২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অধিবেশন চলাকালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বিদেশ সফরে যাওয়ার কঠোর সমালোচনা করেছেন সরকারদলীয় জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “আপনি হ্যামলেট করবেন আর প্রিন্স অব ডেনমার্ক থাকবে না, তা তো হয় না। মনে রাখবেন, এই সংসদ যদি বাজেট পাস না করে, আপনি এক টাকাও খরচ করতে পারবেন না।”
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “বাজেট আলোচনা করব অর্থমন্ত্রীর জন্য। যিনি প্রধান নায়ক, তিনি থাকবেন না, এটা কখনো হয়? খবর নিয়ে জানলাম, তিনি (অর্থমন্ত্রী) জেদ্দায় গেছেন ইসলামি ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে। উনি কেন গেলেন? বাজেট দিয়ে কোনো অর্থমন্ত্রী এভাবে বিদেশ যেতে পারেন? আমার জানা নাই।”
তিনি আরো বলেন, “খবর নিলাম ২৩ তারিখে গেছেন, ২৬ তারিখ আসবেন। পারলে তাড়াতাড়ি আসেন। একজন প্রতিমন্ত্রী নাকি বানাইছেন, সেইডাও নাই, প্ল্যানিং মিনিস্টারও নাই।”
স্পিকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আপনি (স্পিকার) প্রধানমন্ত্রীকে বলতে পারেন। বাজেট দিয়ে অর্থমন্ত্রী যেন দেশের বাইরে না যান।”
পরে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে স্পিকারের প্রতি অনুরোধ জানান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।
বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সমালোচনা করে সুরঞ্জিত বলেন, “আওয়ামী লীগের সব বাজেট বাস্তবায়িত হয়েছে, এবারের বাজেটও (২০১৪-১৫) বাস্তবায়িত হবে।”
সুরঞ্জিত সেন মন্তব্য করেন, বাজেট বাস্তবায়নে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সুশাসন ও আইনের শাসন। বাজেটে ইকোনমিক প্রাইওরিটি দেওয়া হয়েছে, পলিটিক্যাল প্রাইওরটি দিতে হবে। কারণ বাজেটের রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হচ্ছে সুশাসন ও আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন।
এ সময় খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আপনি পলিটিকস করবেন এক্সক্লুসিভ, আর ডায়ালগ করবেন ইনক্লুসিভ, তা হয় না। ইনক্লুসিভ পথে আসেন।”
“উনার (খালেদা জিয়া) কথা শুধু ‘তত্ত্বাবধায়ক চাই’। উনার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন আরেক পণ্ডিত ড. কামাল হোসেন। ইট ইজ এ মেটার অব ফাস্ট।” যোগ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, “উনি (খালেদা) আসেন নাই, সিট কি খালি আছে? আপনার ভুলের মাশুল আপনাকেই দিতে হবে। সংবিধান মানবেন। বলেন ভুল হয়েছে, সংসদে সিট চাই। আমাদের নেত্রী উদার আছেন। আওয়ামী লীগের সিট ছেড়ে আপনাকে নিয়ে আসবেন।”
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদ যেই পাওয়ারের কথা শুনছে, ৬০-৭০ বছরের দাম্পত্য জীবন ছেড়ে চলে আসছে। রাজনীতিতে কেউ কাউরে ছাড়ে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনা চলছে। ইতোমধ্যে আরো আলোচনা করেছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, পার্বত্য চট্টগ্রাম-বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উ শৈ সিং, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর।