সুবল চন্দ্র দাস কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ থেকে ঃ
নজিরবিহীন অন্তর্দ্বন্দ্ব-নেতৃত্ববিরোধ আর পদে পদে মামলার জালে জড়িয়ে পড়ে সাংগঠনিক শক্তি হারিয়ে ফেলেছে কিশোরগঞ্জ বিএনপি। জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যায়ে এ অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি এমন যে, বর্তমানে কিশোরগঞ্জ বিএনপি পুলিশ নিয়ন্ত্রিত বিএনপি হিসেবেই সমধিক পরিচিতি লাভ করেছে। কেননা পুলিশের সঙ্গে বোঝাপড়া ছাড়া কোনো কর্মসূচিই তারা পালন করতে পারছে না। ঈদের পর আন্দোলন-সংগ্রামের ডাক এলেও এ পরিস্থিতি উত্তরণে কোনো তৎপরতা নেই কিশোরগঞ্জ বিএনপিতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় দেড় যুগ ধরে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপিতে নজিরবিহীন অন্তর্দ্বন্দ্ব ও নেতৃত্ববিরোধ চলে আসছে। আর এ কারণে পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন গ্র“পের নেতাকর্মীরা পৃথক পৃথকভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করে থাকে। হরতাল, রাজপথ-রেলপথ ও নৌপথ অবরোধের মতো সহিংস কর্মসূচিগুলো বিক্ষিপ্তভাবে পালন করতে গিয়ে পদে পদে মামলার জালে জড়িয়ে পড়ে সক্রিয় নেতাকর্মীরা। ইতিমধ্যে দ্রুত বিচার আইনে রুজুকৃত পুলিশের গাড়ি ভাংচুর ও পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর হামলার একটি মামলায় জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ২৮ নেতাকর্মীকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় জেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেলসহ ৮ নেতাকর্মী কিশোরগঞ্জ কারাগারে অন্তরীণ এবং বাকিরা পলাতক রয়েছে। এছাড়াও এসব কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যায়ের দুশতাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেন। এদের অধিকাংশকেই গ্রেফতার ও জেল-জরিমানার হুমকি নিয়ে নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে। উপরন্তু কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির নীতিনির্ধারক ও শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. এম ওসমান ফারুক, জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান প্রমুখ নেতা অধিকাংশ সময়ই এলাকার বাইরে কাটাচ্ছেন।