নতুন অর্থবছরের প্রথম দিন ১ জুলাই থেকে ব্যাংকগুলো ১৫০ কোটি ডলার পর্যন্ত মজুত করতে পারবে। বর্তমানে এই পরিমাণ ১১৩ কোটি ডলার।
সোমবার দেশের ৫৬টি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে এবিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসহ নানা কারণে ব্যাংকগুলোর হিসাবে বৈদেশিক মুদ্রা জমা হয়। কিন্তু ব্যাংক চাইলেই তার হিসেবে যতখুশি বৈদেশিক মুদ্রা রাখতে পারে না।
আইন অনুযায়ী, একটি ব্যাংক তার মোট মূলধনের ১৫ ভাগ বৈদেশিক মুদ্রা নিজের কাছে রাখতে পারে। কিন্তু মোট মূলধন নিয়মিত ওঠানামা করায় কোন ব্যাংক নিজের হিসেবে কি পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা রাখবে তা ঠিক করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।
কোনো ব্যাংকের হিসাবে নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা জমে গেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে জমা করতে হয়। আবার বাংলাদেশ ব্যাংকও ব্যাংকগুলোরে কাছ থেকে প্রয়োজনে ডলার কিনে নেয়।
বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এই সুযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।
তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংকগুলোর কাছে উদ্বৃত্ত ডলার থাকায় এই মুহূর্তে এই সিদ্ধান্ত ব্যাংকগুলোর কোনো কাজে লাগবে না। বরং ব্যাংকগুলোর আর্থিক চাপ বাড়বে।
২০১২ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলো তাদের নিজস্ব হিসাবে ৮১০ মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা রাখতে পারতো। এরপর গত বছর এপ্রিলে এই সীমা বাড়িয়ে এক দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার করা হয়।
এখন তা আরো বাড়িয়ে ১ দশমিক ৫২ বিলিয়ন করা হলো। তবে মূলধন ঘাটতিতে থাকা ব্যাংকগুলোর জন্য এই সীমা বাড়ানো হয়নি।
এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাসান জামান বলেন, “এতদিন ব্যাংকগুলোর অতিরিক্ত বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশ ব্যাংক কিনে নিয়েছে। সম্প্রতি মূল্যস্ফীতির চাপের কথা চিন্তা করে মুদ্রা সরবরাহ ঠিক রাখতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে ব্যাংকগুলোর কোনো সমস্যা হবে না।”
ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবির সভাপতি ও ইস্টার্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এতে ব্যাংকগুলোর বিশেষ কোনো উপকার হবে না। কারণ ব্যাংকগুলোর হাতে অতিরিক্ত ডলার রয়েছে।”
সম্প্রতি আমদানি কমে যাওয়ায় চাহিদা কমেছে বৈদেশিক মুদ্রার। রপ্তানি ও প্রবাসী আয় প্রবাহ ইতিবাচক থাকায় বাড়ছে বৈদেশিক মুদ্রা প্রবাহ। ব্যাংকগুলোতে জমছে চাহিদার অতিরিক্ত বৈদেশিক মুদ্রা।
বর্তমানে দেশে ২১ বিলিয়ন ডলারের বেশি বৈদেশিক মুদ্রার মজুত রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের এ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে প্রায় সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা কিনেছে।
আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে সোমবার প্রতি ডলার ৭৬ টাকা ৬৬ পয়সায় বিক্রি হয়েছে।