ইদানীং সময়টা একটু খারাপ যাচ্ছে লিওনেল মেসির। মাঠের পারফরম্যান্সে বারবারই পিছিয়ে পড়ছেন ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর চেয়ে। গতকালই খবর এল, কেবল মাঠের লড়াই নয়, বাণিজ্যিক-মূল্যেও মেসিকে অনেকটাই পেছনে ফেলেছেন এই পর্তুগিজ। কিন্তু কাল রাতে অন্তত একটি জায়গায় রোনালদোকে ছাড়িয়ে গেলেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। চ্যাম্পিয়নস লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় এই মুহূর্তে তিনি শীর্ষ অবস্থানেই। কাল আয়াক্সের বিপক্ষে বার্সেলোনার জয়ে জোড়া গোল মেসিকে ব্রাকেটবন্দী করেছে সাবেক এই স্প্যানিশ তারকা রাউল গঞ্জালেসের সঙ্গে। আয়াক্সকে ২-০ গোলে হারিয়ে বার্সাও ফিরেছে ছন্দে।
রোনালদোর সামনেই সুযোগটা এসেছিল প্রথমে। মঙ্গলবার লিভারপুলের বিপক্ষে খেলেছে রিয়াল মাদ্রিদ। রেকর্ডটা ছুঁতে একটা গোল করলেই হতো। ভাঙতে হলে দুটো গোল। কিন্তু গোল করাটাকে ছেলের হাতের মোওয়া বানিয়ে ফেলা রোনালদো এদিন গোলই পেলেন না। অন্য দিকে মেসির কাজটা ছিল কঠিন। রেকর্ড ছুঁতেই দুটো গোল করতে হতো। ফর্মটাও ঠিক ভরসা দিচ্ছিল না ভক্তদের। কিন্তু মেসি জ্বলে উঠলেন ঠিকই। গুনে গুনে দুটো গোলই করলেন।
প্রথমার্ধের ৩৬ মিনিটে হেড থেকে গোল করে এগিয়ে দিলেন দলকে। দ্বিতীয়ার্ধে ১০ জনের দল হয়ে পড়া আয়াক্সের জালে ঠেললেন আরও একটি গোল। দুর্দান্ত এক বিল্ড আপে, পেদ্রোর পাস থেকে। হ্যাটট্রিকটাও পেয়ে যেতেন। কিন্তু তাঁর দুটো দুর্দান্ত প্রচেষ্টা আয়াক্স গোলরক্ষক আর রক্ষণ ঠেকিয়ে দেওয়াতে রেকর্ডটা ভাঙা হয়নি। তা না হোক, রোনালদোর আগে রেকর্ডটা করে ফেলার তৃপ্তি তো সঙ্গী হলো।
আরেকটি ক্ষেত্রে রোনালদোকে বেশ বড় ব্যবধানেই পেছনে ফেলেছেন মেসি। রাউলকেও। মাত্র ৯০ ম্যাচ খেলে চ্যাম্পিয়নস লিগে ৭১ গোল করেছেন। মেসিকে এই একটি জায়গায় কোনো দিনই হারাতে পারবেন না ইতিমধ্যে ১০৭ ম্যাচ খেলে ফেলা রোনালদো। ১০৭ ম্যাচে এখন পর্যন্ত রোনালদোর গোল ৭০টি। যে রেকর্ডটি নিজের করে নিতে রাউলকে খেলতে হয়েছিল ১৪২টি ম্যাচ। মেসির ৯০ ম্যাচে ৭১ গোল বলে দিচ্ছে এই টুর্নামেন্টে তাঁর অবিশ্বাস্য ধারাবাহিকতার কথা। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেরা গোলদাতা হয়ে যাওয়ার পর মেসির সামনে এখন অপেক্ষা স্প্যানিশ লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতা হওয়ারও। তেলমো জারার ওই রেকর্ডটি ভাঙতে মেসির যে প্রয়োজন আর মাত্র দুটি গোল।
২০০৪ সালে উদিনেসের বিপক্ষে ম্যাচে ইউরোপ-সেরার লড়াইয়ে অভিষেক হয়েছিল মেসির। বার্সার জার্সিতে তিনটি চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী মেসি ১০ বছরের মাথায় এখন নিজেই ঢুকে গেলেন ইতিহাসে। গড়েছেন আরও অনেক ইতিহাস। ফুটবল ইতিহাসের আরও অনেক পৃষ্ঠা অপেক্ষা করছে তাঁরই জন্য! সূত্র: এএফপি।