কটিয়াদী ,(কিশোরগঞ্জ)থেকে সুবল চন্দ্র দাস ঃ
জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার পিটুয়া গ্রামের ইসলাম মিয়ার স্ত্রী রীনা আক্তার নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। শারীরিক অবস্থা হঠাৎ খারাপ হলে তাকে করিমগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে দ্রুত কিশোরগঞ্জ সদরে ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানো হয়। কারণ করিমগঞ্জ হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ বন্ধ থাকায় চিকিৎসকসহ ওই বিভাগে প্রয়োজনীয় জনবল নেই। হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ কার্যত অচল থাকায় প্রতিদিন করিমগঞ্জ ও আশপাশের এলাকার অসংখ্য প্রসূতি রোগীকে রীনা আক্তারের মতো চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। অথচ ৫০ শয্যার করিমগঞ্জ মডেল হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে রয়েছে আধুনিক অপারেশন থিয়েটার। অবেদন (অজ্ঞান করার) ও অস্ত্রোপচারের যাবতীয় যন্ত্রপাতি অযতœ-অবহেলায় পড়ে আছে। প্রায় ৮ বছর ধরে কোটি টাকায় নির্মিত প্রসূতি বিভাগের সেবা কার্যক্রম ও সিজার অপারেশন বন্ধ হয়ে আছে। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, করিমগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে হাওরের কয়েকটি উপজেলার সহজ যোগাযোগ রয়েছে। সার্বিক দিক বিবেচনা করে ২০০৫-০৬ অর্থবছরে কোটি টাকা ব্যয়ে অপারেশন থিয়েটার, অস্ত্রোপচারের যন্ত্রপাতিসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করা হয়। পরে ২০০৭ সালের শেষ দিকে সার্জন, অবেদনবিদসহ জনবল নিয়োগ দেওয়ার পর অক্টোবর থেকে প্রসূতি ওয়ার্ড ও অপারেশন থিয়েটার চালু করা হয়। অপারেশন থিয়েটার চালু হওয়ার পর হাওরাঞ্চলসহ বৃহৎ এলাকার প্রসূতি রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা অনেকাংশ নিশ্চিত হয়। ৯ মাস চলার পর ২০০৮ সালের জুনে গাইনি সার্জন অন্যত্র বদলি হয়ে যান। এর পর থেকে অপারেশন কার্যত্রম বন্ধ হয়ে পড়ে। অপারেশন বন্ধ থাকায় অন্যান্য চিকিৎসক ও কর্মচারীও করিমগঞ্জ থেকে অন্যত্র বদলি হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে প্রসূতি চিকিৎসা বন্ধ হয়ে আছে। উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম সুমনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি জানান, সার্জন না থাকায় প্রতিদিন মুমূর্ষু প্রসূতিদের যেতে হচ্ছে জেলা সদরে। হাসপাতালের স্বাস্থ্য প্রশাসক খায়রুল আলম সত্যতা স্বীকার করে জানান, এ ব্যাপারে সিভিল সার্জনকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। সিভিল সার্জন মৃণাল কান্তি পণ্ডিত জানান, এসব বিষয় ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষ অবগত আছেন। তারা প্রয়োজনীয় জনবল পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে প্রসূতি ওয়ার্ড চালু হয়ে যাবে।