সংসদীয় গণতন্ত্রের উন্নয়নে ইউএনডিপি ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের যৌথ কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে দাবি করে সংস্থাটিকে আগামীতেও সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী। বাংলাদেশে সফররত ইউএনডিপি’র ব্যুরো অব এক্সটারনাল রিলেশনস অ্যান্ড এডভোকেসি বিভাগের সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাইকেল ও’নিল গতকাল স্পিকারের সঙ্গে তার জাতীয় সংসদের কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এই আহ্বান জানান। এর আগে প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম, দুর্নীতি আর অসন্তুষ্টির কারণে সংসদ থেকে সরে দাঁড়ায় কয়েকটি ডোনার প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা ইউএনডিপি ছিল অন্যতম। আপাতত নতুন কোন প্রকল্পে তারা অর্থায়ন করবেন না বলে সাফ জানান। ১০ বছর ধরে তারা সংসদের বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত। এ অবস্থায় স্পিকার তাদের সহযোগিতার আহ্বান জানালেন। গতকালের বৈঠকে স্পিকার বাংলাদেশের উন্নয়ন আর অগ্রগতিতে ইউএনডিপি’র সাহায্য ও সহযোগিতার প্রশংসা করে বলেন, সংসদ সদস্য ও সংসদ সচিবালয়ের অধিকতর সামর্থ্য বৃদ্ধিতে ইউএনডিপি’র কাজ করার সুযোগ রয়েছে। সংসদ এখন প্রাণবন্ত। সকল বিষয়েই সংসদে আলোচনা হয়। পৃথিবীর বৃহৎ দু’টি সংসদীয় ফোরামের প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের প্রতিনিধি। সংসদীয় গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় এটি একটি মাইলফলক। বাংলাদেশের এই উন্নয়নে আগামীতেও ইউএনডিপি’র সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। এসময় আগামীতে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেন মাইকেল ও’নিল। তিনি কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এসোসিয়েশনের নির্বাহী কমিটির চেয়ারপারসন নির্বাচিত হওয়ায় ড. শিরিন শারমিনকে অভিনন্দন জানান। সংশ্লিষ্টরা জানান, ইমপ্রুভিং ডেমোক্রেসি থ্রু পার্লামেন্টারি ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি) প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয় গত ৩০শে জুন। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ডোনার প্রতিষ্ঠানটি আভাস দিয়েছিলো সরে আসার। পরে মৌখিকভাবে তাদের অনাগ্রহের কথা জানায়। প্রায় ৬০ কোটি টাকার প্রকল্পে কৌশলগত কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে ব্যয় করা হয় প্রায় ২৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ছিলো ১০ পৃষ্ঠার ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্ট সেক্রেটারিয়েট স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যান ২০১২-২০১৪’ এবং ২৫ পৃষ্ঠার ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্ট সেক্রেটারিয়েট অ্যানুয়াল অ্যাকশন প্ল্যান ২০১২-২০১৩’ নামে দুটি বই। এ ব্যয়ের মধ্যে ছিল আন্তর্জাতিক ও দেশীয় পরামর্শকদের সম্মানী, সংসদের কর্মকর্তাদের নিয়ে দেশে-বিদেশে একাধিক বার বিদেশ ভ্রমণ। সময় খরচ হয় প্রায় ৩ বছর। প্রকল্প শুরুর প্রথম তিন বছরেই ফান্ড প্রায় শূন্য হয়। প্রকল্পে ন্যাশনাল প্রজেক্ট ডাইরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব প্রণব চক্রবর্তী।