কাগজে-কলমে গ্রীষ্ম পেরিয়ে গেলেও ঋতুটির প্রভাব রয়ে গেছে এখনো। বৃষ্টির ফাঁকে ফাঁকেও চড়া রোদে নাজেহাল হতে হচ্ছে মানুষকে। প্রখর সূর্যালোকে অনেকেরই ত্বকের সমস্যা দেখা দেয়। সানস্ক্রিন, ছাতা, ছায়া ও স্বাস্থ্যকর কাপড়চোপড় না থাকলে সূর্যরশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রেহাই পাওয়া কঠিন। অতিবেগুনি রশ্মির আক্রমণে ত্বকের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা হতে পারে। তবে সবচেয়ে তাৎক্ষণিক সমস্যাটি হচ্ছে ত্বক পুড়ে যাওয়া।
সূর্যের আলোয় পুড়ে যাওয়ার কারণে ত্বকের বাইরের স্তর বা এপিডার্মিসের কিছু কোষ মরে যেতে পারে। মার্কিন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়াল শুলট্জ বলছেন, অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে ত্বকের কিছু কোষের অবাধ মৌলিক উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় ত্বকে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানের অনুপ্রবেশ ঘটে এবং প্রদাহ সৃষ্টি হয়। ফোসকা না পড়লে অনেক সময় ত্বক পুড়ে যাওয়ার বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ধরা না-ও পড়তে পারে। ফোসকা না পড়লেও ত্বক পুড়তে পারে। বাহ্যিক চিহ্ন না থাকায় অনেক সময় ত্বকের এই অভ্যন্তরীণ বিপর্যয়ের বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে কেউ না-ও টের পেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের হ্যাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডেভিড ম্যাকডেনিয়েল বলেন, ক্রমাগত রোদে পোড়ার ফলে যে ক্ষতি হয়, শরীরের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তা একপর্যায়ে আর ঠেকাতে পারে না। এতে করে ত্বকের অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
তবে রোদে পোড়া নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ, মানুষের শরীরে সূর্যালোক প্রতিরোধী প্রাকৃতিক ব্যবস্থা থাকে। গায়ের রং পুড়ে তামাটে হয়ে গেলেও সেটি নিজে নিজেই আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসতে পারে। তার পরও তাৎক্ষণিক সুরক্ষায় সচেতন থাকা ভালো। গবেষকেরা রোদে পোড়া থেকে ত্বক বাঁচানোর জন্য কমপক্ষে ৩০ এসপিএফ মাত্রার সানস্ক্রিন বা সূর্যালোক প্রতিরোধক ব্যবহারের পরামর্শ দেন। আর বেশি বেশি ঘাম হলে বা সাঁতার কাটতে নামলে এই সানস্ক্রিন বারবার প্রয়োগ করতে হবে। কারণ ঘাম বা পানিতে ধুয়ে গেলে সানস্ক্রিন সরে গিয়ে ত্বক উন্মুক্ত হয়ে যায়।
সূত্র: হাফিংটন পোস্ট।