসাব জমা দেয়নি।
আইন অনুযায়ী প্রত্যেকটি দলকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা হবে এবং পরের ১৫ দিনের মধ্যে হিসেব জমা দেওয়ার সুযোগ পাবে। এ ছাড়াও যে দল থেকে সর্বোচ্চ ৫০ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছে সে দল সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১০০ প্রার্থীর জন্য দেড় কোটি টাকা এবং সর্বোচ্চ ২০০ প্রার্থীর জন্য তিন কোটি টাকা ও সর্বোচ্চ ৩০০ আসনের প্রার্থীর জন্য সাড়ে চার কোটি টাকা ব্যয় করার সুযোগ ছিল।
গণপ্রতিনিধিত্ব আইন অনুযায়ী, নির্বাচনের গেজেট প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনী আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়ার বিধান রয়েছে। সেই হিসেবে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে প্রত্যেকটি দলের নির্বাচনী আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়ার কথা থাকলেও আওয়ামী লীগসহ বাকি দলগুলো প্রায় একমাস পরে হিসাব জমা দেয়।
সবশেষ ২১ মে নির্বাচনী হিসাব জমা দেয় জাতীয় পার্টি (জেপি) ও বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনএফ)। এর আগে নির্বাচনে অংশ নেয়া নয়টি দল তাদের ব্যয়ের হিসাব জমা দিয়েছে সেগুলো হলো- আওয়ামী লীগ, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ, তরীকত ফেডারেশন, গণতন্ত্রী পার্টি, ন্যাপ, গণফ্রন্ট, খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট।
গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী, কোনো দল নির্দিষ্ট সমেয়র মধ্যে হিসাব জমা না দিলে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ব্যয় হয়েছে দুই কোটি ৫৩ লাখ ৯২ হাজার ৭১২ টাকা। দলীয় হিসাব জমা দেয়ার দ্বিতীয় দফার শেষ দিনে নির্বাচন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব সিরাজুর রহমানের কাছে এ হিসাব জমা দেয় আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব ফরহাদ হোসেন বলেন, “ইসিতে ১১টি দলের ব্যয়ের হিসেব জমা হয়েছে। যেগুলো হাতে পেয়েছি সেগুলো নির্বাচন কমিশন ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “যারা জমা দেয়নি তাদের বিষয়টি কমিশনে উপস্থাপন করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
নির্বাচনী হিসাব জমা দিতে বাংলাদেশ ইসলামীক ফ্রন্টকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। দলটির মহাসচিব এম এ মতিন বলেন, “আমরা নির্বাচনে অংশ নেইনি। মনোপত্র প্রত্যাহার করেছি। আমাদের মধ্যে একজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারেনি তাই চিঠি দেয়া হয়েছিল। আমরা ২৮ মে কমিশনকে এ বিষয়ে লিখিত দিয়েছি।”