নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে হবিগঞ্জের ১৫ যুবকসহ অন্তত ২৭ বাংলাদেশী গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসবিহীন এক সপ্তাহ ধরে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছে। গতকাল বিকাল পর্যন্ত ২৭ জনের খাবার ব্যবস্থা ছিল। তা ছাড়া বোমার আঘাত থেকে বাঁচার জন্য নির্মাণাধীন একটি ভাঙ্গা ভবনে দুঃসহ জীবনযাবন করছে। গত বছর হবিগঞ্জ সদর উপজেলা, মাধবপুরসহ বিভিন্ন উপজেলার ২৫/৩০ জনের একদল যুবক ইরাক যায়। সেখানে যাওয়ার পর থেকে ভাল বেতনও পাচ্ছিল। কিন্তু সমপ্রতি নতুন করে যুদ্ধ শুরু হওয়ায় বিপাকে পড়ে হবিগঞ্জের ১৫ জনসহ ২৭ বাংলাদেশী। এ ব্যাপারে গতকাল সদর উপজেলার শেখ সাহাউর রহমান বেলাল জানান, তিকরিত শহরের তাদের বাসা ছেড়ে একটি নির্মাণাধীন ভবনে আশ্রয় নিয়েছে। যে ভবন ও এর আশপাশে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানি নেই। গতকাল বিকাল পর্যন্ত খাবার রয়েছে তাদের। তাদের পার্শ্ববর্তী ভবনগুলোতে প্রতিনিয়ত হেলিকপ্টার থেকে গোলাবর্ষণ করছে। তারা জানান, হেলিকপ্টার এলেই তারা জীবন রক্ষায় ছোটাছুটি করছে। এখন তাদের দাবি দ্রুত তাদের উদ্ধার করা হোক। এ ব্যাপারে বেলালের পিতা মাওলানা মুখলেসুর রহমান জানান, তার সন্তানসহ সবাইকে উদ্ধারের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় আবদুল মালেক জানান, ইরাকের সালাউদ্দিন তিকরিত নামক শহরের সিকরি এলাকার বদর মাহমুদ পাহাড়ি এমপি’র একটি কোম্পানিতে চাকরি নিয়ে তারা ভালভাবেই দিনযাপন করছিলেন। সম্প্রতি ইরাকের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ইরাক প্রবাসীরা। এদিকে, ইরাকের বাগদাদ শহরে বসবাসরত হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বাঘাসুরা গ্রামের এখলাস মিয়া (২৮) মোবাইল ফোনে জানান- বাগদাদ শহরে বিভিন্ন এলাকায় অন্তত সাড়ে ৫ হাজার বাংলাদেশী রয়েছেন। তবে, বিদ্রোহীরা এখনও ওই শহরে পৌঁছেনি। বাংলাদেশ সময় বুধবার রাত ৯টা পর্যন্ত বিদ্রোহীরা বাগদাদ শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিল বলে এখলাস মিয়া জানান। তিনি আশঙ্কা করেন- শিগগির বিষয়টির সুরাহা না হলে সাড়ে ৫ হাজার বাংলাদেশীসহ প্রবাসীদের জীবন নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়বে।