ওবায়দুল ইসলাম রবি, রাজশাহী প্রতিনিধি: :
আবহাওয়াবিদদের মতে, চলতি অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তার মধ্যেই দক্ষিণপশ্চিম মৌসুমী বায়ু বা বর্ষা বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিয়েছে। আগামী নভেম্বরে মাস থেমে নামবে শীত। ওই মাস থেকেই রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাবে। পরের ডিসেম্বরেও অব্যহত থাকবে এর ধারা।
এরই মধ্যে প্রকৃতি থেকে বিদায় নিয়েছে বর্ষা। আসছে শীত। কিন্তু এখনো রাজশাহী অঞ্চলে মাঝে মধ্যেই ঝরছে বৃষ্টি। আবহাওয়া অফিস বলছে, আগামী নভেম্বর থেকেই নামবে শীত। ডিসেম্বর নাগাদ রাজশাহী অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাবে অন্তত: ১টি মৃদু অথবা মাঝারী শৈত্য প্রবাহ। আসন্ন এ শীত মোকালায় এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন এ অঞ্চলের মানুষ। ঢাকা আবহাওয়া অফিসের তিন মাসের জলবায়ূ সংক্রান্ত হিসেব মতে, গেলো সেপ্টেম্বর মাসে রাজশাহী বিভাগে স্বাভাবিক অপেক্ষা ২৬ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। চলতি অক্টোবরে রাজশাহীতে অন্তত: ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ মাসের স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১১০ মিলিমিটার। তবে নভেম্বরে শীতের কারণে কমবে বৃষ্টিপাত। ওই মাসে ১০ থেকে ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা রয়েছে। এছাড়া ডিসেম্বরেও অন্তত: ৯ থেকে ১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভবনা রয়েছে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আনোয়ারা খাতুন জানান, গত সেপ্টেম্বরে রাজশাহী অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৮দিন। বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৫৩ দশমিক ৯ মিলিমিটার। যা স্বাভাবিক অপেক্ষা ২৬ শতাংশ কম। চলতি অক্টোবরে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১১০ মিলিমিটার। এরমধ্যে এ মাসের প্রথম সপ্তায় কোন বৃষ্টিপাত হয়নি। দ্বিতীয় সপ্তায় দুই দিনে মোট ৩ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।গত এক সপ্তার মধ্যে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ওঠা-নামা করছে ৩৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর মধ্যে। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকছে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর মাঝামাঝি। মাঝে মধ্যেই মেঘ ভেঙ্গে উঠছে তেজালো রোদ।অন্যদিকে, আসন্ন শীত মোকাবেলায় আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন রাজশাহী অঞ্চলের মানুষ। এরমই মধ্যে শুরু হয়েছে লেপ-তোষক তৈরীর কাজ। কি শহর কি গ্রাম সব খানেই চলছে এ নিয়ে ব্যস্ততা। কারিগররা নগরীর বিভিন্ন বাসাবাড়ি এমনকি গ্রামে গ্রামে গিয়ে লেপ-তোষক তৈরী করছেন।
কারিগর আমিনুল হক জানান, এবছর কাপড় ও তুলার দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতারা লেপ-তোষকের দাম শুনে প্রথমে থমকে যাচ্ছেন। পরে বাধ্য হয়েই লেপ-তোষক তৈরি করছেন। বর্তমান কার্পাস ও শিমুল তুলার দাম একটু বেশি। ফলে অনেকেই ্লেপ-তোষক তৈরিতে গার্মেন্টর্স ঝুট ব্যবহার করছেন। এ মাসের প্রথম সপ্তা থেকেই তারা প্রচুর পরিমাণে লেপ-তোষক তৈরির অর্ডার পাচ্ছেন বলে জানান।
নগরীর সাগরপাড়া এলাকার সজল বেডিং হাউসের লেপ দোকানি সজন খান জানান, শিমুল তুলা প্রতিকেজি ১৫০-২৫০ টাকা, কারপাস তুলা প্রতিকেজি ৮০-২০০ টাকা, গার্মেন্টস তুলা প্রতিকেজি ৩০-৮০ টাকা এবং নারিকেলের ছোবড়া প্রতিকেজি ৩৫-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একটা নতুন লেপ তৈরি করতে মজুরিসহ দেড় ১ হাজার থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হচ্ছে।
ডিসেম্বরের শেষার্ধে রাজশাহী অঞ্চলে ১ থেকে ২ টি মৃদু (৮ক্ক থেকে ১০ক্ক সেলসিয়াস) অথবা মাঝারী (৬ ক্ক থেকে ৮ক্ক সেলসিয়াস) শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। ওই মাসের শেষে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত এ অঞ্চলে মাঝারী থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে বলে জানায় সূত্রটি।