মানুষের ভাষার উৎপত্তিকে বিজ্ঞানের সবচেয়ে পুরোনো ও বিতর্কিত ধাঁধাগুলোর একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অস্ট্রেলিয়ার একদল গবেষক এবার এ ব্যাপারে একটি তত্ত্বের পক্ষে জোরালো প্রমাণ হাজির করেছেন। তাঁদের মতে, শুরুতে মানুষ হাতের ইশারায় মনের ভাব প্রকাশ করত। আর সেই ইঙ্গিতই ক্রমে ক্রমে পরিবর্তিত হয়ে ভাষায় রূপ নিয়েছে।
পারস্পরিক যোগাযোগের জন্য প্রাণিকুলের মধ্যে মানুষই সবচেয়ে জটিল পদ্ধতি অবলম্বন করে। ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার গবেষক নিকোলাস ফে বলেন, আদি মানুষের কণ্ঠস্বর থেকেই ভাষার উদ্ভব বলে একদল বিজ্ঞানী মনে করেন। আরেক দল মনে করেন, আদি যুগে প্রচলিত ইশারা-ইঙ্গিত বা সাংকেতিক চিহ্ন থেকেই ভাষার ক্রমবিকাশ হয়েছে। তবে সুনির্দিষ্ট প্রমাণের অভাবে অধিকাংশ মানুষেরই ধারণা, কণ্ঠস্বরই ছিল ভাষার আদি উৎস। আর এই ধারণার বিশ্বাসযোগ্যতাও বেশি। কারণ, আজকের যুগে মানুষ কথা বলার মাধ্যমেই পারস্পরিক যোগাযোগ বজায় রাখে।
ভাষা ব্যবহারের শুরু হয়েছিল অন্তত ৩০ হাজার থেকে এক লাখ বছর আগে। গবেষকেরা বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মাতৃভাষা নিয়ে গবেষণা চালান। তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া ৫০ জোড়া ছাত্রছাত্রীকে কোনো ভাষা ছাড়াই যোগাযোগ করতে বলেন। তাঁদের বিভিন্ন শব্দ ও ইশারা অথবা দুটিই ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়। এতে দেখা যায়, তাঁরা বেশ দ্রুত নিজেদের মধ্যে একধরনের নতুন ইশারা ভাষা তৈরি করে সফলভাবে ব্যবহার শুরু করতে সমর্থ হন। এ গবেষণা প্রতিবেদনটি ফ্রন্টিয়ার্স ইন সাইকোলজি সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। সূত্র: সিডনি মর্নিং হেরাল্ড।