(পূর্ব প্রকাশের পর)………………….
মাসটেকটমির পরে···
অপারেশনের পর রোগীকে পোস্ট অপারেটিভ রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। জ্ঞান ফিরে এলে শরীরে ঠান্ডা বোধ হতে পারে। অজ্ঞান করার সময় গলায় যে টিউব বসানো হয়, তার জন্য গলায় ব্যথা হতে পারে। কয়েক ঘণ্টা তন্দ্রাচ্ছন্ন (আধো ঘুম আধো জাগরণ) ভাব থাকে।অপারেশন যা-ই হোক, প্রতিটি মানুষ অপারেশনের পরপরই তার প্রিয় মুখ দেখতে চায়। আ
পনার কিছু জানতে ইচ্ছে করলে সার্জনকে জিজ্ঞেস করতে পারেন এবং প্রিয়জনকে দেখতে চাইলে তাকে আনার জন্য অনুমতি নিয়ে দেখা করতে পারেন।
মাসটেকটমির পর প্রায় সব রোগীকে দু-এক রাত হাসপাতালে থাকতে হয়। কিন্তু মাসটেকটমির সঙ্গে স্তনের পুনর্গঠন অপারেশন হলে আরও বেশি দিন হাসপাতালে থাকতে হয়।
অপারেশনের পর একেকজন একেকভাবে তার প্রতিক্রিয়া দেখায়। অপারেশনের আগে যে রকম ভয় ভয় ভাব থাকে, অপারেশনের পর তা অনেকটা দূর হয়ে যায়। অনেকে স্বাভাবিক খাওয়াদাওয়া করতে সক্ষম হয় এবং সুস্থ হয়ে ওঠে।
বাড়ি ফিরে এলে শারীরিকভাবে হয়তো কিছুদিনের জন্য দুর্বলতা থাকতে পারে। তা অল্প দিনেই সেরে যায়।কারণ অ্যানেসথেসিয়া (অজ্ঞান) এবং একটি বড় অপারেশনের পর ক্লান্তি বোধ হওয়া বা দুর্বলতা হওয়াটাই স্বাভাবিক।
অপারেশনের স্থান না শুকানো পর্যন্ত সারা শরীরে পানি ঢেলে গোসল করা যাবে না। তবে মাথায় পানি দেওয়া যাবে, ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মোছা যাবে (স্পঞ্জ বাথ) কিন্তু অপারেশনের স্থানে পানি লাগানো যাবে না।
অপারেশনের পরপরই সংলগ্ন বাহুর নড়াচড়ায় খুব অসুবিধা হয়। কারণ অপারেশনের ক্ষত থাকায় বুক ও বাহুর মাংসপেশিতে জড়তা থাকে। বাহুর নড়াচড়া স্বাভাবিক করার জন্য অপারেশনের পর থেকেই চেষ্টা করতে হবে।
অনেক মহিলাই অপারেশনের ধকল কাটিয়ে ওঠার পরপরই কাজে যোগদান করে থাকেন। এমনকি কর্মরত অবস্থায় রেডিওথেরাপি ও কেমোথেরাপি চিকিৎসা চালিয়ে যান।
তবে আপনার কাজ যদি এমন হয় যে হাত দিয়ে অনেক ভারী জিনিস ওঠাতে হবে বা টানাটানি করতে হবে, সে ক্ষেত্রে হাতের জোর সম্পূর্ণ ফিরে না আসা পর্যন্ত সাময়িকভাবে ওই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে অথবা কাজ পরিবর্তন করে নিতে হবে। বগলের লসিকাগ্রন্থি কেটে (এক্সিলারি লিম্ফনোড ডিসেকশন) বের করা হলে, বগলের নিচে এবং বাহুর ভেতরের দিকে বোধশক্তি কিছুটা লোপ পায়। কারণ অপারেশনের সময় ওই এলাকার স্মায়ুতে (নার্ভ) আঘাত হতে পারে। যদি এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে, তাহলে বগলের নিচে শেভ করার সময় খুবই সতর্ক হতে হবে।
এ রকম অবশ বোধ কয়েক মাস থেকে কয়েক বছরের মধ্যেই সেরে যেতে পারে। কিন্তু আগের মতো স্বাভাবিক বোধশক্তি নাও ফিরে আসতে পারে। বগলের লসিকাগ্রন্থি অপারেশনের আরেকটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলো বাহু ফুলে যাওয়া বা আর্ম ইডিমা। এর কারণ রেডিওথেরাপি চিকিৎসা বা অপারেশনের সময় লিম্ফ-নালিতে কোনো ক্ষত হওয়া। ফলে লিম্প-প্রবাহে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে হাত ফুলে ওঠে।