মো.আশিকুর রহমান,রাজবাড়ী প্রতিনিধি : রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার মদাপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে শ্বশুর বাড়ীর পাশে একটি বাঁশ ঝাড়ের মধ্যে থেকে গতকাল ১৩ নভেম্বর দুপুরে আসমা খাতুন (২০) নামের এক গৃহবধূর মৃত দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।আসমা একই ইউনিয়নের বিল মানুষ মারি গ্রামের আজাহার আলী মন্ডলের মেয়ে। তার স্বামীর নাম মাসুদ শেখ।মৃত আসমা ঢাকার কৃষাণ হাসপাতালে নার্স হিসেবে কাজ করতো।
জানা যায়,কালুখালী ইউনিয়নের বিল মানুষ মারি গ্রামের আজাহার আলী মন্ডলের মেয়ে আসমা খাতুনের প্রায় ৫ বছর আগে বিয়ে হয়। তবে সেই স্বামীর সাথে বনিবনা না হলে তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। যে কারণে ৩ বছর পূর্বে সে ঢাকায় চলে যায় এবং ঢাকার কৃষাণ হাসপাতালে নার্স হিসেবে কর্ম জীবন শুরু করে। সেখানেই পরিচয় হয় একই ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের মেজেক শেখের ছেলে মাসুদ শেখের সাথে।এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে এবং এক পর্যায়ে তারা বিয়ে করে। কিন্তু মাসুদ পূর্বে দুইটি বিয়ে করেছিল এবং তার তিন সন্তান রয়েছে এগুলো সে আসমার কাছে গোপন রাখে।
মাসুদের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাসুদ প্রায় ১৫ বছর পূর্বে সাবানা খাতুন নামক এক মহিলাকে বিয়ে করে। বিয়ের দেড় বছর পর একটি ছেলে সন্তান হয়। এর কিছু দিন পর সে সাবানাকে তালাক দিয়ে জাহানারা বেগম নামক অপর এক মহিলাকে বিয়ে করে । মাসুদ ও জাহানারা দাম্পত্য জীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে মাসুদ ঢাকায় গিয়ে গার্মেন্টসে কাজ শুরু করে। সেখানেই আসমা খাতুনের সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে এবং তাকে বিয়ে করে।
এদিকে আসমা মাত্র চার দিন পূর্বে স্বামীর বাড়ী এসে মাসুদের ৩ সন্তান ও স্ত্রী দেখে বুঝতে পারে মাসুদ তার সাথে প্রতারনা করেছে। ফলে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে গতকালে ১৩নভেম্বর সকালে মাসুদের বাড়ীর পাশে একটি বাঁশ ঝাড়ের মধ্যে আসমার লাশ পাওয়া গেলে সে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন।
এ ঘটনার উভয় পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ৫০ হাজার টাকায় সমঝোতা হয়। তবে স্থানীয় লোকজন কালুখালী থানায় খবর দিলে মাসুদ আত্মগোপনে চলে যায়। ১৩ নভেম্বর দুপুরের দিকে কালুখালী থানার পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজবাড়ীর মর্গে পাঠায়।
কালুখালী থানার সেকেন্ড অফিসার ওয়াদুদ আলম জানান, নিহতের গলায় দাগ ও থুতনিতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে তাকে হত্যা করা হয়েছে।