২০১৪ সালের বাজে পারফরমেন্সের পর থেকে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জাতীয় দলে আমূল পরিবর্তনের কথা বলে আসছেন। তবে সেই পরিবর্তনটি তিনি চান ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের পর। এরই মধ্যে টানা লাগামহীন বাজে পারফমেন্সের কারণে তিন ফরমেটে ভিন্ন্ন ভিন্ন অধিনায়কের কথাই আলোচনার অন্যতম বিষয়। আজ বিসিবি’র কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় অধিনায়ক নিয়ে বড় একটি সিদ্ধান্ত হবে বলেই তিনি গতকাল সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন। তার কথোপকথনের মূল অংশগুলো তুলে ধরা হলো- 
রিপোর্টের উপর আলোচনা
সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে খারাপ করা নিয়ে বেশকিছু রিপোর্ট আমাদের হাতে এসেছে। কোচ আমাদের একটি রিপোর্ট দিয়েছেন। ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির আকরাম খান একটি রিপোর্ট  দেবেন। এছাড়া নাইমুর রহমান দুর্জয়ের কাছ থেকেও একটি রিপোর্ট পাব। সবার মতামত নিয়ে আলোচনা করেই আমরা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করবো। সেখানে অধিনায়ক প্রসঙ্গেও আলোচনা হবে।
আচরণগত পরিবর্তন
দলের কিছু আচরণগত সমস্যা ছিল কিন্তু আমি মনে করি না এখন তা বড় সমস্যা। এরই মধ্যে বেশ পরির্বতন হয়েছে। এখন বড় সমস্যা হলো দলীয় পারফরমেন্স। যেমন মুশফিক যেদিন সেঞ্চুরি করলো সেদিন মুমিনুল আর দলের বাকিরা যদি ভাল করতো তাহলে ফলাফল অন্যরকম হতো। আমাদের এখন টিম ওয়ার্কটাই দরকার। তাহলে আমরা যে কোন খেলায় ভাল করতে পারবো।
বিশ্বকাপের পর আমূল পরিবর্তন
সামনেই আমাদের বিশ্বকাপ। এই মুহূর্তে দলে বড় পরিবর্তন বিপজ্জনক। কারণ অস্ট্রেলিয়াতে যে কন্ডিশন সেখানে অনভিজ্ঞ ক্রিকেটার নিয়ে ভাল করা সম্ভব হবে না। তবে দলে যে নতুনরা আসছে না তা নয়। এরই মধ্যে ‘এ’ দলে বেশ ক’জন নতুন মুখ এসেছে যাদের নাম আগে শোনা যায়নি। তবে এটি বলতে পারি ২০১৫ সালের বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশ দলের আমূল পরিবর্তন হবে।
তিন ফরমেটে তিন অধিনায়ক
আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আমাদের তিনটি ফরমেটে আলাদা তিনটি দল দরকার। কারণ একই ক্রিকেটার দিয়ে আমরা টি-টোয়েন্টি, ওয়ানডে ও টেস্ট খেলাচ্ছি। দেখা যায় যদি তামিম, বিজয় টি-টোয়েন্টিতে একটি বল ব্লক করে তাহলে বলি এটি ওরা কি করলো? আবার ওরা যদি টেস্টে মারতে যায় আমরাই বলি এভাবে খেলে কেন? এসব কথা ভেবেই আলাদা দল প্রয়োজন। আলাদা অধিনায়কও দরকার। কিন্তু আমাদের তিনটা দল করার মতো এত ক্রিকেটার এখন নেই। তাই আপাতত আলাদা অধিনায়কের কথা ভাবছি।
মুশফিককে কিছু ছাড় দিতে হবে
পারফরমেন্সের ভিত্তিতে মুশফিক এখন বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান। কিন্তু তার ওপর ভীষণ চাপই হয়ে যাচ্ছে। যেমন তাকে উইকেট কিপিং করতে হচ্ছে, ব্যাটিং করতে হচ্ছে আবার তিন ফরমেটেই অধিনায়ক হিসেবে চাপ নিতে হচ্ছে। তাই আমরা মনে করি তাকে কিছু বিষয়ে অন্তত ছাড় দেয়া দরকার। যে কোন একটি ফরমেটে তার অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেয়া দরকার। এটি তার জন্যই ভাল হবে। কোন ফরমেটটি তাকে দেয়া হবে তা এখনও ঠিক হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।  
সব কমিটিতে পরিবর্তন হবে
কমিটিগুলোর দায়িত্ব দিয়েছি আকরাম, সুজন, দুর্জয়দের। কিন্তু এগুলোতো তাদের কমিটি না। এগুলো বিসিবি’র কমিটি। আমরা ঠিক করে রেখেছি যদি কোন সমস্যা থাকে সেখানেও পরিবর্তন হওয়া উচিত। আর  জিম্বাবুয়ে সিরিজের পর সব কমিটিতেই পরিবর্তন আসবে।
স্থায়ী ম্যানেজার
যদিও ম্যানেজার হিসেবে সাবেক ক্রিকেটাররাই প্রাধান্য পায়। কিন্তু এবার আমরা ভাবছি যদি অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা নিয়োগ করা যায় কিনা। আমরা নিয়োগ দেবো ইন্টারভিউর মাধ্যমে সবকিছু দেখে যোগ্যতা অনুসারে।
সৌরভের আমন্ত্রণ
কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সের ১৫০ বছর পূর্তিতে সৌরভ গাঙ্গুলি একটি দল পাঠানোর অনুরোধ করেছে। সেই সময় প্রিমিয়ার লীগ, জিম্বাবুয়ে সিরিজ চলবে। তাই দল পাঠানো খুবই কঠিন। দেখি ক্লাবগুলোর সঙ্গে কথা বলে একটি দল পাঠানো যায় কিনা।