অধ্যক্ষ ও ছাত্রীনিবাসের হাউস কিপারের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে ময়মনসিংহ নার্সিং কলেজ। কলেজ বন্ধ ঘোষণার পর বেঁধে দেওয়া সময় বিকেল চারটার মধ্যে হোস্টেল না ছাড়ায় ছাত্রীদের লাঠিপেটা করেছে পুলিশ।
ছাত্রীরা বলেছেন, লাঠি পেটায় তাঁদের প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন। ছয়জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রীনিবাসের আসন বণ্টনের ক্ষেত্রে অধ্যক্ষ ও হাউস কিপার বৈষম্যমূলক আচরণ করেন—এমন অভিযোগ এনে বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সের ছাত্রীরা আন্দোলন শুরু করেন। তাঁরা অধ্যক্ষ ও হাউস কিপারের অপসারণের দাবি করে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে পুলিশ এসে তাঁদের ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়। পরে কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ ঘোষণা করে বিকেল চারটার মধ্যে ছাত্রীদের হোস্টেল ছাড়তে বলে।
শিক্ষার্থীরা হোস্টেল ত্যাগ না করায় পুলিশ জোর করে তাঁদের বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, ১৮ অক্টোবর কলেজের দুটি ছাত্রীনিবাসের আসন বরাদ্দ নিয়ে অধ্যক্ষ মনোয়ারা খাতুন ও ছাত্রীনিবাসের হাউস কিপার নাজমুন নাহার বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সের ছাত্রীদের হোস্টেল সুবিধা না দিয়ে ডিপ্লোমা কোর্সে অধ্যয়নরত ছাত্রীদের হোস্টেল সুবিধা দেন। এ ব্যাপারে প্রতিবাদ করলে অধ্যক্ষ মনোয়ারা খাতুন শিক্ষার্থীদের সামনে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন, যা নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি করে।
শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, ছাত্রীনিবাসের হাউস কিপার নাজমুন নাহারও ছাত্রী হোস্টেলের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়ে ছাত্রীদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করে আসছেন। তিনি অধ্যক্ষের অনুমতি নিয়ে ছাত্রীনিবাসের ভেতর নিজের প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেকে নিয়ে তিনটি কক্ষ দখল করে বসবাস করছেন।
এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ মনোয়ারা খাতুন বলেন, আসন বণ্টন নিয়ে ছাত্রীদের সঙ্গে কোনো বৈষম্য করা হয়নি। আসনসংকট থাকায় বিএসসি কোর্সের ছাত্রীদের মন মতো তা বণ্টন করা সম্ভব হয়নি। তিনি আরও বলেন, ‘হাউস কিপারের আবাসনব্যবস্থা যেহেতু আমার দায়িত্ব, তাই আলাদা ভবন না থাকায় আমি তাঁকে হোস্টেলে থাকার অনুমতি দিয়েছি।’ মনোয়ারা খাতুন আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অকারণে আন্দোলন দমাতেই আমরা কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু মো. ফজলুল করিম বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ছাত্রীরা হোস্টেল না ছাড়ায় আমরা তাঁদের হল ছাড়তে বলি। এতে ছাত্রীরা পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে লিপ্ত হন। এ সময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।’
ছাত্রীরা অভিযোগ করে বলেছেন, ফ্লোরেন্স নাটিঙ্গেল ও রহিমা খাতুন ছাত্রীনিবাসের ছাত্রীদের পুলিশ লাঠিপেটা করে। এতে কমপক্ষে ৩০ জন ছাত্রী আহত হন। আহতের মধ্যে ছয়জনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।