রাজধানীর ডেমরায় বুধবার রাত থেকে শুরু হয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপির) তিন দিনব্যাপী ফরমালিন বিরোধী অভিযান। বৃহস্পতিবার দুপুরের পর ডেমরার সুলতানা কামাল সেতুর পশ্চিম পাড়ে প্রায় ২৮ হাজার লিটার ফরমালিন মেশানো আমের পাল্প (ম্যাংগো জুস বানানোর তরল আম) বোঝাই একটি ট্রাক আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্দেশে থানা পুলিশ। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত ভেগান এগ্রো লিমিটেপকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেন।
জানা যায়, কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ভেগান এগ্রো লি. কারখানা থেকে একটি ট্রাক আমের পাল্প বোঝাই করে চিটাগাং রোড শিমরাইল এএসটি বেভারেজ নামে জুস কারখানায় আসছিলো। এ সময় বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) সহকারী পরিচালক মো. সাহিনুর ইসলাম আটককৃত ট্রাকের আমের পাল্প পরীক্ষা করে ১০৪.৮২ মাত্রায় ফরমালিন পায়।
পরে বিকেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শীলু রায় (জেলা প্রশাসক কার্যালয়-ঢাকা) এর নির্দেশে ট্রাকটির সমস্ত তরল আম রাস্তার নিচে পানিতে ফেলে নষ্ট করা হয়।
ভেগান এগ্রো লি. এর কর্মকর্তা শাওন রায় বলেন, ”আমরা এই কাঁচামাল সেজান, একমি ও ম্যাঙ্গোলি জুস কোম্পানিতে সাপ্লাই করি। নষ্ট করা তরল আমের মূল্য প্রায় পাঁচ লাখ টাকা।”
পরে এই তিন কোম্পানির জুসে পরীক্ষা চালালে ম্যাঙ্গোলিতে ৯.৩৭ মাত্রায়, সেজান জুসে ৪.৩৯ এবং একমিতে ১.০১ মাত্রায় ফরমালিনের অস্তিত্ত্ব পাওয়া যায়।
এছাড়াও ডেমরা চেকপোস্টে সকাল ৯টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ কানসাট থেকে আসা একটি আন্তঃজেলা ট্রাক ৫০৬ খাচি আম এবং দিনাজপুর থেকে আসা একটি ট্রাক ১১২ খাচি লিচুসহ আটক করা হয়। পরীক্ষায় আমে ১২.৮৮ এবং লিচুতে ১.৩৭ মাত্রায় ফরমালিন পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কাজি মাহবুব উর রহমান (জেলা প্রশাসক কার্যালয়-ঢাকা) এর নির্দেশে ট্রাক থেকে ২৫০ মন আম ও একলাখ বার হাজার পিস লিচু রাস্তার পাশে মাটিতে ফেলে বুলডোজারের মাধ্যমে পিষে ফেলা হয়। পিষে ফেলা আমের বর্তমান বাজার মূল্য কমপক্ষে সাত লাখ ৩০ হাজার টাকা এবং লিচুর মূল্য প্রায় পাঁচ লাখ টাকা।
আটককৃত ট্রাক ড্রাইভার মাইনুল বলেন, “কানসাট থেকে দালাল সেলিম আমাকে ৫০৬ খাচি আম বোঝাই করে ক্ষিলগাঁও আড়তে আনতে বললে আমি নিয়ে আসি।”
অপর ড্রাইভার রবিউল ইসলাম বলেন, “দিনাজপুরের বিরল থানার মাধববাটি গ্রামের শুকুমদ্দিনের ছেলে মো. আশরাফুল (২৫) আমাকে ১১২ খাচি লিচু বুঝিয়ে দিলে আমি ঢাকার কারওয়ান বাজার আড়তের উদ্দ্যেশ্যে আসি।”