বাংলাদেশে মেধাসম্পদের পরিচর্যা ও লালনের অভাব রয়েছে বলে মন্তব্য করছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
বুধবার সকালে বসুন্ধরা গোল্ড ওয়াটার কনভেনশন সেন্টারে ‘খসড়া মেধাসম্পদ নীতি সম্পর্কিত মাল্টি স্টেক হোল্ডার সভা ও টেকনোলজি অ্যান্ড ইনোভেশন সার্পোট সেন্টার স্থাপন (টিআইএসসিএস)’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বিশ্ব মেধাসম্পদ সংস্থা (ডব্লিউআইপিও) এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেড মার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) যৌথভাবে এর আয়োজন করেন।
মন্ত্রী বলেন, আয়তনে ছোট হলেও মেধাসম্পদের দিক থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে। মেধার প্রতিযোগিতায় প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় আমরা এগিয়ে।
আমাদের মেধার সৃজনশীল জনসম্পদ এখনো আছে। তবে এ মেধাসম্পদের সুষ্ঠু পরিচর্যা ও লালনের অভাব রয়েছে বলে স্বীকার করেন মন্ত্রী।
পৃথিবীর সকল সভ্য ও উন্নত জাতি মেধার বিকাশ ও জ্ঞানচর্চায় সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করছে। এর ফলে মেধাসম্পদের বিকাশ থেমে নেই। বরং উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী।
মেধাকে সম্পদ হিসেবে ব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশ পিছিয়ে থাকার কারণে বাংলাদেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে স্বীকার করেন শিল্পমন্ত্রী।
আমু বলেন, আমাদের মেধাসম্পদ ব্যবহার, উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি বড় চ্যালেঞ্জ। বিলম্ব হলেও প্রধানমন্ত্রী মেধাসম্পদের লালন ও পরিচর্যায় গুরুত্ব দিয়ে রূপকল্প-২০২১ ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের সৃজনশীল ও প্রতিভাবান তরুণ প্রজন্মকে উৎপাদন ও উন্নয়নের হাতিয়ারে পরিণত করতে তথ্য প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের তাগিদ দিয়েছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের জন্য প্রযুক্তিবান্ধব সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকার এগিয়ে যাচ্ছে।
মেধাসম্পদের ‘পাইরেসি’ ঠেকাতে সমন্বিত মেধাসম্পদ নীতি প্রণয়নের কাজ চলছে উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, মেধাসম্পদের বিস্তৃতি বাড়ছে। বাড়ছে পাইরেসিও। পাইরেসির ফলে উদ্ভাবকরা স্বীকৃতি ও মূল্য পাচ্ছেন না।
জ্ঞানভিত্তিক শিল্পায়নের জন্য যেকোন উপায়ে পাইরেসি প্রতিরোধ করতে হবে। বাংলাদেশে মেধাসম্পদের পাইরেসি ঠেকাতে একটি সমন্বিত মেধাসম্পদ নীতি প্রণয়নের কাজ চলছে।
এ নীতি প্রণয়নের ফলে উদ্ভাবকদের মূল্যায়নের পাশাপাশি, পণ্যে মূল্য সংযোজনে সুযোগ সৃষ্টি, দেশে উৎপাদিত পণ্যের গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করেন তিনি।
এ বিবেচনায় দেশের মেধাসম্পদ বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি বিশ্ব মেধাসম্পদ সংস্থা (ডব্লিউআইপিও) মেধাসম্পদ নীতি প্রণয়নের প্রতি বিশেষ তাগিদ দিচ্ছে। বাংলাদেশের জন্য একটি খসড়া মেধাসম্পদ নীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে বিশ্ব মেধাসম্পদ সংস্থা সহায়তা করছে বলেও জানান মন্ত্রী।
ঢাকায় টিআইএসসিএস স্থাপন করায় ডব্লিউআইপিও-কে ধন্যবাদ জানিয়ে আমু বলেন, এ সেন্টারের মাধ্যমে দেশের উদ্ভাবক, বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ ও শিল্প উদ্যোক্তারা সহজে তাদের উদ্ভাবনের পেটেন্ট অধিকার লাভ করবেন।
‘মেধাসম্পদ সংরক্ষণ ও মালিকানা সুরক্ষা পাবে। পাশাপাশি প্রযুক্তি সম্পর্কিত সর্বশেষ তথ্য-উপাত্ত প্রাপ্তি, মেধাসম্পদের বাণিজ্যিকীকরণ ও বাজার সম্প্রসারণে ইতিবাচক অবদান রাখবে।’
কর্মশালায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মঈন উদ্দীন আবদুল্লাহ এর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ডব্লিউআইপিও পরিচালক কিপ্লে সেনকুরো, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব নিমাই চন্দ্র পাল প্রমুখ।