জাতিসংঘের ৬৯তম অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রাতে নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন। তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি এই প্রথম সর্বোচ্চ সংখ্যক বিশ্বনেতার উপস্থিতিতে কোন ফোরামে অংশ নিচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিষয়টিতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে, কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো থেকে দক্ষদের সঙ্গে নিয়েই নিউইয়র্ক যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। তার সফরসঙ্গীদের মধ্যে থাকছেন: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, বন ও পরিবেশমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম।
প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম ও অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মশউর রহমান ছাড়াও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপু মনি, সদস্য কাজী মোহাম্মদ ফখরুল ও মাহজাবিন খালেদ এই সফরে রয়েছেন।
ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলে থাকছেন এফবিসিসআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, বিজিএমইএ সভাপতি মো. আতিকুল ইসলামসহ ৭৫ জন।
এছাড়া জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সাংসদ নাজমুল হক প্রধান, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, গণতন্ত্রী পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) আহ্বায়ক মো. রেজাউর রশীদ খান, গণ আজাদী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস কে শিকদার, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জনকণ্ঠের সম্পাদক আতিকুল্লাহ খান মাসুদ, বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের কন্ট্রোলার অফ অ্যাকাউন্টস সিদ্দিক হোসেন চৌধুরী, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম এ কামরুল হাসান খান, আওয়ামী লীগের বিভাগীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক মশিউর রহমান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন।
আরো আছেন ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক খায়রুল বাশার মজুমদার, রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রেজাউল করিম রাজু, কক্সবাজারের জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান কানিজ ফাতেমা আহমেদ, ইন্সটিটিউট অফ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের সভাপতি এ কে এম এ হামিদ, অনিল দাস গুপ্ত এবং মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম আব্দুল মোতালেব।
গণমাধ্যমের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের মধ্যে ইত্তেফাকের নগর সম্পাদক আবুল খায়ের ও জ্যেষ্ঠ উপ-সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, চ্যানেল আইয়ের বার্তা সম্পাদক প্রণব কুমার সাহা, জনকন্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি দেবাশীষ চক্রবর্তী, নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, বরিশাল প্রেস ক্লাবের সভাপতি কাজী আবুল কালাম আজাদ, সময় টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ জোবায়ের, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব আবদুল জলিল ভুইঞা এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আলতাফ মাহমুদও রয়েছেন।
নিউইয়র্ক পৌঁছানোর পর যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে আবদুল মোমেন প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন। নিউইয়র্কে তিনি সফরসঙ্গীদের নিয়ে ম্যানহাটনের হোটেল গ্র্যান্ড হায়াতে অবস্থান করবেন।
জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি শুরু হবে ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ মহাসচিবের আহ্বানে অনুষ্ঠেয় জলবায়ূ সম্মেলন ২০১৪ এ অংশ নেওয়ার মধ্য দিয়ে।
২৪ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে সাধারণ অধিবেশনের উচ্চ পর্যায়ের বিতর্ক শুরু হবে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ ২৭ সেপ্টেম্বর। বরাবরের মতো এবছরও বাংলায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কাতারের আমীর তামিম বিন মোহাম্মদ আল থানি, নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী মিজ এরনা সলবার্গ, বেলারুসের প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিয়াসনিকোভিচ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী সুশীল কৈরালার সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করবেন।
এছাড়া ২৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী বৈশ্বিক শিক্ষাবিষয়ক বৈঠকে বক্তব্য দেবেন। ২৬ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে আয়োজিত শান্তিরক্ষা বিষয়ক সম্মেলনে তিনি যৌথ সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন। একই দিনে তিনি জাতিসংঘে বাংলাদেশের ৪০ বছর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানেও বক্তব্য দেবেন। ২৭ সেপ্টেম্বর ম্যানহাটনের সেন্ট্রাল পার্কে গ্লোবাল পোভার্টি প্রোজেক্ট আয়োজিত গ্লোবাল সিটিজেন ফেস্টিভালে অংশ নেনবেন প্রধানমন্ত্রী।
২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনের অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান এবং ২৩ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ফার্স্টলেডি মিশেল ওবামার দেওয়া অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
২৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক ছাড়ার পর ৩০ সেপ্টেম্বর ও ১ অক্টোবর লন্ডনে ২ দিনের যাত্রাবিরতি করে ২ অক্টোবর সকালে দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।