বিশ্বকাপে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে দুর্দান্তভাবে কিছু গোল বাঁচিয়ে তিনি এখন সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। সাধারণ ফুটবল দর্শকরা ২৪ ঘণ্টা আগেও যার নাম জানতেন না, সেই গিয়েরমো ওচোয়া এখন ভার্চুয়াল জগতে সবার আগে। মঙ্গলবার ব্রাজিল-মেক্সিকোর অনুষ্ঠিত ম্যাচের পর থেকে ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত নামও এখন তিনিই।
নেইমারদের বিরুদ্ধে মোট ৯টি গোলকে রুখে দিয়েছেন ওচোয়া। গোলরক্ষক হয়ে ‘সুপার হিরো’ বনে যাওয়া ওচোয়াকে নিয়ে ৯টি জানা অজানা কথা জেনে নিই।
১) এই মাসের শেষ থেকে ফ্রি ফুটবলার হয়ে যাচ্ছেন গিয়েরমো ওচোয়া। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি তার প্রিয় ক্লাব ফ্রান্সের আজাক্কিও নতুন করে চুক্তি করতে আগ্রহ দেখায়নি। তবে বুধবার সকাল থেকেই ওচোয়ার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছে ইউরোপের অনেক বড় ক্লাব। আর্সেনাল, ম্যানসিটি তার সাথে যোগাযোগ করছে। তবে তিনি ফ্রান্সেই থাকতে চান বলে জানা গেছে।
২) ডোপিংয়ে অভিযুক্ত হয়ে মেক্সিকো ছেড়েছিলেন- ২০১১ সালে। মেক্সিকোয় গোল্ড কাপ চলাকালীন আরো পাঁচ ফুটবলারের সাথে ডোপিংয়ে অভিযুক্ত হয়ে সাসপেন্ড হয়ে যান ওচোয়া। পরে ভুল শুধরে নেয় মেক্সিকো ফুটবল ফেডারেশন। তারা বলেন, “অবৈধ কোনো ড্রাগ নয়, খাবারের সাথে বিষক্রিয়ার জন্য ডোপ টেস্টে পজিটিভ পাওয়া যায় ওচোয়ার।” বিরক্তিতে দেশ ছেড়ে ফ্রান্সের ক্লাব আজিক্কোতে সই করেন ২৮ বছরের এই মেক্সিকান গোলকিপার।
৩) প্রেমিক হিসেবেও ওচোয়া বেশ আবেগপ্রবন। প্রেমিকার সাথে ঝগড়া করে মাঠেই কেঁদে ফেলেছিলেন তিনি। দলের সতীর্থরাই বলেন, “ওচোয়া খুব আবেগপ্রবন। সামান্য কোনও ঘটনাতেই নাকি কেঁদে ফেলেন। একবার এক ক্লাব ম্যাচের আগে প্রেমিকার সাথে খুব ঝগড়া হয় তার। ম্যাচ চলাকালীন সে কথা ভেবেই কেঁদে ফেলেন তিনি।”
৪) ২০১৩ সালে লিভারপুলের পক্ষ থেকে তাকে মোটা টাকায় খেলার প্রস্তাব দেওয়া হয়। বিভিন্ন ব্রিটিশ পত্রিকা থেকে বলেও দেওয়া হয় ওচোয়া লিভারপুলে যোগ দিচ্ছেন। তবে শেষ অবধি তা হয়নি। ফিরিয়ে দেন সেই প্রস্তাব।
৫) ২০০৬ জার্মানি, ২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকা। এ দুটো বিশ্বকাপেই দলে ছিলেন। কিন্তু দুবারই দলের তৃতীয় গোলকিপার হিসেবে রিজার্ভ বেঞ্চে জায়গা পেয়েছেন। ২০১০ বিশ্বকাপে তাকেই প্রথম একাদশে খেলানো হবে এমনটাই ধরে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোচের ইচ্ছায় ওচোয়া নয়, অস্কার পেরেজকে গোলকিপার হিসেবে প্রথম একাদশে নেওয়া হয়েছিলো।
৬) ২৮ বছরের এই গোলকিপারের ডাক নাম মিমো। দেশের মিডিয়া তার নাম দিয়েছে মেক্সিকান জেসাস।
৭) বিশ্বকাপের আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ সেভাবে তাকে চিনতো না। কিন্তু ব্রাজিলের সাথে ম্যাচে যতবার দুরন্ত সেভ করেছেন, লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে তার ভক্ত সংখ্যা। ম্যাচের পর দিন নেইমার, অস্কাররা নন ইন্টারেনট দুনিয়ায় তিনিই রাজা। ম্যাচের পরপরই মাত্র ৫ ঘণ্টায় টুইটারে ওচোয়ার নতুন ‘ফলোয়ার’ সংখ্যা ৯ লাখ ছাড়িয়েছে।
৮) অনেক প্রাক্তন ফুটবলার তার সাথে লেভ ইয়াসিনের মিল খুঁজে পাচ্ছেন।
৯) অনবদ্য গোলকিপিংয়ের পর ওচোয়াকে নিয়ে নানা গুজব শুরু হয়েছে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে খুব শেয়ার হওয়া এক ছবিতে দেখানো হয়েছে ওচোয়ার নাকি ৬টা আঙুল। প্রমাণ হিসেবে তার হাতের ছবিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পরে দেখা যায় সেটা জাল ছবি। ওচোয়া নিজেও এই বিষয়ে নিয়ে টুইট করেন। টুইটে লেখেন, “না না আমার পাঁচটাই আঙুল।”