নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার বিসিক শিল্পনগর এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় একটি বাসের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হলে দুটি বাসেই আগুন ধরে যায়। এ দুর্ঘটনায় আটজন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আহত হয়েছেন ৫০ জন।
নিহত লোকজনের মধ্যে তাত্ক্ষণিকভাবে পাঁচজনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহনাজ বেগম (২৬), নরসিংদীর চরমধুয়া গ্রামের চাঁন মিয়া (৪৫), নূরজাহান বেগম (৪০), মজলু মিয়া (৩৫) ও নাদিরা বেগম (১০) । ঢাকায় নেওয়ার পর আবদুল হান্নান নামে একজন মারা যান। কিন্তু তাত্ক্ষণিকভাবে তাঁর ঠিকানা জানা যায়নি।
নরসিংদীর ছয়টি লাশের মধ্যে মজলু মিয়া, নাদিরা বেগম ও শাহনাজ বেগমের লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়া পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নরসিংদী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কামাল হোসেন বলেন, লাশগুলো যথাযথ পরিচয় দিয়ে না নিলে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করা হবে। তিনি বলেন, নরসিংদী জেলা প্রশাসন সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ছাড়াও বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে উন্নত চিকিত্সার জন্য আহত লোকজনকে ঢাকায় পাঠিয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সিলেট থেকে ঢাকাগামী সোহাগ পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাস বেপরোয়া গতিতে চলছিল। বাসটি বিসিক শিল্প নগরী এলাকায় পৌঁছালে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশাকে পাশ কাটানোর সময় বিপরীত দিক থেকে আসা মেঘালয় পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় একটি বাসের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হলে দুটি বাসেই আগুন লেগে যায়। এতে ঘটনাস্থলে অগ্নিদগ্ধ হয়ে তিনজন ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও তিনজন মারা যায়। আহতদের নরসিংদী জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। খবর পেয়ে নরসিংদী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
দুর্ঘটনার পর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে দূরপাল্লার বাস যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সন্ধ্যা ছয়টার দিকে দুর্ঘটনা কবলিত বাস দুটি উদ্ধার করে সরিয়ে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ধীর গতিতে যান চলাচল করছিল। এতে ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
খবর পেয়ে নরসিংদী পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোরশেদ জামান নরসিংদী জেলা হাসপাতালে হতাহতদের দেখতে যান। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের ছয়জন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নরসিংদী জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোরশেদ জামান ও পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, আহতদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।