সমন্বয়হীনতার অভিযোগের মধ্যে বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আজ বৃহস্পতিবার বৈঠক করেছেন। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা ধরে চলা বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, বিমানবন্দরে তিনটিসহ সমুদ্র ও স্থলবন্দরে বেশ কয়েকটি থার্মালস্ক্যানার মেশিন বসানো হবে। ইবোলার সংক্রমণ ঠেকাতে মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো হবে বলেও জানান তিনি।
সূত্রগুলো বলছে, ইবোলা সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিমান কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে যথেষ্ট সহযোগিতা পাচ্ছিল না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ইবোলা সংক্রমণ ঘটেছে এমন দেশ থেকে আসা যাত্রীদের চিহ্নিত করার কাজটি অভিবাসন ডেস্ক সঠিকভাবে করছিল না। লাইবেরিয়া থেকে আসা কমপক্ষে ছয়জন কোনো ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই দেশে ঢোকার খবরও বেরিয়েছিল পত্রপত্রিকায়। এ ছাড়া বিমানবন্দরে সচেতনতামূলক ব্যানার-পোস্টার লাগানোয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট আন্তরিক ছিল না। তাঁদের যুক্তি ছিল ব্যানার-পোস্টারে বিমানবন্দরের সৌন্দর্য নষ্ট হবে। এ বিষয়গুলো স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে জানানো হলে তিনি দুই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে বৈঠকে বসেন। বৈঠকটি চলে রাত সোয়া ৮টা থেকে পৌনে ১০টা পর্যন্ত।
বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিমানবন্দরে তিনটিসহ সমুদ্র ও স্থলবন্দরে কয়েকটি থার্মালস্ক্যানার মেশিন বসানো হবে। ফলে কোনো আরোহী জ্বরে ভুগছেন কি না, সেটি পরীক্ষা করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশে ঢোকার ২১ দিন আগে যাত্রী কোথায় কোথায় ছিলেন, সে বিষয়ে অভিবাসন ডেস্ককে তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তথ্য জানাতে মাইকিং করে যাত্রীদের অনুরোধ করা হবে। ইবোলা প্রতিরোধে তিন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে যে হেলপ ডেস্ক বসানো হয়েছে সেটির কার্যকারিতা বাড়ানোর বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়। এর অংশ হিসেবে পোস্টার ও প্রচারপত্র সাঁটা ও বিলির সিদ্ধান্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ইবোলার সংক্রমণ ঘটেছে এমন দেশ থেকে আসা ১৭০ জন যাত্রীর সঙ্গে জাতীয় ইবোলা প্রতিরোধ কমিটির সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আছে। তিনি আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
ওই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসচিব এম এম নিয়াজউদ্দিনসহ স্বরাষ্ট্র এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।