প্রেমের ফাঁদে ফেলে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থেকে ঢাকায় এনে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় সহযোগীসহ এক ধর্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধর্ষকের নাম রতন লাল ওরফে সুমন (৪০)। গতকাল ভোরে গ্রিন স্টাফ কোয়ার্টার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গ্রিন রোডের যে বাসায় নিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে সেই বাসার গৃহবধূ নাজমা বেগমকেও (৪০) আটক করা হয়। ধর্ষক রতন লাল ওরফে সুমন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মাস্টাররোলে ঝাড়ুদার হিসেবে কাজ করে। গতকাল তাকে আদালতে সোপর্দ করে ১ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, গত সোমবার ওই কলেজছাত্রীর পিতা আইয়ুব আলী বাদী হয়ে শেরেবাংলানগর থানায় একটি মামলা (নং ২২) দায়ের করেন। পরে পুলিশ ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে মোবাইলে কথোপকথনের রেকর্ড সংগ্রহ করে ধর্ষক রতন লাল ওরফে সুমনকে শনাক্ত করে। গতকাল ভোরে শেরেবাংলানগর থানা পুলিশের একটি দল রমনা পার্ক সংলগ্ন স্টাফ কোয়ার্টারে অভিযান চালিয়ে রতনকে আটক করে। রতনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ ১২৯ নম্বর গ্রিন রোডের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে নাজমা নামে এক গৃহবধূকে আটক করে। ধর্ষণের শিকার হওয়া ওই কলেজছাত্রী ও পুলিশ জানিয়েছে, রতন লাল ওরফে সুমন তাকে পশ্চিম রাজাবাজারের ওই বাসায় নিয়ে যায়। নাজমা নামে ওই মহিলাকে রতন ওরফে সুমন ভাবী বলে পরিচয় দিয়ে পাশের একটি কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলানগর থানার এস আই জহুরুল ইসলাম বলেন, ধর্ষক রতন লাল ওরফে সুমনকে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছিল। আদালত শুনানি শেষে এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে। তাকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, রতন লাল ওরফে সুমনের সঙ্গে দিন পনের আগে ওই কলেজছাত্রীর মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর এলাকায় পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে মোবাইল ফোনে তাদের কথা হতো। পরে রতন ওরফে সুমন তাকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় বেড়াতে নিয়ে আসে। গত শুক্রবার মেয়েটি গুলিস্তানে বাস থেকে নামার পর তাকে সিএনজিযোগে প্রথমে সংসদ ভবন এলাকায় নিয়ে যায়। সেখানে কিছুক্ষণ সময় কাটানোর পর কৌশলে তাকে গ্রিন রোডের ১২৯ নম্বরে কথিত ভাবি নাজমার বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে একটি কক্ষে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে সে। পরে মেয়েটিকে বাসে তুলে শ্রীনগর পাঠিয়ে দেয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে থাকলে মেয়েটি সবকিছু তার বাবা-মাকে বলে। পরে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়। শেরেবাংলানগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুন্সি ছাব্বির আহমেদ জানান, গৃহবধূ নাজমা হলো রতন লাল ওরফে সুমনের পাতানো ভাবী। নাজমা তাকে ধর্ষণে সহায়তা করেছে বলে তাকেও মামলায় আসামি করা হয়েছে। ধর্ষক সুমন আগেও অন্য কোন মেয়েকে ওই বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করেছে কিনা তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।