আফগানিস্তানে যুক্তরাজ্যের সর্বশেষ সেনাঘাঁটির দায়িত্ব গতকাল রোববার দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সেখানে ১৩ বছরের ব্রিটিশ সামরিক অভিযান শেষ হলো। খবর বিবিসি ও এএফপির।
আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর উপলক্ষে দক্ষিণ আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশে ক্যাম্প ব্যাস্টিয়নে যুক্তরাজ্যের পতাকা নামিয়ে ফেলা হয়। এর লাগোয়া মার্কিন ঘাঁটি ক্যাম্প লেদারনেকের দায়িত্বও গতকাল আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেখানেও মার্কিন পতাকা নামিয়ে ফেলা হয়।
২০০৬ সালে হেলমান্দ প্রদেশের রাজধানী লস্কর গাহের অদূরে মরুভূমিতে স্থাপন করা হয় ক্যাম্প ব্যাস্টিয়ন। এটি ছিল দেশটিতে যুক্তরাজ্যের প্রধান সামরিক ঘাঁটি। সারা আফগানিস্তানে ন্যাটো বাহিনীর অভিযান পরিচালনায় এ ঘাঁটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এদিকে আফগানিস্তানে এ পর্যন্ত ‘নানা ধরনের ভুলের’ কথা উল্লেখ করেও যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মাইকেল ফ্যালন বলেছেন, ‘এ সময়ের মধ্যে সেখানে আমাদের অর্জন অনেক।’ তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানের স্থিতিশীল ভবিষ্যতের সুযোগ করে দিয়েছেন আমাদের সেনারা। এ জন্য অনেক সেনা জীবনোৎসর্গ করেছেন। এ আত্মত্যাগের মাধ্যমে আফগানিস্তানের নিরাপত্তার শক্ত ভিত তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে সরকার।’
প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফ্যালন বলেন, ‘গর্বের সঙ্গে আমরা সেখানে আমাদের অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করছি।…তালেবান পরাজিত হয়নি, কিন্তু এখন থেকে পূর্ণ দায়দায়িত্ব আফগান বাহিনী নিচ্ছে। তারা লড়াই অব্যাহত রাখবে। যুক্তরাজ্য সর্বাত্মক সহযোগিতা দেবে। আফগান ন্যাশনাল আর্মি অফিসার একাডেমিকে এবং উন্নয়নসংক্রান্ত সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হবে।’
আফগানিস্তানে ২০০১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো বাহিনীর অভিযানে যোগ দেয় যুক্তরাজ্য। সে বছরই অভিযান চালিয়ে তালেবানকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। এর পর থেকে দেশটিতে তালেবানবিরোধী দীর্ঘ লড়াইয়ে যুক্তরাজ্যের ৪৫৩ ও যুক্তরাষ্ট্রের ২,৩৪৯ সেনা নিহত হয়।
আফগানিস্তানে ২০১১ সালে সবচেয়ে বেশি বিদেশি সেনা ছিল। সে বছর এর সংখ্যা ছিল এক লাখ ৪০ হাজার। কিন্তু বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজারে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ন্যাটোর সব সেনা দেশটি ত্যাগ করবে। তবে আফগান সেনাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য ডিসেম্বরের পরও যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের প্রায় ১২ হাজার সেনা সেখানে অবস্থান করবে।