শ্রীলঙ্কার সঙ্গে খেলা ১১ ম্যাচের মধ্যে সাতটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। বাকি চার ম্যাচের মধ্যে তিনটি হার আর একটি ড্র। সর্বশেষ মোকাবিলায় ৩-০ গোলে হেরেছিলো মামুনুলরা। দুটি সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে ভিন্ন গ্রুপে পড়ায় দেখা হয়নি। এশিয়ান গেমসেও অংশ নেয়নি শ্রীলঙ্কা। এশিয়ান গেমসে অংশ না নিলেও এক বছর আগ থেকেই সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের প্রস্তুতি শুরু করছে তারা। সার্বিয়ান কোচ নিকোলা কাভানোভিচের অধীনে চলছে তাদের প্রস্তুতি। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের আমন্ত্রণে দুটি ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলতে ঢাকায় এসেছে শ্রীলঙ্কা দল। পরিসংখ্যান, সাম্প্রতিক পারফরমেন্স পিছিয়ে থাকার পরও সিরিজ জিতেই দেশে ফিরতে চায় তারা। এব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী শ্রীলঙ্কার কোচ। তার দাবি বাংলাদেশের প্রতিটি ফুটবলারের ব্যাপারে যথেষ্ট তথ্য নিয়ে ঢাকায় পা দিয়েছেন তিনি। যা কাজে লাগিয়ে জয় তুলে নিবে দলের তরুণ ফুটবলাররা। এদিকে কোচ বিতর্ক, সময়মতো ফুটবলার ছাড়তে শেখ জামালের অসহযোগিতা, শ্রীলঙ্কার এই দলটি সম্পর্কে কোন ধারণা না থাকার পরও সিরিজ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী হঠাৎ করে মূল কোচের দায়িত্ব পাওয়া সাইফুল বারী টিটু।
জাতীয় দলকে নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচের মধ্যে রাখতেই ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচের আয়োজন করছে বাফুফে। ইনচন এশিয়ান গেমসের আগেও ঢাকায় খেলে গেছে নেপাল জাতীয় ফুটবল দল। দুই ম্যাচের ওই সিরিজের একটি ম্যাচ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলেও শ্রীলঙ্কা সিরিজের দুটি ম্যাচই ঢাকার বাইরে আয়োজন করছে বাফুফে। ২৪শে অক্টোবর ম্যাচ যশোরে আর ২৭শে অক্টোবরের ম্যাচটি হবে রাজশাহীতে। গতকাল বিমানবন্দর থেকেই যশোরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে শ্রীলঙ্কা দল। মাঝে বাফুফে ভবনে এসেছিলেন দলের কোচ নিকোলো কাভানোভিচ ও অধিনায়ক থ্রিলিরাবান্দানা। জুন মাসে দায়িত্ব নেয়া সার্বিয়ান কোচের অধীনে মাত্র দুটি ম্যাচ খেলেছে শ্রীলঙ্কা। আফ্রিকার একটি দ্বীপ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে খেলা দুটি ম্যাচের একটিতে ড্র, অপরটিতে হেরেছে তারা। এ দুটি ম্যাচ ছাড়া দল নিয়ে বেশি কাজ করার সুযোগ হয়নি নিকোলার। বাংলাদেশে আসার আগেও পাঁচ দিনের বেশি একত্রে দলকে পাননি এই সার্বিয়ান। তারপরও নিকোলা মনে করেন বাংলাদেশকে হারানো সম্ভব। ‘এ সিরিজে আসলে শ্রীলঙ্কা থেকে বাংলাদেশ একটি দিক দিয়ে ফেভারিট। সেটা হলো হোম কন্ডিশন। আমার মনে হয় যশোর ও রাজশাহীতে প্রচুর দর্শক আসবে স্বাগতিকদের উৎসাহ দিতে। এটা কাটিয়ে উঠতে পারলেই জয় স্বাগতিক দর্শকের চাপ কাটিয়ে ওঠার কৌশলও শিষ্যদের শিখিয়েছেন তিনি। তার দাবি বাংলাদেশের সদ্য বরখাস্ত হওয়া কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফসহ দলের প্রতিটি ফুটবলার সম্পর্কে ধারণা রয়েছে তার। যাকে পুঁজি করেই মাঠে নামবে তার শিষ্যরা। নিকোলার কথাতেই পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিলো স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে পরিষ্কার ধারণা নিয়েই খেলতে এসেছে শ্রীলঙ্কা। আর বিপরীত অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খেলা ম্যাচটির কোচ ছিলেন সাইফুল বারী টিটু। ক্রুইফের ছাঁটায়ে আবারও দায়িত্ব উঠেছে তার কাঁধে। সেই টিটুই একাধারে অন্ধকারে শ্রীলঙ্কা দল নিয়ে। ‘আসলে আমি শ্রীলঙ্কার এই দল সম্পর্কে কিছুই জানি না। যতটুকু শুনেছি একেবারে নবীন দল এটি। মনে হচ্ছে অন্ধকারে থেকেই আমাদের মাঠে নামতে হবে’। সত্যিই তাই, চার বছর আগে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে খেলা মাত্র চার ফুটবলার রয়েছে এবারের দলে। বেশির ভাগ ফুটবলারই বয়সে তরুণ। অপেক্ষাকৃত অভিজ্ঞ দল নিয়েই খেলবে স্বাগতিক বাংলাদেশ। দীর্ঘদিন ইনজুরির সঙ্গে সংগ্রাম করা রাইটব্যাক নাসির হোসেন ও ডিফেন্ডার আরিফুল ইসলাম ফিরেছেন জাতীয় দলে। এশিয়ান গেমসে ভালো করার সুযোগ মিলিছে গোলরক্ষক রাসেল মাহমুদ লিটন, ডিফেন্ডার তপু বর্মণ, আতিকুর রহমান ফাদাহ ও রাইট উইংগার ইউসুফ সিফাতের। মূল দল বলে আবারও জায়গা পেয়েছেন নাসির উদ্দিন চৌধুরী, আশরাফ মাহমুদ লিংকন, স্ট্রাইকার মিঠুন চৌধুরী ও জাহিদ হাসান এমিলি। অভিজ্ঞ এই দল নিয়ে দুই ম্যাচের সিরিজ জয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ দলের কোচ। অ্যাটলেটিকো দি কলকাতা থেকে নয় দিনের ছুটিতে আসা অধিনায়ক মামুনুল ইসলামও আশাবাদী অভিজ্ঞ এই দল নিয়ে। ‘এর আগে নেপালের সঙ্গে দুই ম্যাচের একটিতে আমরা হেরেছিলাম। যা থেকে শিক্ষা নিয়েই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে খেলবো আমরা বলেন মামুনুল।