সাধারণ ফুটবলপ্রেমীদের ধারণা ব্রাজিলে কেউ আর্জেন্টিনার নামই সহ্য করতে পারে না। ম্যারাডোনা ও মেসিভক্তরা এবার বিশ্বকাপে ভয়ে ভয়ে থাকবেন। ১৯৫০ সালে ব্রাজিল যখন প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের আয়োজন করেছিল। সে আসরে আর্জেন্টিনা অংশ নেয়নি। তাছাড়া দুই দলের মধ্যে তখন এমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাও ছিল না। ব্রাজিল ১৯৫৮, ৬২ ও ৭০ সালে বিশ্বকাপ জেতার পর আর্জেন্টিনা ১৯৭৮ সালে প্রথমবার স্বপ্নে ট্রফি ঘরে তুলেছিল। ১৯৮৬ ম্যারাডোনার নেতৃত্বে আর্জেন্টিনা হারানো বিশ্বকাপ উদ্ধারের পরই ব্রাজিলের সঙ্গে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা শত্রুতা বেড়ে যায়। পেলে না ম্যারাডোনা সেরা এ নিয়ে দুনিয়া জুড়ে আলোচনার ঝড় বইতে থাকে। পরিবেশ আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠে যখন পেলে ম্যারাডোনাকে আর ম্যারাডোনা পেলেকে তিরস্কার করে মন্তব্য করেন। সন্দেহ নেই কিংবদন্তি দুই ফুটবলারের প্রতি ভালোবাসার কারণে দুনিয়া জুড়েই ব্রাজিল-আর্জেন্টিনাকে ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। বিশ্বকাপ এলে দুই দলের সমর্থকদের কথা বলাও বন্ধ হয়ে যায়। এমনও অবস্থা হয় যে দুই দলের সমর্থকরা বড় ধরনের হট্টগোলে জড়িয়ে পড়েন। ফুটবল মাঠে পেলে ও ম্যারাডোনার অবদান কখনো ভুলবার নয়। এখন তাদের নিয়ে যত তর্ক হোক না কেন দু’জনেই মাঠে নেই। আছেন আর্জেন্টিনার স্বপ্নের নায়ক লিওনেল মেসি ও ব্রাজিলের নেইমার। এবার বিশ্বকাপে দুই তারকাকে ঘিরে দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে যতো উত্তেজনা। আর্জেন্টিনাভক্তদের আশা এবার মেসির নেতৃত্বে তারা চ্যাম্পিয়ন হবে। অন্যদিকে ব্রাজিলিয়ানদের আশা ১৯৫০ সালে না পারলেও নেইমারই এবার নিজ দেশের স্বপ্নের ট্রফি জেতাবে। ব্রাজিলে বিশ্বকাপ হচ্ছে বলে ব্রাজিল সমর্থকরা মনভরে নেইমার বা প্রিয় দলকে সমর্থন দিতে পারবে। কিন্তু শঙ্কা ছিল ব্রাজিলে আর্জেন্টাইন বা মেসিভক্তরা নিরাপদে প্রিয় দলকে সমর্থন দিতে পারবেন কিনা। না, ব্রাজিলে দেখা গেল অবাক করার মতো দৃশ্য। বিশ্বকাপ খেলতে মেসিরা ব্রজিলে পা রাখতেই বিমানবন্দরে শোনা গেল মেসি মেসি স্লোগান। নিরাপত্তার কড়া বেস্টনি থাকা সত্ত্বেও আর্জেন্টিনার অনুশীলনেও শত শত মেসিভক্তরা প্রতিদিন জড়ো হয়ে প্রিয় তারকাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। বসনিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামার আগে সকাল থেকেই রিও ডি জেনিরোর পরিবেশ দেখে তো অনেকে ভুল করে বলে ফেলতে পারেন ব্রাজিল নয় মেসিরা যেন নিজ দেশেই বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামছেন। আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা যে হোটেলে অবস্থান করছে সেখানে সকাল থেকেই আকাশী-সাদা জার্সি পরে আর্জেন্টাইন সমর্থকদের ভিড়।
সবাই মেসি মেসি বলে চিৎকারে অস্থির। যে আর্জেন্টিনাকে ব্রাজিলিয়ানরা সহ্যই করতে পারেন না। সেখানে মেসিকে ঘিরে উন্মাদনা সত্যিই চোখে পড়ার মতো। সামনে বড় ম্যাচে উন্মাদনা যে আরও বাড়বে তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।