বিশ্বকাপ অভিযান সবে শুরু৷ বড় পরীক্ষা এখনো দিতে হয়নি িশরোপা প্রত্যাশীদের। হয়তো তা সামনে অপেক্ষা করছে। তার আগে নিজেদের তৈরি করে নেওয়ার পালা।
আর্জেন্টিনার কাছে আজকের ইরান ম্যাচটা তেমনই। ম্যাচটা এমনিতে কঠিন কিছু হওয়ার কথা নয় দুবারের চ্যাম্পিয়নদের জন্য। তবে এই বিশ্বকাপের এখন পর্যন্ত খেলার যা গতিপ্রকৃতি, যত ছোট দলই হোক, জয় ধরে নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন না। মাঠে ভালো ফুটবল উপহার দিয়ে জয় তুলতে হবে। আমার বিশ্বাস, ইরানের বিপক্ষে আর্জেন্টিনা জয় তুল নেবে দুই-তিন গোলে। দুদলের শক্তির বিচারে তেমন কিছুই হওয়া উচিত।
সাবেলার দলের শক্তি কতটুকু, তা এই ম্যাচেই ভালোভাবে মাপা যাবে। প্রথম ম্যাচে আর্জেন্টিনা পার পেয়েছে নিজেদের সামর্থে৵র ষোলো আনা প্রয়োগ না ঘটিয়েই।
ইরান ম্যাচই জানিয়ে দেবে মেসিরা আসলে কতদূর যেতে তৈরি। নীল-সাদার ভালো-খারাপ দিকগুলো এদিন ভালোভাবে বেরিয়ে পড়বে।
একই সঙ্গে দলীয় সমন্বয়ও তৈরি করতে পারবেন কোচ সাবেলা। এটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। নানা কারণে প্রথম ম্যাচে সবকিছু ঠিকঠাক না-ও ঘটতে পারে। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচেও সুর-তাল ঠিকঠাক না মিললে বুঝতে হবে, কোথায়ও সমস্যা আছে।
যেমনটা ব্রাজিলের ক্ষেত্রে হয়েছে। প্রথম ম্যাচে তারা উতরে গেছে নিজেদের মাঠ, দর্শক সমর্থন ইত্যাদির কল্যাণে। রেফারির আনুকুল্য একটা ভূমিকা রেখেছে বলে বিতর্ক আছে। যাক সেদিকে আমি যাচ্ছি না। দ্বিতীয় ম্যাচেও যখন ব্রাজিল ছন্দ পায়নি, দলটা যে সমস্যামুক্ত নয়, তা পরিষ্কারই হয়ে গেল। অনেকের মুখেই ব্রাজিলের সমালোচনা চলছে। খোদ ব্রাজিলেও নাকি নেইমারদের কাপ জয়ের সম্ভাবনা নিয়ে নানা নেতিবাচক কথাবার্তা হচ্ছে।
আর্জেন্টিনায়ও তা হোক এমনটা হতে দিতে চাইবেন না মেসি, এটা জানাই। মাঠে সব ঠিকঠাক না হলে কিন্তু নেতিবাচক কথাবার্তা ভেসে বেড়াবে চারদিকে, যার একটা প্রভাব দলে পড়াও স্বাভাবিকও। যেকোনো টুর্নামেন্টেই সাফল্য পাওয়ার বড় মাপকাঠি হলো, নিজেদের সম্পর্কে সবার মধ্যে একটা ভালো ধারণা ছড়িয়ে দেওয়া।
ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মতো দলগুলো ফেবারিটের তকমা নিয়েই অবশ্য বিশ্বকাপে আসে। এটাই অলিখিত রীতি। তবে এটাও সত্য, বিশ্বকাপে জেতার ক্ষমতা আছে বলেই এই দলগুলোকে নিয়ে মাতামাতি হয় বেশি। আমাদের দেশে তো দেখছি, আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল দুই ভাগে ভাগ হয়ে পড়েছে। ফুটবলজ্বর এমনই, কোনো সীমানাপ্রাচীর মানে না। এ কারণেই ফুটবল সর্বজনীন একটা খেলা। যে খেলার বড় দুটি বিজ্ঞাপন ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা। আজ আর্জেন্টিনা আর্জেন্টিনার মতোই ঝড় তুলে জিতুক, এটাই প্রত্যাশা।