টাঙ্গাইলের আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হত্যায় এলাকার প্রভাবশালী খান পরিবারের হাত থাকার আলামত ভেসে উঠছে তদন্তে। এই পরিবারের সাংসদ আমানুর রহমান এবং তাঁর তিন ভাই হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে দুই আসামি জবানবন্দি দিয়েছেন। এদিকে মিরপুরের কালশীর বিহারি বস্তিতে আগুন দিয়ে একই পরিবারের ছয় সদস্য হত্যার বিচারপ্রার্থী হতভাগ্য জীবিত শেষ সদস্যকে বাসচাপা দিয়ে হত্যায় মিরপুরের সাংসদ ইলিয়াস মোল্লাহর লোকজন জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। বড় আকারের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বিভিন্ন এলাকার সাংসদদের নাম বেশি করে আসছে! গণতন্ত্র ও জননিরাপত্তার জন্য এটা গুরুতর অশনিসংকেত।
নারায়ণগঞ্জে ত্বকী হত্যা মামলা, খুলনার বিথার হত্যা মামলা, নরসিংদীর মেয়র লোকমানসহ আলোচিত অনেকগুলো হত্যা মামলার তদন্তে বেশ কয়েকজন সাংসদ কিংবা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের নাম এসেছে। হত্যায় অভিযুক্তরা যত বেশি প্রভাবশালী মামলার গতি তত বেশি ধীর অথবা জটিল হতে দেখা যায়। এসব ঘটনায় জনপ্রতিনিধি হিসেবে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিদের সঙ্গে অপরাধের জালের ঘনিষ্ঠতাই ধরা পড়ে। মিরপুরের ইয়াছিন আলীর মৃত্যু ঘিরেও এ রকম সন্দেহ ঘনীভূত হচ্ছে। ছয় হত্যার আসামিদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতির সময় বাসের ধাক্কায় ইয়াছিনের আকস্মিক মৃত্যুকে হালকাভাবে নেওয়ার উপায় নেই।
হত্যায় সাংসদ, মেয়রের হাত!ফারুক হত্যার আসামি সাংসদ ও মেয়র পরস্পরের ভাই। এদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা ছিল বা আছে। কিছু মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে, কিছু মামলা রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করা হয়েছে। যত বড় অপরাধী, তত বেশি সুরক্ষার এই বন্দোবস্ত অপরাধের মাত্রাও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকায় পুলিশের পক্ষেও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন। আমরা আশা করব, টাঙ্গাইলের সাংসদ আমানুর রহমান খান ও তাঁর ভাইদের বিষয়ে তদন্তে পুলিশ নিরপেক্ষতার পরিচয় দেবে। একই সঙ্গে বিহারিপল্লির ঘাতকদের চিহ্নিত করা এবং ইয়াছিনের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করাও জরুরি।