গাজায় চারদিকে ফুটছে শত্রুদের ছোড়া বোমা। লাশের পর লাশ পড়ছে। চারদিকে বারুদের গন্ধ। বিধ্বস্ত লোকালয়। মাটির সঙ্গে মিশে গেছে বাড়িঘর। এমন এক পরিস্থিতির মধ্যে এক পিতামাতার ঘরে একসঙ্গে জন্ম নিয়েছে চারটি শিশু। ‘জন্মেই দেখি ক্ষুব্ধ স্বদেশভূমি’ কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্যের এক কথা কয়টি তাদের বেলায় শতভাগ সত্যি। নিরাপদে তারা ভূমিষ্ঠ হলেও এখন পৃথিবী হয়ে উঠেছে এই নবজাতকদের কাছে এক অনিরাপদ আস্তানা হিসেবে। রাফায় ইউনাইটেড আরব হাসপাতালে মা রেহামের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়েছে তারা। এখন তাদের গন্তব্য নিয়ে উদ্বিগ্ন পিতামাতা। এই সন্তানদের নিয়ে তারা এখন দিশাহারা। এ নবজাতকদের নিয়ে তারা এখন যাবেন কোথায়! যে বাড়ি তারা রেখে এসেছিলেন হাসপাতালে তা এখনও টিকে আছে কিনা তা তারা জানেন না। টিকে থাকলেও তা তো শতভাগ অনিরাপদ। যে কোন সময় ইসরাইলের বোমা আঘাত করতে পারে। পুরো পরিবারকে হত্যা করতে পারে তারা। এমনটা ভেবে গা শিউরে উঠছে স্ত্রী রেহাম ও তার স্বামী আলী আল আরজাহ’র। আলী আল আরজাহ বলছেন, একটি সন্তানের পিতা হতে আমি ৫টি বছর অপেক্ষা করেছি। সব রকমের চিকিৎসা করিয়েছি। কিন্তু কিছুতেই কাজ হচ্ছিল না। সব চেষ্টা যখন ব্যর্থ হলো তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে, কৃত্রিম পদ্ধতিতে (ভাইট্রো ফার্টিলাইজেশন) আমরা সন্তান নেব। আল্লাহ আমাদের ফরিয়াদ শুনেছেন। আমাদেরকে একটি বা দু’টি সন্তান নয়- একসঙ্গে দিয়েছেন চারটি সন্তান। এখন ওদেরকে আমি কোথায় আশ্রয় দেব! কোন ঘরে নিয়ে তুলব! আলী আল আরজাহ’র পিতা মেফলেহ আল আরজাহ বলেন, যখন ইসরাইলের বোমা হামলা শুরু হয় তখন তার পরিবার সবকিছু ফেলে পালিয়ে এসেছে। এখন তার বাড়ির কি অবস্থা তা জানেন না। তিনি বলেন, আমরা আশা করি এই যুদ্ধ শিগগিরই শেষ হবে। তারপরই আমরা বাড়ি ফিরতে পারব। কিন্তু বাস্তবে তার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।