1. ccadminrafi@gmail.com : Writer Admin : Writer Admin
  2. 123junayedahmed@gmail.com : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর
  3. swadesh.tv24@gmail.com : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম
  4. swadeshnews24@gmail.com : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর: : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর:
  5. hamim_ovi@gmail.com : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  6. skhshadi@gmail.com : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান: : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান:
  7. srahmanbd@gmail.com : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  8. sumaiyaislamtisha19@gmail.com : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান
মহিউদ্দিন আহমদ যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকানদের জয়: বাংলাদেশিদেরও কপাল পুড়ল - Swadeshnews24.com
শিরোনাম
ভারতীয় পণ্য বর্জনের বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত বিএনপির প্রতিটা নিঃশ্বাস যেন খুঁজছে তোমায়: পূজা চেরি প্রযোজককে এসিড নিক্ষেপের হুমকি, চিত্রনায়িকা পলির বিরুদ্ধে জিডি ছেলেদের সৌন্দর্য কিসে, জানালেন জায়েদ নিপুণের আবেদনে পেছাল ভোটের তারিখ, অসন্তুষ্ট মিশা ফরজ গোসল না করে সেহরি খেলে কি রোজা হবে? ৫৬ সেকেন্ডের ভিডিও, কোন সম্পর্কের ইঙ্গিত দিলেন বুবলী-রাজ রোজা রাখলে পাবেন ৫ উপকার ‘রিয়াজ এখন নিপুণের চামচা হয়ে গেছে, এটা খুব কষ্টের’ মধ্যবর্তী নির্বাচন প্রশ্নে যা বললেন ওবায়দুল কাদের বেশি কথা বললে সব রেকর্ড ফাঁস করে দেব: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ‘খালেদা জিয়া একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা’ রিজভীর ভারতীয় চাদর ছুড়ে ফেলা নিয়ে যা বললেন ওবায়দুল কাদের বুর্জ খলিফায় শাকিবের সিনেমার প্রচারে ব্যয় কত? বুবলী-পরীমনির দ্বন্দ্বের মাঝে অপু বিশ্বাসের রহস্যময় স্ট্যাটাস

মহিউদ্দিন আহমদ যুক্তরাষ্ট্রে রিপাবলিকানদের জয়: বাংলাদেশিদেরও কপাল পুড়ল

  • Update Time : সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৪
  • ১৬০ Time View

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪ নভেম্বর, ২০১৪এর মধ্যবর্তী নির্বাচনে ওখানকার রিপাবলিকান পার্টি মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চ কক্ষ সিনেটেরও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে। এই নির্বাচনের আগে সিনেটে ১০০ সদস্যের মধ্যে রিপাবলিকান পার্টির সদস্য সংখ্যা ছিল ৪৫; এখন তাদের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৩তে। নির্বাচনের আগে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষ, ‘হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস’ বা প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫ জন সদস্যের মধ্যে রিপাবলিকান পার্টির সদস্য সংখ্যা ছিল ২৩৩। আর ডেমোক্রেটি পার্টির ছিল ২০২। সুতরাং এই মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগেই প্রতিনিধি পরিষদ রিপাবলিকান পার্টির নিয়ন্ত্রণে ছিল।

প্রতিনিধি পরিষদে তারা এইবার আরও ১৩ আসনে বিজয়ী হয়েছে। এই বার সিনেটেও তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা। মানে, রিপাবলিকানদের দাপট, প্রতাপ আগে ছিল শুধু প্রতিনিধি পরিষদে; এইবারের নির্বাচনে তাদের দাপট, ক্ষমতা বাড়ল সিনেটেও। ২০০৭এর পর রিপাবলিকানরা আবারও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল।

 

এই পর্যায়ে মার্কিন কংগ্রেসের গঠন পদ্ধতি সম্পর্কে দুটি কথা। মার্কিন কংগ্রেসের সঙ্গে আমাদের জাতীয় সংসদের একটি বড় বেমিল হচ্ছে, আমাদের জাতীয় সংসদটি হচ্ছে এক কক্ষবিশিষ্ট; কিন্তু মার্কিন কংগ্রেসের দুটি কক্ষ বা দুটি চেম্বার। উচ্চতর কক্ষ ‘সিনেট’, সদস্য সংখ্যা ১০০। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছোটবড় ৫০টি অঙ্গরাজ্যের প্রতিটি থেকে ২ জন করে সিনেটর, প্রত্যেক সিনেটর নির্বাচিত হন ৬ বছরের জন্য। আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘কংগ্রেস’ নামের এই জাতীয় সংসদের নিম্ন কক্ষ বা ‘প্রতিনিধি পরিষদ’এর সদস্য সংখ্যা হচ্ছে ৪৩৫। প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের জনসংখ্যার ভিত্তিতে তারা মাত্র ২ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়ে থাকেন।

এমন দুই কক্ষবিশিষ্ট জাতীয় সংসদ যুক্তরাজ্য, ভারত এবং পাকিস্তানেও রয়েছে। যুক্তরাজ্যের জাতীয় সংসদ, পার্লামেন্টের দুই কক্ষের উচ্চ কক্ষকে বলা হয় ‘হাউজ অব লর্ডস’, নিম্ন কক্ষকে ‘হাউজ অব কমনস’। ভারতে উচ্চ কক্ষকে ‘রাজ্যসভা’ এবং নিম্ন কক্ষকে ‘লোকসভা’। এইসব দেশের এইসব পার্লামেন্টের বিভিন্ন চেম্বার বা কক্ষের সদস্য সংখ্যা ভিন্ন ভিন্ন। সদস্যরা নির্বাচিত বা মনোনীত হন ভিন্ন ভিন্ন মেয়াদের জন্য। তাদের ক্ষমতাও এক নয়। মার্কিন সিনেটের ক্ষমতা ভারতের ‘রাজ্যসভা’ বা যুক্তরাজ্যের ‘হাউজ অব লর্ডস’এর চাইতে অনেক বেশি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের একটি বড় বৈশিষ্ট্য হল, এই দেশে প্রতি দুই বছর পর দেশব্যাপী একটি নির্বাচনে প্রতিনিধি পরিষদের সকল সদস্যকে নির্বাচন, মানে ভোটারদের মুখোমুখি হতে হয়। মুখোমুখি হতে হয় এক তৃতীয়াংশের মতো সিনেটর এবং ৫০টি অঙ্গরাজ্যের অনেক গভর্নরকেও। এমন নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতি দু’বছরে তাদের সরকার, সিনেটর, প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যবৃন্দ এবং গভর্নরদের জনপ্রিয়তাও যাচাই করা হয়ে যায়। তাদের কাম-কাজ, কথাবার্তা, নীতি-আদর্শ ভোটারদের পছন্দ হলে এবং তারা নির্বাচনে আবার প্রার্থী হলে, ভোটারদের ভোটে আবার নির্বাচিত হয়তো হবেন। ভোটারদের অপছন্দ হলে তারা বাতিল হয়ে যাবেন।

 

২০০৬তে মধ্যবর্তী নির্বাচনে ইরাকে ভ্রান্তনীতির জন্য দায়ী করা হয় তখনকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ডোনান্ড রামসফেল্ডকে। রিপাবলিকান পার্টি এই নির্বাচনে খারাপ করে। সুতরাং প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ জুনিয়র অপসারণ করলেন রামসফেন্ডকে এবং তিনি এভাবে জনমতের প্রতি সম্মান দেখালেন। আমাদের দেশে এমনটি হয় না; একবার নির্বাচিত হলেই ৫ বছর। সরকারপ্রধানের সমর্থন, দোয়া-দরুদ থাকলে বার বার নির্বাচনের সম্ভাবনা।

আমাদের দেশের নির্বাচনের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের নির্বাচন পদ্ধতির আর একটি বড় বেমিল হল, আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রার্থীদের মনোনয়ন দিয়ে থাকে কেন্দ্র থেকে। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে প্রার্থীদের মনোনয়ন দিয়ে থাকে দলীয় স্থানীয় ইউনিট, মানে স্থানীয় শাখা।

একটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরও ষ্পষ্ট হবে। আমাদের জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের জন্য আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি নিজ নিজ দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন দিয়ে থাকে ঢাকা থেকে, দলগুলোর পার্লামেন্টারি বোর্ড। কিন্তু যুক্তরাজ্যের ‘হাউজ অব কমনস’এর জন্মসূত্রে এক বাংলাদেশি এমপি রুশনারা আলীকে মনোনয়ন দিয়েছে তার লেবার পার্টির লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেট শাখা, যে টাওয়ার হ্যামলেট নির্বাচনী এলাকা থেকে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন।

এমনসব মনোনয়নের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টি বা কনজারভেটিভ পার্টির কেন্দ্রীয় অফিস বা কেন্দ্রীয় নেতাদের সাধারণত কিছুই করার থাকে না। পার্টির স্থানীয় শাখা তাকে ভালো মনে করলে, তাকে পছন্দ করলে তাকে মনোনয়ন দেবে এবং নির্বাচনে তিনিই প্রার্থী হবেন। কখনও কখনও পার্টি থেকে এমন মনোনয়ন নির্বাচনের কয়েক বছর আগেই ঘোষণা করা হয়ে থাকে।

আমাদের দেশে কেন্দ্রীয় নেতা বা নেত্রী পছন্দ করলেই যে কেউ একজন প্রার্থী হতে পারে। হয়তো এই লোক একজন সন্ত্রাসী, ডাকাত, ঘোরতরভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত। যে লোক বছরের পর বছর বিদেশে থেকেছে, এলাকায় লোকজনের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, এলাকার মানুষের সুখ, দুঃখ সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই, এলাকার সমস্যা সম্পর্কে কোনো রকমের জ্ঞান নেই, সেই লোকও নেতা-নেত্রীর সমর্থনে নমিনেশন পেয়ে যাচ্ছে এবং হয়তো নির্বাচনে জিতেও আসছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে এমনটি অচিন্ত্যনীয়।

যুক্তরাজ্যের কোনো একটি এলাকায় হয়তো একটি কয়লা খনি আছে। ওখানকার বেশিরভাগ মানুষজনও হয়তো এই খনির শ্রমিক হিসেবে কাজ করে বা খনির উপর কোনো না কোনোভাবে নির্ভরশীল। সুতরাং এই এলাকার লোকজন এমন একজন এমপি চাইবে যিনি তাদের এলাকার খনি সম্পর্কিত বিশেষ সমস্যাগুলো প্রয়োজনে পার্লামেন্টে তুলে ধরতে পারবেন। এই এমপির হয়তো কোনো বিশেষ শিক্ষাগত ডিগ্রি নেই। কিন্তু আছে এলাকার নির্বাচকদের, মানে ভোটারদের সকল সমস্যা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান। সুতরাং তিনিই নমিনেশন পাবেন পার্টির স্থানীয় শাখা থেকে।

এই মনোনয়ন পদ্ধতি বা প্রসেসে লেবার পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা অ্যাড মিলিব্যান্ড বা কনজারভেটিভ পার্টির কেন্দ্রীয় প্রধান নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের কোনো ভূমিকা নেই, থাকবে না। যে কোনো প্রকৃত গণতন্ত্রের দেশে নির্বাচনী এলাকার মানুষজনের বৈধ, ন্যায়সঙ্গত স্বার্থ, ভালোলমন্দ দেখা নির্বাচিত এমপির মূখ্য দায়িত্ব। আমাদের দেশে এমন দায়িত্ববোধ খুব কমই দেখা যায়।

আমাদের দেশের নির্বাচন পদ্ধতির এই সংঘাতিক ঘাটতির কারণে আমাদের সংসদ সদস্যরা ভোটার-তোষণে নয়, তাদের নেতা-নেত্রী তোষণেই টাকা, পয়সা, শ্রম এবং সময় দিয়ে থাকে। তাই আমাদের ডেমোক্রেসিতে আমাদের নির্বাচনী এলাকাগুলোর মানুষজনের সমস্যা, সুখ, দুঃখ আমাদের জাতীয় সংসদে যথাযথভাবে আলোচিত বা প্রতিফলিত হয় না।

= দুই =

সদ্যসমাপ্ত এই মধ্যবর্তী নির্বাচনে মার্কিন কংগ্রেসের দুই চেম্বারই চলে গেল রিপাবলিকান পার্টির নিয়ন্ত্রণে। অথচ এই দেশটির সরকারপ্রধান, মানে, প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির বারাক ওবামা। এই মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগেই প্রতিনিধি পরিষদে যখন রিপাবলিকান পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল, তখনও তারা বারাক ওবামার অনেকগুলো কাজে বাধা দিয়েছে।

ওবামার এমন একটি কাজ ছিল, যুক্তরাষ্ট্রে এখন যে প্রায় এক কোটি দশ লাখ লোক যে কোনোভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকে অবৈধভাবে থাকছে বছরের পর বছর, তাদের বৈধতা প্রদান। তাদের অবস্থান আইনসঙ্গত করতে ওবামা মার্কিন কংগ্রেসে পাশ করার জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন, ২০০৮ সালের নভেম্বরে প্রথমবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর। কিন্তু এই অবৈধ অধিবাসীদের বৈধতা দান রিপাবলিকান পার্টির একদম পছন্দ নয়। তার একটি প্রধান কারণ, এদের বেশিরভাগই ডেমোক্রেটিক পার্টির সমর্থক, এরা বৈধতা পেলে ভোটাধিকারও পাবে। তখন তারা ভোট দেবে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থীদের।

সুতরাং বিরোধী পক্ষ, প্রতিপক্ষ ডেমোক্রেটিক পার্টির ভোটার সংখ্যা কেন বাড়াব– এই যুক্তি রিপাবলিকানদের। তাই বছরের পর বছর তারা ওবামার প্রস্তাবিত আইনে বাধা দিয়ে আসছিল প্রতিনিধি পরিষদে, সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে বাধা দিয়ে আইনটি ঠেকিয়েও রেখেছিল। এখন সফলভাবে বাধা দেওয়ার সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেল তারা সিনেটেও।

সুতরাং, আমার জানামতে, যে অবৈধ বাংলাদেশি গত পঁচিশ বছর ধরে প্রেসিডেন্ট ওবামার উদ্যোগের সফল বাস্তবায়নের প্রত্যাশায় দিন গুনেছে, তার কপালও পুড়ল– কপাল পুড়ল আরও লক্ষ লক্ষ বাংলাদেশির। কপাল পুড়ল আরও অনেক, অনেক দেশের বৈধতা-প্রত্যাশীদেরও। বাংলাদেশি তথা বাংলাদেশের জন্য এই ফলাফল বড় এক ধাক্কা।

বারাক ওবামা ২০০৮ সনের নির্বাচনের আগে এই এক কোটি দশ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে কিছু শর্তসাপেক্ষে বৈধতা দেওয়ার উদ্দেশ্যে মার্কিন কংগ্রেসে প্রস্তাব পাঠাবেন, এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। প্রতিশ্রুতি মোতাবেক তিনি উদ্যোগীও হয়েছিলেন। কিন্তু রিপাবলিকানদের অব্যাহত বাধার কারণে তিনি সফল হতে পারলেন না। তাঁর ৪ বছরের দ্বিতীয় মেয়াদের ২ বছর ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছে। তাঁর আর আছে এখন মাত্র দুই বছর। এই সময়কালে এই অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।

আবার কখন ওবামার মতো সহানুভূতিশীল একজন প্রেসিডেন্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচিত হবেন, কখন আবার মার্কিন কংগ্রেসে বৈধতা দেওয়ার পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য সিনেট এবং প্রতিনিধি পরিষদের নির্বাচিত হয়ে আসবে, তা এখন একেবারেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। এই মানুষদের জীবন-জীবিকা, তাদের পরিবার-পরিজন, তাদের উপর নির্ভরশীল দেশে আরও অনেক মানুষের জীবনও অনিশ্চিত হয়ে পড়ল।

রিপাবলিকান পার্টিকে সাধারণত ধনী, বিত্তশালী, পুঁজিবাদী ক্যাপিটালিস্টদের দল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। আর ডেমোক্রেটিক পার্টি দরিদ্র, শ্রমিক, খেটে-খাওয়া মানুষদের রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিচিত। ডেমোক্রেটিক পার্টি বেশি বেশি ট্যাক্স এবং সেই ট্যাক্সের টাকায় গরিব বিপন্ন মানুষদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বেশি বেশি কল্যাণমূলক কাজ করার নীতিতে বিশ্বাসী। রিপাবলিকান পার্টি সরকারের নানান কাজে বেশি বেশি ভূমিকার ঘোরতর বিরোধী। তাদের নীতি, ব্যক্তি-উদ্যোগে, ক্যাপটালিস্টরাই এইসব কাজ করবে। ব্যক্তিখাতকেই তারা প্রাধান্য এবং গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

রিপাবলিকান পার্টির বিজয় মানে, পুঁজিপতিদের দাপট বাড়ল। বাড়ল ডানপন্থীদের ক্ষমতা, প্রতাপ। এই ডানপন্থীরা আবার ‘টি পার্টি’ হিসেবেও পরিচিত। TEA শব্দটির আর একটি অর্থ Taxed Enough Already, তাদের একটি অভিযোগ, গরিবরা অলস, কর্মবিমুখ, ধনীদের দেওয়া ট্যাক্সের টাকায় সরকারি ভাতা পায় এইসব মানুষ, তারা তাদের ট্যাক্সের টাকার অপচয় করে।

রিপাবলিকান পার্টির বিপরীতে ডেমোক্রেটিক পার্টি যথার্থই মনে করে, সব মানুষ সমান দক্ষতা, সক্ষমতা অর্জন করতে পারে না। পিছিয়ে পড়া মানুষজনকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্বটা সরকারকেই বহন করতে হবে। তাই কল্যাণমূলক কাজে সরকারের ভূমিকাও বেশি বেশি হবে। ডেমোক্রেটিক পার্টি বিদেশে ডেমোক্রেসি, দেশের সাধারণ নির্বাচনে সকল বড় দলের অংশগ্রহণ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, সিভিল সোসাইটির বলিষ্ঠ উপস্থিতি, মানবাধিকার, আইনের শাসনের পক্ষে বেশি সোচ্চার, সক্রিয়।

এখানে উল্লেখ করা প্রাসঙ্গিক যে, ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট জন কেনেডি ১৯৬৩ সালে আমেরিকায় কৃষ্ণবর্ণের লোকদের ভোটাধিকার দেওয়ার লক্ষ্যে প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন এবং এই বছরের ২২ নভেম্বর টেক্সাসের ডালাস সফরকালে এক আততায়ীর গুলিতে নিহত হওয়ার পর, তাঁর উত্তরসূূরী লিন্ডন জনসনের আমলে, পরের বছর ১৯৬৪তে, ভোটাধিকার দেওয়ার এই প্রস্তাব মার্কিন কংগ্রেসে আইনে পরিণত হয়। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায়ও ডেমোক্রটিক পার্টি বেশি সক্রিয়।

রিপাবলিকান পার্টিকে গত ষাট বছর ধরেই পাকিস্তানের প্রতি বেশি সহানুভূতিশীল দেখে আসছি। একাত্তরেও রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন এবং তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা হেনরি কিসিঞ্জার ঘোরতরভাবে পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়েছিল, বাংলাদেশে জেনারেল ইয়াহিয়া খানের গণহত্যার নিরব সমর্থকও ছিল। তার বিপরীতে ডেমোক্রেটিক পার্টির সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি এবং এমন আরও কয়েক জন সিনেটর ও কংগ্রেসম্যান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের প্রতি সমর্থন দিয়েছেন।

দেশে এই দুই প্রধান দলের মধ্যে যতই বিভেদ, বিভাজন, দ্বন্দ্ব থাকুক না কেন, ইসরায়েলকে সমর্থন দেওয়ার পক্ষে দুই দলই একাট্টা, রিপাবলিকান পার্টি বেশি। প্রধান কারণ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইহুদিরা সংখ্যায় মোট জনসংখ্যার তুলনায় ক্ষুদ্র হলেও মিডিয়া এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রণে প্রবল ভূমিকা রাখে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে চটিয়ে আমেরিকায় কারও পক্ষে নির্বাচন জিতে আসা প্রায় অসম্ভব।

নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ইতিহাসের সবচাইতে বেশি ব্যয়বহুল এই মধ্যবর্তী নির্বাচনে খরচ হয়েছে ৩.৭ বিলিয়ন ডলার। মানে বাংলাদেশি টাকায় প্রতি ডলার ৭৯ টাকা হিসেবে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। এই প্রতিষ্ঠানগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে ওবামা এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল বলেই মনে হচ্ছে। বড় এক জনপ্রিয়তা নিয়ে ২০০৮এর নির্বাচনে ওবামার এমন বিজয়ের পরও এই নির্বাচনে এমন বিপর্যয়।

ওবামা প্যালেস্টাইনে ইসরায়েলের অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধে তেমন কিছুই করতে পারেননি; তবে মাঝে মাঝে কয়েকটি নমনীয় কথা বলেছিলেন, ইসরায়েলকে সমালোচনা করে। সুতরাং যা আশংকা ছিল, তাই ঘটল।

সূত্র: বিডিনিউজ২৪ ডট কম

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 SwadeshNews24
Site Customized By NewsTech.Com