জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান চলচ্চিত্র অভিনয় থেকে দীর্ঘদিন ধরে দূরে রয়েছেন। তবে নিয়মিত অভিনয় করছেন নাটকে। সর্বশেষ তিনি অভিনয় করেছিলেন রেদওয়ান রনি পরিচালিত ‘চোরাবালি’ ছবিতে। আর এ ছবির জন্যই তিনি পেয়েছেন শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। অভিনয়ের পাশাপাশি কাহিনীকার ও সংলাপ রচয়িতা হিসেবে সুনাম আছে এ গুণী অভিনেতার। দীর্ঘদিন পর বরেণ্য এ অভিনেতা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য সম্মত হয়েছেন। ছবির নাম ‘রাত্রির যাত্রী’। নতুন পরিচালক হাবিবুল ইসলাম হাবিব পরিচালিত এ ছবির একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করবেন এটিএম শামসুজ্জামান। তার সঙ্গে থাকবেন মৌসুমী, আনিসুর রহমান মিলন, সালাউদ্দিন লাভলুসহ অনেকেই। অনেক দিন পর অভিনয় প্রসঙ্গে এটিএম শামসুজ্জামান মানবজমিনকে বলেন, গল্প ভাল পাই না বলে সিনেমায় অভিনয় করি না। প্রচুর অফার আসে। কিন্তু আজেবাজে গল্প। করা হয় না। কিন্তু ‘রাত্রির যাত্রী’ ছবির গল্পটা সুন্দর, স্ক্রিপ্ট চমৎকার- তাই তো রাজি হয়ে গেলাম। পরিচালক হিসেবে নতুন হলেও হাবিব খুব ভাল স্ক্রিপ্ট করেছে। আমার অনেক পছন্দ হয়েছে। গল্পের মধ্যে একটা কমিটমেন্ট আছে। কমার্শিয়াল ছবির মধ্যে একটু ব্যতিক্রম বলে আমি অভিনয় করতে সানন্দে রাজি হয়েছি এবং আমার বিশ্বাস একটা সুন্দর ছবির জন্য আমরা সবাই খুব ভাল অভিনয় করবো। এটিএম শামসুজ্জামান বলেন, জীবনে আজেবাজে ছবি তো অনেক করেছি। ক’দিনই আর বাঁচবো। এখন একটু ভাল ছবিতে কাজ করতে চাই এবং আমার মনে হয় ‘রাত্রির যাত্রী’ একটা ভাল ছবিই হবে। তিনি বলেন, এখনকার
শিল্পীরা স্ক্রিপ্ট পড়ে না, শুধু নিজেদের চরিত্রটা পড়ে। আমি বরাবরই অন্যরকম। পুরো স্ক্রিপ্ট পড়ি। না পড়লে সহশিল্পী কি অভিনয় করছে সেটা জানবো কেমন করে? তিনি বলেন, অভিনয় করার জন্যই তো আমি এটিএম শামসুজ্জামান। কিন্তু ভাল অভিনয়ের সুযোগ না পেলে আমি তো আর আজেবাজে গল্পের ছবিতে কাজ করতে পারি না। করিও না। এটিএম শামসুজ্জামান বলেন, নতুন যারা ভাল কিছু নিয়ে আসে আমি তাদের উৎসাহিত করি। আমি তাদের সঙ্গে থাকি। ‘রাত্রির যাত্রী’ ছবিতে অভিনয় করতে সম্মত হয়েছেন এটিএম শামসুজ্জামান। এর অনুভূতি জানাতে গিয়ে ছবির পরিচালক হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, আমার সৌভাগ্য যে এটিএম ভাইয়ের মতো গুণী এবং অত্যন্ত বড় মাপের একজন অভিনেতা আমার লেখা স্ক্রিপ্ট পছন্দ করে আমার মতো একজন নতুন পরিচালকের ছবিতে কাজ করতে রাজি হয়েছেন। হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, আমি এটিএম ভাইকে আমার ‘রাত্রির যাত্রী’ ছবির পুরো স্ক্রিপ্ট দিয়ে এসেছিলাম। পুরো স্ক্রিপ্ট পড়ে তিনি নিজেই আমাকে ফোন করে বাসায় ডেকে পাঠালেন। আমি তো ভয় পেয়ে গেলাম। ভাবলাম, কোন সমস্যা হলো কিনা। ভয়ে ভয়ে এটিএম ভাইয়ের বাসায় গেলাম। দেখলাম, স্ক্রিপ্ট পড়ে উনি
খুব খুশি। বললেন, সুন্দর স্ক্রিপ্ট। এ ধরনের স্ক্রিপ্টের ছবিতে কাজ করার জন্য তো আমি অপেক্ষায় থাকি। হাবিবুল ইসলাম হাবিব বলেন, এটিএম ভাই বাসায় ডেকে নিয়ে আমার সঙ্গে স্ক্রিপ্ট, ড্রেস ইত্যাদি সবকিছু নিয়ে আলোচনা করলেন। বোঝা গেল, উনি স্ক্রিপ্টের মধ্যে ঢুকে পড়েছেন। আমি আবেগে আপ্লুত। তিনি বলেন, ‘রাত্রির যাত্রী’ আমার একটা স্বপ্ন। এ স্বপ্ন পূরণে এগিয়ে এসেছেন মৌসুমী, সালাউদ্দিন লাভলু, আনিসুর রহমান মিলন ও এটিএম ভাই। আমার আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে। আমি বিখ্যাত সব শিল্পীকে নিয়ে একটা সুন্দর ছবি উপহার দিতে পারবো বলে আশা করছি।