স্ত্রীকে হত্যার দায়ে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) সাবেক সহযোগী অধ্যাপক ডা. তোজাম্মেল হোসেন ও তার প্রেমিকা শামসুন্নাহার নার্গিসকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ১ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সোমবার দুপুরে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ মো. আবদুল মজিদ এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় তাদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার পর আসামিদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত তোজাম্মেল ঝালকাঠী জেলার রাজাপুর থানার চারাখালী গ্রামের সেইজুদ্দিনের ছেলে। আর নার্গিসের বাড়ি পিরোজপুর জেলার কাউখালী থানার শিয়ালকাঠি গ্রামে।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৬ জুলাই মিরপুর ২ নম্বর সেক্টরের এ ব্লকের ৫ নম্বর লেনের একটি বাসায় নাজমাকে হাত পাঁ বেধে বটি দিয়ে কুপিয়ে, গরম পানি ঢেলে চোখ তুলে পায়ের রগ কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই মেহেদী হাসান বাদী হয়ে মিরপুর থানার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তের দয়িত্বপ্রাপ্ত তৃতীয় কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক জাকির হোসেন আসামিদের অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে ভিকটিম ফাহমিদা আক্তার নাজমার সাথে ডা. তোজাম্মেল হোসেনের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই স্বামীর পরকীয়ার বিষয়টি নাজমা জানতে পারেন। স্বামীর পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় নাজমাকে বিভিন্ন সময় শারীরীর ও মানসিক নির্যাতন করা হতো মর্মে ২০০০ সালে থানায় একটি জিডিও করেছিলেন তিনি।
রাষ্ট্রপক্ষে সংশ্লিষ্ট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর খোন্দকার আবদুল মান্নান মামলাটি পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, কথিত প্রেমিকা হত্যার ঘটনা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
এছাড়া, অন্যান্য সাক্ষিদের সাক্ষ্যপ্রমানে রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমান করতে সক্ষম হয়েছে। আমরা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যূদন্ড আশা করেছিলাম।