আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) কর্তৃক ভারতীয় অলিম্পিক কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করার পর সাউথ এশিয়ান গেমসের (এসএ) মতো বন্ধ হয়ে যায় ইন্দো-বাংলাদেশ বাংলা গেমসও। গত ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের পর ভারতীয় অলিম্পিক এসোসিয়েশনের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় আইওসি। এরপর এসএ গেমস ও ইন্দো-বাংলাদেশ গেমস নিয়ে তোড়জোড় শুরু করে বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় প্রায় পাঁচ বছরের খরা কাটিয়ে ইন্দো-বাংলাদেশ বাংলা গেমসের চতুর্থ আসরের আয়োজন হতে যাচ্ছে ঢাকায়। আগামী বছর ১০ই জানুয়ারি কলকাতা ও ঢাকার অ্যাথলেটদের সমন্বয়ে গেমসের চতুর্থ আসর গড়াবে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের (বিওএ) সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মানু বলেন, ‘আগামী বছরের ১০ই জানুয়ারি ঢাকায় দ্বিতীয়বারের মতো ইন্দো-বাংলাদেশ বাংলা গেমসের আয়োজন করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিওএ।’
ভারতীয় অলিম্পিক কমিটি ও বিওএ’র সম্মতিক্রমে পশ্চিমবঙ্গ অলিম্পিক কমিটি ২০০৭ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি কলকাতায় আয়োজন করে দু’দেশের বাংলা ভাষাভাষি অ্যাথলেটদের মৈত্রীর গেমস ইন্দো-বাংলাদেশ বাংলা গেমস। সেবার প্রথম আসরে ৮টি ডিসিপ্লিনের ৬৮টি ইভেন্টের মধ্যে ৩৮টি স্বর্ণ, ৩৪টি রুপা ও ৩২টি ব্রোঞ্জ জিতে সেরা হয়েছিলো পশ্চিমবঙ্গ। বাংলাদেশ পেয়েছিলো ৩০টি স্বর্ণ, ৩৪টি রুপা ও ১৮টি ব্রোঞ্জ। ক্রিকেট ও ফুটবলসহ ১০টি ডিসিপ্লিনের ৬৯টি ইভেন্ট নিয়ে ২০০৮ সালের ২২শে ফেব্রুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় ইন্দো-বাংলাদেশ বাংলা গেমসের দ্বিতীয় আসর। সেবার ৪৫টি স্বর্ণ, ২৯টি রুপা ও ১৮টি ব্রোঞ্জসহ ৯২টি পদক জিতে সেরা হয়েছিলো স্বাগতিক বাংলাদেশ। সফরকারী পশ্চিমবঙ্গ পেয়েছিলো ২৪টি স্বর্ণ, ৪০টি রুপা ও ২৭টি ব্রোঞ্জসহ ৯০টি পদক। সর্বশেষ ২০১০ সালের ২৪শে মার্চ কলকাতায় অনুষ্ঠিত হয়েছিলো ইন্দো-বাংলাদেশ বাংলা গেমসের চতুর্থ আসর। এই আসরে ৩০টি স্বর্ণ, ২৯টি রুপা এবং ৩০টি ব্রোঞ্জপদক জেতে সফরকারী বাংলাদেশ। অন্যদিকে ৩৪টি স্বর্ণ, ২৮টি রুপা ও ২৯টি ব্রোঞ্জ জেতে সেরা হয় স্বাগতিক পশ্চিমবঙ্গ। তবে চুক্তিতে দু’বছর পর পর এই গেমস গড়ানোর কথা থাকলেও চতুর্থ আসরের দেখা মেলেনি গত সাড়ে চার বছরেও। চলতি বছরের শুরুর দিকে ভারতীয় অলিম্পিক কমিটির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে আইওসি। আর এতেই এবার দুই বাংলার সৌহার্দ্যের প্রতীক এই গেমসের জট খুলছে। আগামী বছরের ১০ই জানুয়ারি ইন্দো-বাংলাদেশ বাংলা গেমসের চতুর্থ সংস্করণের আয়োজন করতে যাচ্ছে বিওএ।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, আগের তিন আসরের চেয়ে বেশি সময় অর্থাৎ আট দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হবে এই গেমস। থাকবে নতুন কিছু ডিসিপ্লিন। মানু বলেন, ‘গেমস আয়োজনে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে পশ্চিমবঙ্গ অলিম্পিক কমিটির কর্মকর্তাদের আসার কথা থাকলেও তারা আসেননি। তাই সবকিছু চূড়ান্ত করতে পারছি না। পশ্চিমবঙ্গ থেকে কর্মকর্তারা আসলেই আমরা ডিসিপ্লিন এবং যাবতীয় সবকিছু চূড়ান্ত করে ফেলবো।’ একই সঙ্গে চারবছর পর এসএ গেমসের প্রস্তুতি শুরু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন (বিওএ)। এশিয়ান গেমসের পরই সাউথ এশিয়ান গেমস (এসএ) নিয়ে সভা করার কথা জানিয়েছেন বিওএ’র এই সহ-সভাপতি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে ভারতের দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হবে এসএ গেমসের ১২তম আসর।