‘২০ দলীয় জোট অটুট আছে’ বলে দাবি করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেছেন, এ জোট থেকে একটি দলও বেরিয়ে যায়নি। বাংলাদেশের অনেক মানুষই লোভী। আমাদের দলের অনেক লোকও লোভী। লোভ ও প্রলোভনে দুই-একজন চলে যেতে পারে। এতে জোটের কোন সমস্যা হবে না। জোট ভাঙেনি। জনগণের আন্দোলনের স্রোতে খড়কুটোর মতো ভেসে যাবে এ অবৈধ সরকার। জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী বাস্তুহারা দলের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও জাতীয় সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। লোভী নেতাদের উদ্দেশ তিনি বলেন, এরা আদর্শ বিচ্যুত। মূল স্রোত থেকে এরা হারিয়ে যায়। তবে মূল স্রোত কখনও হারায় না। যারা চলে গেছে তারাই একসময় হারিয়ে যাবে। এতে মূল স্রোতের কোন ক্ষতি হবে না। মির্জা আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। তারা ২০ দলীয় জোট ভাঙার ষড়যন্ত্র করছে। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র হত্যা করে জনগণের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। তারা গণতন্ত্রের ধার ধারে না। এখন কেউ গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বললেই মামলা দেয়। বিরোধীমতের লোকদের সভা-সমাবেশ করতে দেয় না। বর্তমান সরকার তাদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার জন্য এসব করছে। তিনি বলেন, গণতন্ত্র রক্ষায় ১৯৭১ সালের মতো ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, গণতন্ত্র হত্যার দায়ে এ দেশের মানুষ একদিন আপনাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে। মির্জা আলমগীর বলেন, স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে সব ভাষায় কথা বলেন শেখ হাসিনা তা রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। আওয়ামী লীগের হাইব্রিড নেতা বলেছেন, খালেদা জিয়াকে পাকিস্তানে যেতে হবে। খালেদা জিয়া দেশ ছেড়ে যায়নি, আপনাদের নেত্রী দেশ ছেড়ে গিয়েছিলেন। সমপ্রচার নীতিমালার সমালোচনা করে তিনি বলেন, সাংবাদিকরা যেন সত্য কথা না লিখতে পারে সে জন্য জাতীয় সমপ্রচার নীতিমালা করা হয়েছে। সরকার সমপ্রচার ভীতি তৈরি করেছে। আজকে মিডিয়ার মালিকদের দিয়ে গণমাধ্যমগুলোতে গোয়েন্দা বসিয়ে সত্য কথা বলতে দেয়া হচ্ছে না। বিচারকদের অভিশংসন আইন প্রসঙ্গে মির্জা আলমগীর বলেন, বিচার ব্যবস্থায়ও যেন তাদের কথায় চলে সে জন্য বিচারপতিদের অভিশংসন ক্ষমতা সংসদের হাতে নেয়া হয়েছে। বিচারকদের অভিশংসন আইন সংসদে পাস করেছেন। এই সংসদ তো আওয়ামী লীগের ফোরাম। সংসদে যাওয়া মানে আওয়ামী লীগের কাছে যাওয়া। এ ব্যবস্থা গণতন্ত্রের কোন জায়গায় লেখা আছে? সংগঠনের আহ্বায়ক শরীফ হাফিজুর রহমান টিপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল মান্নান, যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলমসহ সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন। সভাপতির বক্তব্যের সময় শরীফ হাফিজুর রহমান নিজেকে সভাপতি ও বর্তমানে সদস্য সচিব খন্দকার অহিদুল ইসলাম বাদলকে সাধারণ সম্পাদক করে অন্য পাঁচ সদস্যের নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করেন। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এমএ হান্নান, আসাদুজ্জামান, নুর আলম এবং মীর আব্দুল হালিম। এ সময় তিনি বলেন, এখন পাঁচ জনের নাম ঘোষণা করা হলো। পরবর্তী সময় বাকি সবার নাম ঘোষণা করা হবে।