বুধবার রাতে বাংলাদেশ কাস্টমস, এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট এক্সিকিউটিভ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৫ দিনের মধ্যে দোষী বিজিবি সদস্যদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নিলে কর্মসূচি দেয়া হবে।
তবে বিজিবি কর্মকর্তারা বলছেন, ‘ভুল’ বোঝাবুঝির কারণে ওই ঘটনা ঘটেছিল এবং তাৎক্ষণিকভাবে তার সমাধানও হয়ে গিয়েছিল।
গত মঙ্গলবার সকালে কলকাতা থেকে আসা মৈত্রী এক্সপ্রেসের এক যাত্রীর ব্যাগ তল্লাশিকে কেন্দ্র করে বিজিবি এবং কাস্টমস কর্মকর্তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়।
এরপর কাস্টমসের দুই কর্মকর্তাকে বিজিবি সদস্যরা তুলে নিয়ে গেলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ে।
দর্শনা কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কাস্টমস থেকে সকল প্রকার আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ট্রেনটি ছাড়ার মুহূর্তে বিজিবির কয়েকজন সদস্য তল্লাশি শুরু করে।
“তারা এক মহিলা যাত্রীর ব্যাগ তল্লাশি চালিয়ে ৪/৫টি ত্রিপিস পায়। কাস্টমসের নিয়মানুযায়ী এসব বহন করতে পারে জানানোর পরও তারা ওই মহিলাটিকে আটক করতে চাইলে তা না করার অনুরোধ করা হয়। এনিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়।”
এর মধ্যে বিজিবির আরো কয়েকজন সদস্য অবৈধ মালামাল আছে বলে ট্রানজিট গোডাউনে ঢুকে তালা খুলে দিতে বলে। কিন্ত না দেয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে বলে জানান আনোয়ার।
“তাছাড়া সাদা পোশাকের একজন মৈত্রী ট্রেনে উঠতে চাইলে তাকে বাধা দেয়া হলে বিজিবি সদস্যরা আরো ক্ষিপ্ত হয়। এসব সমস্যা নিয়ে কথাকাটাকাটির সময় বিজিবি সদস্যরা আমাকে এবং আমার এক সহকর্মীকে গাড়ি তুলে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে নিয়ে ছেড়ে দেয়।”
আনোয়ার বলেন, “বিজিবি সদস্যরা আমাকে চড়-থাপ্পড় মেরেছে এবং গালাগাল করেছে। ছেড়ে দেয়ার সময় সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার জন্য ভয়ভীতিও দেখিয়েছে।”
এই বিষয়ে বিজিবির কুষ্টিয়া সেক্টরের কমান্ডার খন্দকার মাহমুদ হোসেন বলেন, সোনা পাচার হচ্ছে এমন একটি খবর পেয়ে যশোরের ওই ট্রেনে অভিযান চালাতে গেলে কাস্টমস কর্মকর্তারা বাধা দেয়।
“তারাই (কাস্টমস) সব চেক করেছে, বিজিবির করার দরকার নেই- এটা বলার পর দুই পক্ষের মধ্যে বেশ বাকবিতণ্ডা হয়। তখন বিজিবির এক সোর্সকে তারা মারধর করলে পরিস্থিতির অবনতি হয়।”
খন্দকার মাহমুদ দাবি করেন, পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্যই দুই কাস্টমস কর্মকর্তাকে গাড়িতে কিছুদূর নিয়ে আবার পৌছে দেয়া হয়।
“এরপর দুই পক্ষের কর্মকর্তারা বসেন এবং ভুল বোঝাবুঝির এই ঘটনা নিয়ে সমঝোতাও হয়।”
তবে বিষয়টি তদন্ত হচ্ছে জানিয়ে সেক্টরের কমান্ডার মাহমুদ বলেন, বিজিবির কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলাদেশ কাস্টমস, এক্সাইজ অ্যান্ড ভ্যাট এক্সিকিউটিভ অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, এই ঘটনা খুবই দুঃখজনক।
“ঘটনার তদন্তে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করে দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। ১৫ দিনের মধ্যে তা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”