ইরাকের প্রধানমন্ত্রী নুরি আল-মালিকি বলেছেন, কারও চাপের মুখে তিনি প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়বেন না। গত শুক্রবার তিনি জানিয়েছেন, তৃতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার চেষ্টা করবেন তিনি। খবর রয়টার্সের।
গত মাসে ইরাকের বড় একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সুন্নিপন্থী জঙ্গিরা। তাদের হামলার মুখে দাঁড়াতেই পারছে না সরকারি বাহিনী। এ অবস্থায় দেশে একটি জাতীয় ঐকমত্যের সরকার গঠনের জন্য দেশে ও দেশের বাইরে থেকে মালিকি সরকারের ওপর চাপ দেওয়া হচ্ছে।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী মালিকির একটি বিবৃতি প্রচার করা হয় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে। এতে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে আমি কোনো অবস্থায় সরে দাঁড়াব না। দেশ এবং দেশের মানুষের স্বার্থ রক্ষায় আমি একজন সৈনিকের মতো লড়ে যাব।’
ইরাকে গত এপ্রিলে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মালিকির দল ও মিত্ররা বেশির ভাগ আসন জয়ী হয়। কিন্তু সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা তারা পায়নি।ফলে দুই দফায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা মালিকিকে এবার সরকার গঠনের জন্য বাইরে থেকে সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
এ অবস্থায় দেশের শিয়া-সুন্নি ও কুর্দিসহ সব গোষ্ঠীর অংশগ্রহণে জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনের জন্য বিভিন্ন পক্ষ থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। গত সপ্তাহে পার্লামেন্টে এ রকম একটি চেষ্টা হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। এতে রাজনৈতিক অচলাবস্থা আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে। হুমকির মুখে পড়ছে দেশের অখণ্ডতা। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে মালিকির সরে না দাঁড়ানোর ঘোষণা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে।
সুন্নি ও কুর্দিদের পাশাপাশি মালিকির নিজের পক্ষের শিয়াদের একটি অংশও তাঁর ক্ষমতা ছাড়ার দাবি তুলেছে। দেশের শীর্ষ শিয়া ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি আল-সিস্তানি গত শুক্রবার বলেছেন, গত সপ্তাহে পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশনে নতুন সরকার গঠনের ব্যাপারে মতৈক্য না হওয়া একটি ‘শোচনীয় ব্যর্থতা’।
এদিকে, লড়াইয়ের মাঠে সরকারি বাহিনীর জন্য কিছুটা উৎসাহিত হওয়ার মতো একটি অগ্রগতি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে তারা তিকরিতে সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের গ্রাম আওজা জঙ্গিদের কাছ থেকে পুনরায় দখলে নিতে সক্ষম হয়েছে। প্রায় এক ঘণ্টার লড়াইয়ের পর গ্রামটি তাদের নিয়ন্ত্রণে আসে।