আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফকে ‘মিথ্যাবাদী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, “আমি জানতাম সৈয়দ আশরাফ একজন ভদ্র ও সত্যবাদী লোক। কিন্তু তিনি যে একজন মিথ্যাবাদী তা আমার জানা ছিল না।”
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক স্মরণসভায় এ কথা বলেন তিনি। বিএনপির সাবেক মহাসচিব ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদারের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণসভাটি আয়োজন করে ব্যারিস্টার আবদুস সালাম তালুকদার স্মৃতি সংসদ।
মির্জা ফখরুল বলেন, “তিনি (আশরাফ) বলছেন, আমার সাথে নাকি তার নিয়মিত কথা হয়। আসলে আমার সাথে তার মাত্র তিন দিন কথা হয়েছে, তাও ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে। তার সাথে কথা হলে দেশ ও জনগণের ভালোই হতো। কিন্তু আওয়ামী লীগ জনগণের ভালো চায় না।”
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের সমালোচনা করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, “তিনি খুব সু্ন্দর সুন্দর কথা বলতে পারেন। তিনি বিভিন্ন কথা বলে বিএনপির নেতাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার চেষ্টাও করেছেন। কিন্তু সুন্দর কথা বলেও তার মন্ত্রিত্ব টেকাতে পারেননি।”
আওয়ামী লীগ আবার দেশকে একদলীয় শাসনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, “জনগণ যে রক্তের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক দেশ গড়েছে, তা আবার তারা একদলীয় করতে সব কার্য্ক্রম সম্পূর্ণ করে ফেলেছে।”
এ সময়ে বিএনপির সাবেক মহাসচিব ব্যারিস্টার আবদুস সালামের দিকে তাকাতে হবে বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, “তার আদর্শ নিয়ে আন্দোলন করে ফ্যাসিবাদী সরকারকে প্রতিহত ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।”
সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস সরকারের উদ্দেশে বলেন, ” বিএনপি আন্দোলন করতে পারে না বলে উস্কানি দেবেন না। রাজনীতিকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় চলতে দিন। সময় আসলে জনগণ বুঝিয়ে দেবে গণআন্দোলন কাকে বলে।”
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চায়। তাই তারা স্বাধীন মত প্রকাশের স্থানগুলো বিভিন্নভাবে দখল করে ফেলেছে। এমনকি গণ-আন্দোলন ঠেকাতে তারা বিভিন্নভাবে বাধা দিচ্ছে।” তবে সময় হলেই জনগণ সরকারকে গণ-অসন্তোষ কী তা শেখাবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।”
সরকারের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, “নির্যাতন-নিপীড়ন করে নমরুদ ফেরাউন টিকতে পারেনি। আওয়ামী লীগও পারবে না। আওয়ামী সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের কথা শুনে মনে হয় তারা আজীবন ক্ষমতায় থাকবেন। ভাব দেখে মনে হয় কিয়ামত পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চায় তারা।”
আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক এম এ মান্নান, যুগ্ম-মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনু, প্রচার সম্পাদক জয়নাল আবদিন ফারুক, যুবদলের সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সালাম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, শিল্প সম্পাদক মোশাররফ হোসেন ও সহ-ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।