মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান , ডিভিএম , হাবিপ্রবি ,দিনাজপুর
মানুষকে প্রয়োজনে অনেক কিছু ব্যবহার করতে হয় । বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় অনেক সহজ হয়েছে মানুষের পথ চলা । সহজ হয়েছে যোগাযোগ , তথ্য আদান প্রদান সহ অনেক প্রয়োজনীয় বিষয় । বিজ্ঞানের অবদান আজ ছড়িয়ে পরেছে দেশের সর্বত্র । মোবাইল ফোন বর্তমান দেশের প্রায় ১১ কোটির ও বেশী লোক ব্যবহার । গ্রাম থেকে গামান্তরে , শহর নগর সব জায়গায় আজ মোবাইল তার প্রভাব বিস্তার করেছে । ফোনের মাধ্যমে আজ গোটা দুনিয়া হাতের মুঠোয় , পুরো পৃথিবী যেন একটা পরিবার , সবার সাথে যেমন যোগাযোগ থাকে ঠিক তেমনি বিজ্ঞানের আশির্বাদে সবার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে ।
বিজ্ঞানের এত বড় একটি আবিস্কার এই মোবাইল মানুষকে অনেক প্রশান্তি দিয়েছে । অনেক ক্ষেত্রে ঘটছে হিতের বিপরীতও , দেখা যাচ্ছে একটু অসচেতনতায় ঘটতে পারে অনেক বড় দুর্ঘটনা , এমনকি মৃত্যু ও হতে পারে ।
এসব ছোট /বড় দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্থান করলে দেখা যাবে শুধু একটি ছোট্ট ভুলই ঘটিয়েছে এই মহা বিপর্যয় ।আর তা হলো সচেতনতার অভাব ।
যে সমস্ত অসচেতনতা ঘটাতে পারে তা হতে পারে নিম্নরূপঃ
১। রাস্তাঘাটে চলার সময় বা হাটার সময় মোবাইল ব্যবহার করাঃ এটা বর্তমানে সবচেয়ে প্রকট আকার ধারন করেছে । বিশেষত ছাত্র , যুব সমাজের মধ্যে এটা বেশী , ফেসবুকে আক্রান্ত ব্যাক্তিরা বাইরে , বাজারে থাকার সময় ও ভুলে থাকতে পারে না তাদের প্রিয় ফেসবুক কে । তাই হাটতে হাটতে সামনের দিকে মনোযোগ ও দৃস্টি সামনের দিকে না থেকে, থাকে মোবাইল এর স্কিনে , ফলে যে কোন সময় ঘটে যায় দুর্ঘটনা । আর সেই দুর্ঘটনার মধ্যে হতে পারে –
ক। ছিনতাইঃ আপনার অসচেতনতা যদি ছিনতাই কারীর নজরে পরে তাহলে সে আপনার প্রিয় ফোন টি নিয় যেতে পারে ছিনতাই করে । হারাতে পারেন আপনার প্রিয় ফোন । আর ছিনতাইয়ের সময় বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করলে মার খাওয়ার ও সম্ভবনা থাকে ।
খ। সড়ক দুর্ঘটনাঃ চলার সময় বা গাড়ি মনোযোগ অ দৃস্টির অভাবে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা । এই অনেক দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন অনেকে ।
গ। মানষিক বিপর্যয়ঃ হঠাত করে আনাকাংখিত ঘটনা অনেকে সামলে নিতে পারেন না , তাই অনেকের ঘটে যায় মানুষিক বিপর্যয় ।
এছাড়াও হার্ট এর সমস্যা ধারি লোকদের হতেও পারে হার্ট ফেয়লর সহ অনেক সমস্যা ।
২। প্রতরনার ফাদে পা রাখাঃ অনেক সময় বিভিন্ন প্রতারক চক্রের লোকজন , সহজ সরল লোকদের প্রতারিত করে থাকে । যা ইতিপুর্বে গনমাধ্যমের কল্যানে দেশবাশি জানতে পেরেছে । মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি লোভ কে কাজে লাগিয়ে এমন ঘটনা ঘটাই প্রতারকরা । এক দিন আমার এক বন্ধুর ফোনে কল আসে , বলে আপনি লটারির মাধ্যমে বিজয়ী হয়েছেন। আপনি পাবেন ৭০ লক্ষটাকা । আর সেই টাকা পাওয়াড় জন্যে এই নাম্বারে ২ হাজার টাকা পাঠান । অনেকে টাকার লোভ সামলাতে না পেরে পাঠিয়ে থাকে টাকা যার ফল হিসেবে নিজের উপার্যিত টাকা বিসর্জন দেয়া ছাড়া আর কিছু হয় না ।
অথবা কোন নির্দিস্ট স্থানে আসতে বলে , কেউ যদি ভুলেও চলে যায় তাহলে তাকে ব্ল্যাক মেইল করে তার পরিবার থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার চস্টা করে ।
৩। পীর , মাজারের খাদেম সেজে প্রতারণাঃ এটাও একটা কমন বিষয় , প্রায় সবার কাছে জানা । মানুষের ধর্মীয় আবেগকে কাজে লাগিয়ে কিছু প্রতারক টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে । এটা দেখা যায় মেয়েদের বেশী ধোকা দেয় । বিশেষত এরা রাত ১২ টার পরে ফোন দিয়ে বলে অমুক মাজার , উমুক পীর । প্রথমে কিছু প্রশ্ন করে , নিজে এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়নি , তার পরেও বন্ধুদের কাছে শোনা-
১। নামাজ পরেন বাবা?
২। রোজা করেন বাবা?
৩। দান খয়রাত করেন বাবা? তার পর বলে আপনার মনের আশা পরন হবে তা কিভাবে হবে , তা জানতে ফোন ব্যাক করেন
কেউ যদি তা করে তাহলে সে বিভিন্ন ছলে বলে কৌশলে দান করার অযুহাত হিসেবে টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে ।
৪। প্রেমের ফাদঃ বর্তমানে এটা ব্যাপক আকার ধারন করেছে , প্রতারক চক্র প্রতারনার কৌশল হিসেবে মিস্টিকন্ঠা নারীদের ব্যবহার করছে । কোন ভাবে তার প্রেমের ফাঁদে ফেলতে পারলে দেখা করতে গেলে , প্রতারক দের শিকারী হয়ে হারিয়ে থাকেন অনেক কিছু ।
পরিশেষে একটা কথা বলতে যায় প্রতারন প্রতারনাই তা যে ভাবেই হোক না কেন । একটু সচেতনতায় আপনাকে রক্ষা করতে পারে বিড়ম্বনা থেকে , বাচাতে পারে আপনার মুল্যবান সময় ও জীবন । আর মনে রাখবেন বিনা কস্টে পাওয়ার আশা করেই মানুষ প্রতারিত হয় ।