যখন কেউ আপনাকে জিজ্ঞেশা করে “কেমন আছেন?” তার প্রতি-উত্তর কি থাকে? যে কোন সামাজিক আনুষ্ঠানে আমাদের এই প্রশ্নের সম্মুখিন হতে হয়; চেনা আর চেনা বা আধিক চেনা –পরিচিত মানুষের কাছ থেকে। কিন্তু কখন ভেবাছেন কি এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর কি হবে? অনেকেই বলে “চলে যাচ্ছে” অথবা “কাটছে মন্দ না”। এই সব গুলোর উত্তর থেকেই কিন্তু আপনার মনের অবস্থা, ব্যক্তিত্ত, এবং জীবন যাত্রার মান বুঝা যায়। অতএব যে কোন সামাজিক আনুষ্ঠানে এই সব সামাজিক প্রশ্ন গুলোর উত্তর দিন্ম খানিক্তা সচেতনতার সাথে। যদি কেমন আছির পরিপ্রেক্ষিতে উত্তর দেওয়া হয় “আমি প্রচণ্ড ব্যস্ততার মাঝে আছি” তাহলে প্রশ্নকর্তা মনে করে নেবেন, আপনি আপনার কর্ম জীবন নিয়ে এতটাই ব্যস্ত যে ব্যক্তিগত বা সামাজিক জীবন নিয়ে আর তেমন কিছু বাকি নেই। আর যদি উত্তরটা হয় “কেটে যাচ্ছে” আথবা “চলছে কোনরকম” তাহলে অপর পক্ষ বুঝে নেবে আপনি কোন বিষয় নিয়ে যার পরনাই অশান্তিতে আছেন। যদিও আপনি তা নন; তবুও আপনার সামান্য কয়েকটা শব্দ চয়নের মাঝ দিয়ে প্রশ্নকর্তা কে একটা অপর্যাপ্ত আথবা আংশিক অসত্য তথ্য আপনি কেন দেবেন? যদি আপনার উত্তর টি এমন হয় “আমি ভাল আছি সবকিছু মিলিয়ে” তবে বুঝা যাবে আপনি আপনার ব্যক্তিগত এবং কর্ম জীবন সব কিছুর মাঝেই একটা সামঞ্জশতা বজায়ে চলার চেষ্টা করছেন এবং সেটা সত্যি খুব জুরুরি।
স্বাচ্ছন্দ্য বনাম আমাদের চাওয়াঃ
জীবনের গতীময়তাকে সবসময় নিজের লাগামের মাঝে রাখাটা খুবি কঠিন এক ব্যাপার। সময় এখন অনেকটাই পালটে গেছে। কর্ম জীবন, ব্যক্তি জীবন আর পারিবারিক জীবনের মাঝে তাই সমন্বয় করাটা খুব জুরুরি।
আপনার অফিস এর বস এবং ক্ষেত্র বিশেষে সহকর্মীরা চাইবেন, আপনি কাজে আর একটু বেশি সময় দিন। আপনার পরিবারের সদস্যরা আপনার কাছ থেকে আর একটু বেশি মনোযোগ এবং সময় প্রত্যাশা করছএ এবং এর পাশাপাশি, আপনার ভারচুয়াল ও ননভারচুয়াল বন্ধু দেরও কিন্তু আপনার কাছ থেকে প্রত্যাশা কম নয়। এতগুলো প্রত্যাশার চাপ মিটাতে যেয়ে আপনি নিজেই কখন যে মানুসিক চপে ভুগছেন তা হয়ত বুঝতে পারছেন না। আর তাই, নিজেকে প্রশান্তিতে রাখতে আমাদের প্রয়োজন মানুসিক প্রশান্তির দিকে নজরদারি করা।
যেকোনো সম্পর্কতেই প্রত্যাশা বিদ্যমান। আপনার পারিপারশিক সম্পর্ক গুলোর ক্ষেত্রে আপনি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমন্বয় সাধন করুন। সবাইকে সমান গুরুত্ব দিতে গেলে, আপরনাই কারকেই খুশি করা সম্ভব হয় না।
পারিবারিক শান্তি এবং স্থিতিশলতার দিকে লক্ষ করতে যেয়ে যেন আপনি আপনার নিজের মতামত প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ না হয়ে পরেন, সে বিষয়ে সচেতন হন।
কর্মজীবন আমাদের ব্যক্তিগত জীবন কে প্রভাবিত করেই। আর তাই কর্মজীবনের সাফল্য, ব্যক্তি জীবনের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য প্রয়োজন। তার মানে এই না, পরিবার কে গুরুত্ব না দিয়ে, কেবল অর্থ, যশ আর প্রতিপত্তির মহে আটকে যাবেন। যদি পরিবারে শান্তি, স্থিতিশলতা বজায়া না থাকে তবে এই অর্থ, যশ আর প্রতিপত্তির কোন ভুমিকাই থাকবে না। তাই কর্ম জীবনের জন্য একটি নির্দিষ্ট লক্ষ স্থির করে রাখুন, সাফল্য আশব্যই। অতি সাফল্য যেন আপনার মানুসিক চাপ ও শারীরিক ক্ষতির কারন না হয়ে দাড়ায়।
সহকর্মী এবং বস এর প্রত্যাশা পুরনে কৌশলী হন। আপনি আপনার মাত্রা বজায়ে রাখুন যে কোন কাজে। নিজের কর্মদক্ষতা দিয়ে নিজের যোগ্যতা প্রমান করুন, অপ্রয়জনীয় সময় বা আজাচিত কথা দেয়ে নয়।
সমাজ, পরিবার আর কর্মজীবন এ সবকিছুর পরেও মানুসিক প্রশান্তির জন্য প্রয়োজন কিছুটা একান্ত ব্যক্তিগত সময়। নিজেকে সময় দিন। আপনার প্রশান্ত মন আপনার সব সাফল্যের যাদুকাঠি।
– সামিয়া কালাম
প্রডিউসার এবং RJ
Cityfm96